সুন্দরবনে সারবাহী জাহাজ ডুবি : উদ্ধার হয়নি ৩ দিনেও, চ্যানেল ভরাট হওয়ার শঙ্কা

Bagerhat-Cargo-Sink-05.05সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সুন্দরবনের ভোলা নদীতে ডুবে যাওয়া সারবাহী এমভি জাবালে নূর জাহাজটি ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি। এমনকি এখনো শুরু হয়নি দৃশ্যমান কোনো উদ্ধার তৎপরতা। সরানো হয়নি কার্গোতে থাকা সারও। এতে জাহাজটির উপরের অংশে থাকা সার ইতোমধ্যে গলে পানিতে মিশে গেছে।
এদিকে কার্গোটি দ্রুত সরানো না হলে জোয়ার-ভাটায় পলি পড়ে চ্যানেলটি ভরাট হয়ে নৌরুট বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চ্যানেল ব্যবহারকারীরা। তাদের এ শঙ্কার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ অতুল মন্ডলও। তাই যতদ্রুত সম্ভব ওই জাহাজটি সরিয়ে ফেলার দাবি চ্যানেল ব্যবহারকারীদের।
এদিকে ডুবে যাওয়া কার্গোতে থাকা রাসায়নিক সার যাতে নদীর পানিতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য একটি পাম্প মেশিন ভাড়া করে এনেছে স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগ। তবে পাইপ স্বল্পতার কারণে তারা কাজ শুরু করতে পারেনি এখনো।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সুন্দরবন পূর্ব ভিাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আমির হুসাইন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কার্গো জাহাজটিতে থাকা এমওপি সার জমাট বেঁধে যাওয়ায় কাটিং ড্রেজার দিয়ে তা অপসারণ করতে হবে। সে লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে কাটিং ড্রেজারের কর্যক্রম শুরু করেছে বন বিভাগ।’
ডুবে যাওয়ার ৩ দিনেও উদ্ধার তৎপরতা শুরু না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, ডুবে যাওয়া কার্গো উদ্ধারের মতো কোনো সরঞ্জাম নেই বন বিভাগের। এটি উদ্ধার করবে বাংলাদেশ আভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। বন বিভাগ কার্গো ডুবির ঘটনার দিন থেকে নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বিষটি দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণের জোর তাগিদ দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে খুলনা নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আবুল বাশার সুন্দরবনের ঘটনা স্থল থেকে মুঠোফোনে জানান, এ কার্গো উদ্ধারের বিষয়টি সম্পূর্ণ মালিকপক্ষের বিষয় । মালিকপক্ষ যদি খরচ দেয়ার শর্তে বিআইডাব্লিউটিএকে উদ্ধারের দায়িত্ব দেয়, তবেই কেবল মাত্র তারা উদ্ধার করবে। অথবা যদি মালিকপক্ষের উদ্ধারের সামর্থ না থাকে, সে ক্ষেত্রে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিআই ডাব্লুটিএ তা উদ্ধার করবে।
তিনি আরও জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে তিনি একাধিকবার কথা বলেছেন। মালিক পক্ষ নিজেরা এই ডুবে যাওয়া কার্গোটি উদ্ধার করবেন বলে জানিয়েছেন।
উদ্ধার না হওয়ায় পলি পড়ে নৌরুটটি বন্ধ হবার কোনো শঙ্কা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোলা নদীর এ পয়েন্টে আপাতত এই ধরনের কোনো আশঙ্কা নেই।’
এদিকে জাহাজের মধ্যে জমাট বাঁধা সার আত্মসাত করার জন্য স্থানীয় একটি চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে বলে গুজব শোনা যাচ্ছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ অতুল মন্ডল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ডুবে যাওয়া সারবাহী কার্গোর সার অপসারণের জন্য একটি পাম্প মেশিন ভাড়ায় আনা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার সকালে তারা ঘটনা স্থলে পৌঁছলেও পাইপ স্বল্পতার কারণে কাজ শুরু করতে পারেনি। এ ধরনের কার্গো উত্তোলনের সরঞ্জামাদি তাদের কাছে নেই বলে তারা জানান। এই ডুবে যাওয়া কার্গোটি উদ্ধার করতে বিআইডাব্লিউটিএ এর সাহায্য চাওয়া হয়েছে।’
দ্রুত জাহাজটি অপসারণ করা না গেলে, চ্যানেলটিতে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার আশংকা করেছেন তিনিও।
উল্লেখ্য, গত ৫ মে মঙ্গলবার বিকেলে তলা ফেটে এমভি জাবালে নূর নামের সারবাহী কার্গো জাহাজটি সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের মরা ভোলা এলাকায় ভোলা নদীতে আংশিক ডুবে য়ায়। জাহাজটি ডুবে যাওয়ার তিনদিন আগে ওই এলাকায় ভোলা নদীর চরে আটকা পড়েছিল।