‘মেধাস্বত্ব বোঝার মতো বিচারক এ দেশে নেই’

b-h-1সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস পালিত হচ্ছে। আমাদের দেশেও এ দিবসটি উপলক্ষে শনিবার বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘মুভিজ : অ্যা গ্লোবাল প্যাশন’।
বাংলাদেশ কপিরাইট ও আইপি (ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি) ফোরামের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা সঙ্গীতশিল্পী মাকসুদুল হক বলেন, ‘২০০৫ সালে মেধাস্বত্বের ওপর একটি আইন পাশ হয়। ২০০৭ সালে তা গৃহিত হয়। এতো বছরেও শিল্পীরা তাদের প্রাপ্য সম্মানী পান না। অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান কিন্তু ঠিকই ব্যবসা করে যাচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, মেধাস্বত্ব বোঝার মতো উপযুক্ত বিচারকই এ দেশে নেই।’
কপিরাইট বিশেষজ্ঞ মো. মনজুরুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছরই একটি বিষয়কে উপজীব্য করে দিবসটি পালিত হয়। এবার চলচ্চিত্রকে বেছে নেওয়া হয়েছে। চলচ্চিত্রের মেধাস্বত্বের যথাযথ ব্যবহার প্রয়োজন। কাহিনীকার, পারফর্মার থেকে শুরু করে চলচ্চিত্রের প্রতিটি মানুষের অধিকার আছে। তাদের মেধার মূল্য রয়েছে। এটি একটি সমষ্টিগত মাধ্যম। চলচ্চিত্রে মেধাস্বত্বের সচেতনতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন।’
তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম হারুন-অর-রশীদ বলেন, ‘চলচ্চিত্রের প্যাকেজের মধ্যে পড়ে এর সঙ্গে জড়িতদের মেধাস্বত্ব হারিয়ে যেতে বসেছে। এই স্বত্ব কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায়, তা দেখতে হবে। শুধু সরকারের কপিরাইট অফিস নয়, সবার এগিয়ে আসতে হবে। কোনো চলচ্চিত্র মুক্তি পেলে সেটা অনেক ইলেকট্রনিক মাধ্যমে চলে যায়, বেশিরভাগ সময় এটার অর্থ প্রযোজকরা পান না। আবার রেডিওতে চলচ্চিত্রের গান প্রচার হলেও তার রিটার্ন পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে চলচ্চিত্র হলে দেখানো সম্ভব নয়, সেটা অন্য মাধ্যমে প্রচার করা কি ঠিক। এগুলো পরিবর্তন করতে হবে।’
চলচ্চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ দেশে মেধাস্বত্বের কোনো মূল্য নেই। আমরা মেধাস্বত্ব নিয়ে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত। আইনের প্রয়োগ ঘটানো যায় না। এখন আন্দোলনের প্রয়োজন। আন্দোলন ছাড়া এ দেশে কিছু হবে না। কারণ, বিপ্লব না এলে শিল্প দাঁড়াবে না।’
প্রসঙ্গত, মানুষের সম্পদ দুই প্রকার। এক বস্তুগত আরেকটি মেধাসম্পদ। চেয়ার, টেবিল, বই, জমি, ফ্ল্যাট, অর্থ হচ্ছে বস্তুগত সম্পদ। আর এগুলোর নকশা হচ্ছে মেধাসম্পদের আওতাভুক্ত। বুদ্ধিভিত্তিক সম্পদও দুই প্রকার। এক ইন্ডাস্ট্রিয়াল আরেকটি ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি। রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার, প্রভৃতি ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রপার্টি। এগুলোর নকশা ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি। নাট্যকলা, চিত্রকলাসহ যত কলা রয়েছে সবই ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টির মধ্যে পড়ে।