আবারও ভূমিকম্পে কেঁপে উঠতে পারে দেশ : ঝুকিতে সিলেট
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভূমিকম্পে সারাদেশ আবারও কেঁপে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ভূ-তত্ব ও খনিবিদরা। শুধু তাই নয়, পাশের দেশে বড় ধরনের ভূমিকম্পের কারণে বাংলাদেশে এর ঝুঁকি আরো বেড়ে গেছে বলে মনে করেন তারা।
ভূ-বিজ্ঞনীরা জানান, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ ধরনের ভূমিকম্প আবারও আঘাত হানতে পারে। ভূমিকম্পের কারণে ভূ-গর্ভস্থ প্লেটগুলো কিছুটা এলোমেলো হয়ে যায়। সেগুলো কয়েকদিনের মধ্যে নড়েচড়ে বসে। সে কারণে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ ধরনের ভূমিকম্প আবার হতে পারে।
শনিবার ও রোববার সারাদেশে কয়েক দফা শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ঢাকা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে ৭৪৫ কিলোমিটার দূরে নেপালে আঘাত হানা ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।
ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী প্লেট ও সাব-প্লেট দিয়ে গঠিত। এ রকম দুটি প্লেটের মাঝখানে যে ফাঁক থাকে তাকে বলা হয় ফল্ট লাইন। প্লেটগুলো গতিশীল। দুটি চলন্ত প্লেটের ফল্ট লাইনে পরস্পর সংঘর্ষ হলে অথবা হঠাৎ ফল্ট লাইনে শূন্য অবস্থার সৃষ্টি হলে ভূমিকম্প হয়।
বাংলাদেশের ভেতর ও সীমান্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি এমন চ্যুতি আছে। এসব চ্যুতির মধ্যে মধুপুর চ্যুতি, বগুড়া চ্যুতি, রাজশাহীর তানোর, ত্রিপুরা, সীতাকুণ্ড-টেকনাফ এলাকা, হালুয়াঘাট, সিলেটের ডাওকী এলাকায় আরো কয়েকটি চ্যুতি আছে। এসব চ্যুতির কাছাকাছি যদি ভূমিকম্প হয় তাহলে সেসব এলাকায় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. ইউনুস আহমেদ খান জানান, নেপালের যেখানে দুই দিনে তিন দফা ভূমিকম্প হয়েছে সেখানে থেকে সিলেটের ডাওকী চ্যুতির দুরত্ব খুব বেশি নয়। যেখানে ভূ-কম্পনের সৃষ্টি হয় তার আশেপাশের চ্যুতিগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
রাবির ভূ-তত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান জানান, যেখানে ভূমিকম্প হয় তার আশেপাশে যদি কোনো চ্যুতি থাকে তাহলে সেই চ্যুতি থেকে ভূমিকম্পের আশঙ্কা আরো বাড়িয়ে দেয়। সেক্ষেত্রে সিলেটের ডাওকী ও তিস্তা চ্যুতিটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে আছে।
ওই দুটি চ্যুতিতে যদি ভূ-কম্পন অনুভূত হয় তাহলে বিশেষ করে সিলেট শহরের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা আছে। শুধু সিলেট নয়, ঢাকাসহ এর আশেপাশের এলাকাও থাকবে সমান ঝুঁকির মধ্যে।
রাজশাহীর তানোরের চান্দুরিয়া এলাকার চ্যুতির বিষয়ে ড. ইউনুস আহমেদ খান বলেন, ‘তানোরে যে চ্যুতি আছে তা থেকে বড় কোনো ভূমিকম্পের আশঙ্কা কম। তবে রাজশাহী নগরবাসীকে সর্তক থাকতে হবে।’
কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, যেসব ভবন ইতোমধ্যে হেলে পড়েছে সেগুলোর শক্তি অনেক কমে গেছে। সে কারণে ঘন ঘন মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভুত হলে এসব ভবন ভেঙে পড়তে পারে। সে কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের দিয়ে ভালো করে পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন। প্রাণহানির আশঙ্কা থেকেই যাবে যদি এই কাজগুলো না করা হয়।