রাজনগরে বৌভাতের দিন প্রেমিকের হাত ধরে কনের পলায়ন : ৪মাস পর আটক
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বিয়ের পরদিন বৌভাত অনুষ্ঠান হয় স্বামীর বাড়িতে। ওই দিন দিবাগত রাতে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান নববধূ। অবশেষে ৪মাস পর প্রেমিকের ভগ্নীপতির বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে ওই বধূ ও তার প্রেমিককে। এ ঘটনায় স্ত্রী ও তার প্রেমিককে আসামী করে থানায় মামলাও করেছেন স্বামী।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে নববধূ ও তার প্রেমিককে মৌলভীবাজার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মল্লিকসরাই গ্রামের আনকার আলীর মেয়ে আনিছা আক্তার স্বপ্নার (২২) সঙ্গে বিয়ে হয় রাজনগর উপজেলার দক্ষিণ বালিগাঁও গ্রামের সাজিদ মিয়া চৌধুরীর ছেলে লতিফুর রহমান চৌধুরী মসুদ (৩২) এর সঙ্গে। বিয়ের ২ দিন পর ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ ওয়ালিয়া অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ালিমা অনুষ্ঠান শেষে পরদিন ভোররাতে নববধূ আনিছা আক্তার স্বপ্না পালিয়ে যান রাজনগর উপজেলার মহলাল গ্রামের মখলিছুর রহমানের ছেলে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র জসিম উদ্দিন (২৪) এর সঙ্গে। এরপর থেকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে উভয়ে কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে বিভিন্ন পরিচিতজনদের আশ্রয়ে বসবাস করছিলেন।
নববধূ আনিছা আক্তার স্বপ্না জানান, বিয়ের পর ওয়ালিমার দিন আমি আমার মায়ের সঙ্গে যেতে চাই। এ জন্য কান্নাকাটি করি। কান্নার কারণে আমার স্বামী ও ভাসুর মিলে আমাকে বেদম মারধর করেন। আমার কাছে যৌতুক চান। তাদের নির্যাতনের কারণে আমি রাতে বেরিয়ে যাই। মৌলভীবাজারে ম্যান্টোর্স-এ পড়ার সময় জসিমের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। স্বামীর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আমি একটি পত্রিকার গাড়িতে করে ফজরের সময় মৌলভীবাজার শহরের শাহ মোস্তফা মাজারের পাশে নামি। মোবাইল ফোনে জসিমের সঙ্গে যোগাযোগ করি।
নববধূর স্বামী লতিফুর রহমান চৌধুরী জানান, পারিবারিক পছন্দে বিয়ে হয় স্বপ্নার সঙ্গে। বিয়েতে আমার প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। বিয়েতে আমি সোনা-দানা, ডায়মন্ডের আংটি সব দিয়েছি। কিন্তু সে আমার পারিবারিক মর্যাদা ও আর্থিক বিশাল ক্ষতি করেছে। তিনি জানান, সে পালিয়ে যাওয়ার পরই জানতে পারি জসিমের সঙ্গে স্বপ্নার দীর্ঘ দিনের গভীর সম্পর্ক ছিল। স্বপ্না অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন-সব বানানো কথা। এদিকে নববধূ পালিয়ে যাওয়ার পর তার মা হেনা বেগম রাজনগর থানায় গুম ও ইটভাটায় পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন স্বপ্নার স্বামীর ওপর। রোববার বিকালে ওই নববধূ ও তার প্রেমিকাকে আটকের পর স্বামী লতিফুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে প্রেমিক জসিম উদ্দীন, নববধূ আনিছা আক্তার, তার বোন লুবনা আক্তার, স্বামী ফয়ছল আজাদ খান ও নববধূর মা হেনা আক্তারকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ জসিম উদ্দিন ও আনিছা আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার বিকালে আদালতে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে রাজনগর থানার ওসি মোঃ শামছুদ্দোহা পিপিএম বলেন, প্রেমিক যুগলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।