‘ন্যায়বিচার নাও পেতে পারেন খালেদা’
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলায় রুলের শুনানিতে হাইকোর্টের নির্ধারিত বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আবেদন করেছেন বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়া। একইসাথে মামলাটি অন্য বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করারও আবেদন জানানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি বরাবর তার আইনজীবীরা এ আবেদন করেন। এর একটি কপি সরকারপক্ষকেও দেওয়া হয়। খালেদার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহম্মদ আলী, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও বদরুদ্দোজা হাসান এ আবেদন জমা দেন।
আবেদনে হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের বেঞ্চের প্রতি অনাস্থা জানানো হয়েছে। আবেদনের পর আইনজীবী বদিউজ্জামান বাদল জানান প্রধান বিচারপতি নিষ্পত্তি জন্য তাদের আবেদন গ্রহণ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন বিচারপতি এস কে সিনহা এই আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট বেঞ্চের রায় প্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আইনজীবীরা জানান, খালেদা আবেদন করেন- যেহেতু তার আবেদন না শুনেই রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে তাই নির্দিষ্ট বেঞ্চে তিনি ন্যায়বিচার নাও পেতে পারেন। আবেদনে আরও বলা হয়, বেঞ্চের সিনিয়র বিচারপতি আইনজীবী থাকাকালে সরকার সমর্থক প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে নির্বাচন করেছিলেন। এ অবস্থায় খালেদা জিয়া এ আদালতে ন্যায়বিচার পাবেন না বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
প্রায় সাড়ে ৬ বছর আগে ২০০৮ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম কেন বাতিল করা হবে না মর্মে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন। দুদকের আবেদনে এ রুলের ওপর গত ৫ মার্চ শুনানি সম্পন্ন হয়। এ রুল নিষ্পত্তির জন্য দুদক আবেদন করার পর হাইকোর্টে শুনানি হয়। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। তবে খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনও আইনজীবী শুনানি করেননি। ওই দিন সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জুনিয়র আইনজীবী পাঠিয়ে সময়ের আবেদন করেন। আদালত বিকেলে শুনানির জন্য রাখেন। এর পর দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে ১০ মার্চ রায়ের দিন ধার্য করেন।
এর পর গত ৮ মার্চ ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সংশ্লিষ্ট আদালতে গিয়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। এ আবেদনে আদালত পরবর্তী শুনানি ও রায়ের জন্য ১৫ মার্চ দিন ধার্য করেন। দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় তদন্ত শেষে একই বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়।
এরপর এ মামলা বাতিল চেয়ে ২০০৮ সালে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। আদালত এ আবেদনে ওই বছরের ১৬ অক্টোবর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন এবং মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।