আইসিসির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামছে ৩৮ দেশ : কামালের পদত্যাগ

lotus kamalসুরমা টাইমস ডেস্কঃ আগামী বিশ্বকাপে মাত্র ১০ দেশ খেলার সুযোগ পাবে। এমন সমীরকণ নিয়ে যখন ব্যস্ত বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থা আইসিসির মোড়ল খ্যাত ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড। ঠিক তখনই এ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার হুমকি দিয়েছে ৩৮ দেশ। প্রয়োজনে আইসিসির বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতেও প্রস্তুত দেশগুলোর ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা। এমন তথ্যই ফুটে উঠেছে প্রতিটি দেশের ক্রিকেট বোর্ড সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটগুলোতে।
ইতিমধ্যে আইসিসির সহযোগি সদস্য দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইল নতুন আইসিসি প্রতিষ্ঠারও ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এদিকে, শচীন, দ্রাবিড়, মার্ক ওয়াহ, ব্রেট লি, ব্রায়ান লারার মতো গ্রেটরা যেখানে ২৪ দলের বিশ্বকাপকে সমর্থন দিচ্ছেন, সেখানে আইসিসির চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসন একাই ১০ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্তে অটল আছেন।
ফলে সক্টল্যান্ডের পোটারফিল্ড যেভাবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটেকে আইসিসির বাণিজ্যের হাতিযার হিসেবে সমালোচনা করেছেন, ফলে পরবর্তী আসরে তার দলটি দেখা যাবে কিনা সে বিষয়ে খোদ সংশয় নিজেই প্রকাশ করেছেন।
কিন্তু আইসিসির অন্য সহযোগি দেশ ইসরাইল এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হুমকিও দিয়ে রেখেছে সংস্থাটিকে। মোট ৩৮টি সহযোগি ক্রিকেট দেশকে একত্রে করে আইসিসির ১০ দলের বিশ্বকাপ যেকোন মূল্যেই রুখতে হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল ক্রিকেট এসোশিয়েশনের চেয়ারম্যান স্টেনলি পার্লম্যান।
যদি তা না হয়, নতুন করে আইসিসির চেয়ে ক্ষমতাশীল সংস্থা তৈরি করাও ঘোষণা দেয় হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু এ রাষ্ট্রটি।
আইসিসির বিপক্ষে অবস্থান নেয়া ৩৮ দেশ হচ্ছে: আফগানিস্তান, আর্জেন্টিনা, বেলজিয়াম, বারমুডা, বোস্তোয়ানা, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিজি, ফ্রান্স, জামার্নি, হংকং, আয়ার‌ল্যান্ড, ইসরাইল, ইটালি, জাপান, জেয়ার্সি, কেনিয়া, কুয়েট, মালয়েশিয়া, নামিবিয়া, নেপাল, নেদারল্যান্ড, নাইজেরিয়া, ওমান, পাপুয়া নিউগিনি, স্কটল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুরিমনে, তানজেনিয়া, থাইল্যান্ড, দুবাই, উগান্ডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সাইমন আইল্যান্ড, ভানুটাও, , গিবরালটার, গুনার্সি এবং জাম্বিয়া।
এদিকে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলে (আইসিসি) সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। বুধবার বাংলাদেশে পৌঁছে বিমানবন্দরেই এক সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের ঘোষণা দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী কামাল।
কামাল বলেন, আইসিসির সংবিধানের ৩.৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশ্বকাপের ফাইনালের মতো টুর্নামেন্টে বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি দেওয়ার অধিকার কেবল সভাপতিরই আছে।
“২৯ তারিখ মেলবোর্নের ফাইনালে ট্রফি দেওয়ার কথা ছিল আমার। কিন্তু আমি সেটা দিতে পারি নাই।”
কামাল দাবি করেন, বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার-ফাইনাল নিয়ে কিছু মন্তব্য করাতেই তাকে ফাইনালের বিজয়ী দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দিতে দেওয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়ে কামাল বলেন, “এই মুহূর্ত থেকে আমি আইসিসির সাবেক সভাপতি হিসেবে কথা বলব।”
তারপর তিনি তার পদত্যাগ করার কারণ জানিয়ে বলেন, “যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে তাদের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব না। পৃথিবীর সবাইকে আমি তা জানাতে চাই।”
বাংলাদেশ-ভারত মেলবোর্নের কোয়ার্টার-ফাইনালে ‘বিতর্কিত’ আম্পায়ারিংয়ের পর আইসিসির কড়া সমালোচনা করেন কামাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল এখন ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলেরই নামান্তর বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে তখন প্রয়োজনে পদত্যাগ করার কথাও জানান তিনি।
আইসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডেভিড রিচার্ডসন পরে এক বিবৃতিতে মুস্তফা কামালের মন্তব্যকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে আখ্যা দেন। ফাইনালের আগে আইসিসির এক অনানুষ্ঠানিক সভায় কামালকে তোপের মুখে পড়তে হয়। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কামালের বদলে ফাইনালের বিজয়ী দলের অধিনায়কের হাতে ট্রফি তুলে দেবেন আইসিসির চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।