তিন কন্যার জন্ম দেয়ায় গৃহবধূ বাড়িছাড়া!

জেলা প্রেসক্লাবে  সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

women cry for justiceসুরমা টাইমস ডেস্কঃ নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে একটি সংসার ভেঙ্গে দিয়েছেন সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের লাউগুল গ্রামের বাসিন্দা মাসুক মিয়া। হয়রানী ও ভূমি জবর দখলের ঘটনায় ডজনখানেক মামলার আসামী মাসুক মিয়া বিনা দোষে স্বামীর ঘরছাড়া করেছেন তৃতীয়বারের মতো কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়া রুকসানা বেগম কাঞ্চনের। গতকাল বুধবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের সাহেবের বাজারের ফড়িংউরা গ্রামের মো. ময়না মিয়া ছেলে দিলোয়ার হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে দিলোয়ার হোসেন বলেন, সিলেট সদর উপজেলার পীরেরগাঁও মৌজার জেএল-৬১, ১০৯৯ দাগের ১একর ৫শতক জায়গার রাতের আধারে দখলে নিয়ে চাঁদা দাবি করে মাসুক গংরা। এ ঘটনায় তিনি এয়ারপোর্ট থানায় চাঁদাবাজি মামলা করেন। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে মানুষকে হয়রানী ও ভূমি জবর দখলের ঘটনায় আরো ডজনখানেক মামলা আদালতে বিচারাধীন। এসব মামলার জামিন নিতেই গত মঙ্গলবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেকে ফড়িংউরা গ্রামের বাসিন্দা বলে দাবিসহ বিভিন্ন মিথ্যাচার করেছেন। সংবাদ সম্মেলন করে সমাজে নিজেকে নির্দোষ প্রমান ও জামিন লাভের চেষ্টা করেছে মাসুক মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে দিলোয়ার আরো বলেন, ২০০২ সালে একই গ্রামের সিকন্দর আলীর ছেলে কুয়েত প্রবাসী জয়নাল আবেদীনে সাথে তার ছোট বোন রুকসানা বেগম কাঞ্চনের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘর আলো করে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দেন কাঞ্চন। আর এ ‘অপরাধে’ শ্বশুড় বাড়ির লোকদের নির্যাতনে অসহায় হয়ে আশ্রয় নিয়েছে পিত্রালয়ে। তার একটাই অপরাধ তিন কন্যাটি সন্তান জন্ম দেওয়া। সেই সাথে তার স্বামীর লন্ডন যাওয়ার আবদার পিত্রালয় থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে দিতে না পারা। কাঞ্চনের শ্বশুর মাসুক মিয়ার সৎ ভাই সিকন্দর আলী। তৃতীয় বার কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় কূটচাল শুরু করেন মাসুক মিয়া। কোনো কারণ ছাড়াই স্বামী লন্ডন যাওয়ার কথা বলে পিত্রালয় থেকে ৫ লাখ টাকা নেওয়ার জন্য কাঞ্চনের উপর চাপ সৃষ্টি করে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন। শুধু এতেই ক্ষান্ত হয়নি তারা। কাঞ্চনের প্রসূতিকালিন সময়ে মাটিতে ফেলে লাথি, কিল ঘুষি মারা হয়েছে। চুল ধরে টেনে হিচঁড়ে বাড়ির বাইরে বের করে দেওয়া হয়। শারিরিক নির্যাতনের ফলে ধৈর্য্যহারা হয়ে তার বোন শ্বশুড় বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপে যায়।
মাসুক মিয়া সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যাচার করেছেন দাবি করে দিলোয়ার হোসেন বলেন, আমার পিতা কোনো যুদ্ধাপরাধী না। তিনি পর পর দুই বারের ইউপি সদস্য। চেয়াম্যান পদেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তার মানসম্মান নষ্ট করতে এমন অপপ্রচার চালিয়েছেন মাসুক মিয়া। তাইতো সংবাদ সম্মেলনে নিকটআত্মীয় দু’জন ছাড়া এলাকার আর কোনো লোকজনকে আনতে পারেননি তিনি।
তিনি বলেন, কাঞ্চনের স্বামী একটি কাগজে তালাকের কথা লিখে চিঠি দিয়েছে। যার আইনী ভিত্তি নেই। তিনি বলেন, কূট কৌশলের কারণে তিন তালাক দিয়ে যদি এক যুগের সম্পর্ক নিমিষেই বিচ্ছেদে পরিণত হয়, তবে বোনের মতো অসহায়ত্ব ফুটে ওঠবে সমাজ সংসারে প্রতিটি নারীর চোখে।