বর্তমান পার্লামেন্ট হচ্ছে ডাকাতদের আস্তানা ॥ এটি গুঁড়িয়ে দিতে হবে

ঢাকা জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভায় সাদেক হোসেন খোকা

ANA PICনিউইয়র্ক থেকে এনা: ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকাতদের পার্লামেন্ট গঠন করা হয়েছে। ডাকাতদের এই আস্তানা গুঁড়িয়ে দিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এরা আগামী ১০০ বছরেও সংসদে আসতে পারবে না। গত ৮ মার্চ (নিউইয়র্ক সময়) সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত গ্রেটার ঢাকা জাতীয়তাবাদী ফোরাম আয়োজিত ’গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা এ কথা বলেন।
গ্রেটার ঢাকা জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি আজহারুল হক মিলনের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, আতাউর রহমান আতা ও মোহাম্মদ সোহরাব হোসেনের পরিচালনায় সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট গবেষক ড. এস আই শেলি, বিশিষ্ট সাংবাদিক মঈনুদ্দীন নাসের, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, বিএনপি নেতা কামাল সাঈদ মোহন, বাসেত রহমান বাসেত, সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন, ঢাকা জেলা সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, বাতেন সরকার, সেমিনারের আহবায়ক সৈয়দ আকিকুর রহমান ফারুক, বদরুল খান বাদল, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কমিশনার মোশাররফ হোসেন খোকন, মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, মোহাম্মদ সাঈদ, সুরুজ্জামান, নাসির উদ্দিন শরিফ, শেখ শাহজাহান, মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আহবায়ক সৈয়দ আকিকুর রহমান, আব্দুল করিম, সেমিনারে যুগ্ম আহবায়ক এ কে আজাদ, মোশাররফ হোসেন সবুজ প্রমুখ।
সাদেক হোসেন খোকা আরো বলেন, আপনারা জানেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দুই মাস যাবত তালাবন্দ করে রাখা হয়েছে, তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাকে পিপার স্প্রে মারা হয়েছে। আমাদের সংবিধান কথা বলার অধিকার দিয়েছে কিন্তু এ সরকার তা করতে দিচ্ছে না। এই সরকার ইয়াহিয়া সরকারকেও হার মানিয়েছে। ইয়াহিয়া সরকারের আমলেও এমন অবস্থা ছিলো না। দলীয় বিচারপতি খায়রুল হককে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে। সেই রায়ে তিনি আগামীতে আরো দুই বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সংসদের উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন। এর জন্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমুসহ কয়েকজনকে দিয়ে একটি কমিটি করেছিলেন। সেই কমিটির সকল সদস্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে বলেছিলেন কিন্তু শেখ হাসিনা একক ইচ্ছায় তা বাতিল করেন এবং ৫ জানুয়ারিতে প্রার্থী ও ভোটার বিহীন নির্বাচন করে আজকে ক্ষমতা দখল করে আছেন। তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক দিয়েছেন, সেই আন্দোলন এখন চলছে। এই আন্দোলনকে দমানোর জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে মানুষ হত্যা করছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আজকে যাদের ক্রসফায়ারে হত্যা করা হচ্ছে এবং পেট্রোল বোমায় যারা নিহত হচ্ছেন তাদের দায়দায়িত্ব শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে। এর জন্য ভবিষ্যতে শেখ হাসিনাকে কাঠগোড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং তিনি মুক্তি পাবেন না। তিনি তার বিরুদ্ধে মামলা সম্পর্কে বলেন, আওয়ামী লীগ এর আগের বারও আমার বিরুদ্ধে খুনের মামলাসহ অনেকগুলো মামলা দিয়েছিলো, এবারো দিচ্ছে, আমি এটাকে ভয় পাই না। শেখ হাসিনার মনে রাখা উচিত হামলা, মামলা, মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। তিনি উদাহরণ হিসাবে বলেন, ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পূর্বে পাকিস্তানী বাহিনী ১৪ ডিসেম্বর আমাদের বুদ্ধিজীবীসহ নরহত্যা চালিয়েছিলো। কিন্তু তারা ধারণা করতে পারেনি যে ২ দিনেই তাদের পতন হবে। শেখ হাসিনা পাকিস্তানী জান্তাদের কৌশল অবলম্বন করেছেন ঢাকাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তার নিয়ন্ত্রণও থাকবে না। সারাদেশ থেকে তার নিয়ন্ত্রণ শেষ হয়েছে। প্রয়াত সাংবাদিক মুসা সাহেবের সুরে বলতে চাই শেখ হাসিনা এখন গণপ্রজাতন্ত্রি ঢাকা শহরের প্রধানমন্ত্রী। সারা দেশে নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই মন্ত্রী এবং এমপিদের বলেছেন, সাবধানে থাকার জন্য। তিনি বলেন, চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।