দুই নেত্রীকে সংলাপে বসার চিঠি দিলেন মুন
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ বাংলাদেশের চলমান সহিংসতা নিসরনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার চিঠি দিয়েছেন। খবর ইউএনবি।
চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো মহাসচিবের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন।
জাতিসংঘের ঢাকা অফিসের মুখপাত্র লিন্ডসে লিঞ্চ বলেন, মহাসচিব কয়েকদিন আগে
চিঠিটি পাঠিয়েছেন। চিঠিটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে চিঠির মধ্যে কি লেখা রয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।
জানা গেছে, চিঠিতে বানকি মুন চলমান সহিংসতায় প্রাণহানিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রাজনৈতিক মত পার্থক্য নিরসনে দুই নেত্রীকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে দৈনন্দিন ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেছেন, বাংলাদেশের সহিংসতায় প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিতে বান কি-মুন গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
তারানকো বাংলাদেশ সফরে সরকার অনুমতি দিচ্ছে না-গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তারানকোর ঢাকা সফরের কোনো পরিকল্পনা নেই।
তাকে সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি তার উদ্যোগ অব্যাহত রাখবেন।
এর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রাক্কালে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে ২০১৩ সালেও শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি লিখে ছিলেন বান কি-মুন। ওই সময় তিনি দুই নেত্রীকে টেলিফোনও করেন।
বান কি-মুনের দূতিয়ালিতে সে সময় দুই দফা ঢাকা সফর করেন অস্কার ফারনান্দেজ তারানকো। ঢাকায় এসে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা বসে সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন তিনি।
বান কি-মুনের দূতিয়ালির পরও সে সময় সংলাপ ব্যর্থ হয়। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে। রে সহিংসতার মধ্যে ২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
৫ জানুয়ারি ঢাকায় সমাবেশ করতে না পেরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সারা দেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন।
অবরোধের পাশাপাশি হরতাল কর্মসূচিও ঘোষণা করেন তিনি। তার এই কর্মসূচি ঘোষণার মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পেট্রোল বোমা হামলা চলছে।
সরকারি হিসেব মতে, গত দেড় মাসে পেট্রোল বোমা ও ককটেল হামলায় সারা দেশে নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৫ জন, আহত হয়েছেন ৫৫৬ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা শ’য়ের কাছাকাছি।
প্রাণহানি ছাড়াও এ সময় ৬৬৪টি যানবাহন পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ৪১০টি যানবাহন ভাঙচুর করেছে অবরোধ সমর্থকরা। ২৮টি স্থাপনা পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। রেলপথে নাশকতার ঘটনা ঘটেছে ২৫টি। নৌপথে ছয়টি।
সরকার এই হামলার জন্য বিএনপি ও জামায়াত শিবিরকে দায়ী করেছে।