যুবলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১০

কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ ইউপি আ’লীগের সম্মেলন পন্ড, ভাঙচুর

Kanaighat Hamla-Picকানাইঘাট প্রতিনিধি: কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় স্থানীয় সুরাইঘাট বাজারে আওয়ামীলীগ যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পন্ড হয়ে গেছে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর ৪টি মোটার সাইকেল, সম্মেলনের মঞ্চ ও চেয়ার ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুরো সুরাইঘাট বাজার রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। পরে সম্মেলনে আগত আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে কানাইঘাট থানা পুলিশ নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শুক্রবার সুরাইঘাট বাজারে কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি আ’লীগের সম্মেলন উপলক্ষ্যে মঞ্চে নেতারা বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে সাড়ে ৫টার দিকে সম্মেলনে জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মস্তাক আহমদ পলাশ, উপজেলা আ’লীগের আহ্বায়ক পৌর মেয়র লুৎফুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সদর ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলামসহ আ’লীগের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন বক্তব্য শুরু করলে এ সময় স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে টিলাগড় গ্র“প সমর্থিত স্থানীয় আ’লীগ নেতা নাজমুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ কর্মী মুন্না চক্রবর্তী প্রতিপক্ষ ছাত্রলীগের তালতলা গ্র“প সমর্থিত নেতাকর্মীদের মারতে উদ্যত হয়। এসময় তাদের স্থানীয় আ’লীগের নেতৃবৃন্দ বাধা প্রদান করলে এ নিয়ে মঞ্চের পাশে তুমুল সংঘর্ষ শুরু হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, মঞ্চ ও স্টেইজের ছামিয়ানা, ৪টি মোটার সাইকেল ও দেড়শতাধিক চেয়ার এবং দু’টি মুদির দোকান ভাংচুর করা হয়।
এক পর্যায়ে বাজারে আগত লোকজন ধাওয়া দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী মুন্না চক্রবর্তীকে আটকের চেষ্টা করেন। ধাওয়া খেয়ে মুন্না বাজার সংলগ্ন সুরাইঘাট বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখান তাকে ধরে আনার চেষ্টা করেন আ’লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। বিজিবি’র এক জওয়ান জানিয়েছেন সংঘর্ষ চলাকালে ক্যাম্প লক্ষ করে ঢিল ছুড়া হয়। খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন এবং অবরুদ্ধ জেলা ও উপজেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দের উদ্ধার করে পুলিশ প্রহরায় নিরাপদে পৌঁছে দেন। পুলিশ বিজিবি ক্যাম্পে আটক ছাত্রলীগ কর্মী মুন্না চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে।
সংঘর্ষের সময় ধারালো ছুরার আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন স্থানীয় আ’লীগ নেতা তোতা মিয়া (৪০), মোহাম্মদ রাজু (২২), মানিক উদ্দিন (২১) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। আহত বাচ্চু মিয়া (২০), স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল বাশার, ছাত্রলীগ কর্মী মারুফ আহমদ সহ কয়েকজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা আ’লীগের সদস্য আব্দুল লতিফ সহ স্থানীয় আ’লীগের নেতৃবৃন্দ জানান, সম্মেলন যখন শান্তিপূর্ণ ভাবে চলছিল ঠিক সেই মুহুর্তে আ’লীগ কর্মী নাজমুল ইসলাম ও মুন্না চক্রবর্তী অতর্কিত ভাবে হামলা করলে সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। পরে সন্ত্রাসীদের জনতা বাজার থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। মুন্না চক্রবর্তী নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।