ব্যাখ্যা দিলেন প্রতিমন্ত্রী-ডিজি : ঢাকা থেকে ৩ সদস্যের টিম আসছে
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪ ঘন্টায় প্রাণ গেল ৩২ জনের। মৃত্যুর মিছিলে নবজাতক ১০ শিশুও রয়েছে। ডাক্তারদের ‘অবহেলা’ ও ‘ভুল’ চিকিৎসায় তারা মারা গেছেন বলে অভিযোগ স্বজনদের। ৩২ জন মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করে এটাকে ‘স্বাভাবিক’ মৃত্যু বলে দাবি করলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। মন্ত্রণালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা ৩২ জনের মৃত্যুর কারণ ব্যাখ্যা করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক দাবি করেন, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্বাভাবিকভাবে কোনো রোগী মারা যায়নি।
মন্ত্রী বলেন, তবে প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্মসচিবকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিশু ছাড়াও যে ২২ ব্যক্তি মারা গেছে তারা কেউ ভুল চিকিৎসায় মারা যাননি।
এর আগে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা, দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। তিনি বলেছেন, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ১০ জন শিশু এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, দুর্ঘটনাজনিত এবং একটি মারামারির ঘটনায় বাকি ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি বলেন, আমরা ওসমানী মেডিকেলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।
তবে ভুল চিকিৎসায় এই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। অপরদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে দেখছে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটির সদ্যস্যরা হচ্ছেন, হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইসমাইল পাটোয়ারী, শিশু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মনজ্জির আলী ও আবাসিক চিকিৎসক (মেডিসিন) ডা. রঞ্জন কুমার রায়।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুছ ছালাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিনই এভাবে গড়ে তিনজন শিশু মারা যায়। তবে আজকের মৃত্যুর সংখ্যাটা অস্বাভাবিক। এজন্য আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ভুল চিকিৎসায় এই শিশুদের মৃত্যুর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ দেননি। তিনি সংশ্লিষ্টদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল ওসমানী। এখানে বিদ্যমান সিটের দ্বিগুণ-তিনগুণ রোগী ভর্তি থাকেন। গত মাসের হিসাব দেখিয়ে তিনি বলেন, গত মাসেও এখানে ৪৩৩ জন রোগী মারা যান। এর মধ্যে ৬২ জন শিশুও ছিল। এ হিসাবে গত মাসে গড়ে ১৪জন রোগী মারা গেছেন।
উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ নবজাতক ও পাঁচ শিশুসহ ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিভিন্ন রোগ ও ঠাণ্ডাজনিত কারণে এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর জন্য চিকিৎসকরা দায়ী নন। তবে মৃত রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা এবং গাফিলতির কারণেই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।