গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ॥ দায় স্বীকার ছাত্রদলের!
সোহেল আহমদঃ সিলেটে হরতাল অবরোধে গাড়িতে অগ্নি সংযোগ ভাংচুর পেট্রোল বোমা এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পেট্রোল বোমা গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা তারা অপকটে স্বীকার করেন। আলোচনায় আসতে তারা নিজেদের কর্মকান্ডগুলো তারা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মকান্ডের ছবি ও উপস্থিত নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ই-মেইলে সংবাদ সরবরাহ করছেন। সংবাদটি সঠিক প্রমাণের জন্য সংবাদের নিচের অংশে বার্তা প্রেরক হিসেবে নিজেদের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হচ্ছে। ছাত্রদলের ব্যানারে মিছিল করে গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে, সংযোগ কবলিত ছবি তারা নিজেরাই প্রেরণ করছেন।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিফতা সিদ্দিকী ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ মামুন জোটের নেতাকর্মীদের নির্দোষ প্রমাণ করতে গত রোববার নগরীতে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে প্রচারপত্র বিলীন করেন। তাতে উল্লেখ করা হয়, পরিবহনে অগ্নি সংযোগ দিয়ে দেশের মানুষকে হত্যা করছে বর্তমান আওয়ামীলীগ ও তার দোসররা। আর এর দায় দেওয়া হচ্ছে বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের উপর। তারা এই নাশকতার সাথে কোন ভাবেই জড়িত নয় বলে দাবি করেন এবং তাদের কর্মসুচি শান্তিপূর্ণ ভাবে পালিত হচ্ছে বলে প্রচারপত্রে উল্লেখ করে জনসাধারনের মাঝে বিলি করছেন।
গতকাল সোমবার বেলা ১টায় দক্ষিণ সুরমার সিলেট ঢাকা মহাসড়কের হাজরাই বাইপাস পয়েন্টে মিছিল থেকে দু’টি গাড়ি ভাংচুর করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। জেলা ছাত্রদলের প্রথম যুগ্ন সম্পাদক মকসুদ আহমদের নেতৃত্বে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে মিছিল শেষে নেতাকর্মীরা ঢাকা মেট্রো-গ- ১৭-৪২৫৬ নম্বরের একটি প্রাইভেট কার ও একটি সিএনজি অটোরিকসা ভাংচুর করেন। ছাত্রদল নেতা শায়েল শাহ বার্তা প্রেরক থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মিছিল ও ভাংচুরের সংবাদ মিডিয়াতে পাটানো হয়। তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মিছিলে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা ফখরুল, রুমেল, অলিউর রহমান, আলতাফ হোসেন সুমন, এহতেশামুল হক সবুজ, এনামুল হক, জোবায়ের আহমদ লিলু, রাসেল আহমদ, শায়েল শাহ, মিনার হোসেন লিটন, আলী আহমদ, সাগর আহমদ, জনি আহমদ, আবু বকর ছিদ্দিক, মেহেদি হাসান সাজাই, তাহমিদ, ইউসুফ, মিজান আহমদ, কয়েছ আহমদ, শেলু, ভুলন, শাহিন, মিন্টু, রুবেল, সোহাগ প্রমুখ। উল্লেখিত ঘটনা জানতে মকসুদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করে তার ফোন বন্ধ থাকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বার্তা প্রেরক শায়েল শাহ উল্লেখিত মোবাইলে ফোন করলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
গত রোববার হরতাল অবরোধের সমর্থনে ও বেগম খালেদা জিয়ার উপর মামলা দায়েরের প্রতিবাদে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় সিলেট ছাত্রদলের উদ্যোগে ও সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রউফ এর নেতৃত্বে মিছিল, গাড়ী ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। মিছিল উপস্থিত ছিলেন খালেদ আহমদ মিলু, আব্দুল্লাহ আল হেলাল, আব্দুল আহাদ সুমন, দিলদার হোসেন শামীম, চৌধুরী সোবহান আজাদ, মাহবুবুল আলম সৌরভ, আব্দুল হোসেন, সুজন আহমদ প্রমুখ। এ ঘটনায় সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রউফ ঘটনার সত্যতাও প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রেরণের কথা স্বীকার করেন।
গত সোমবার (২ ফেব্রুয়ারী) নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকায় হরতাল অবরোধের সমর্থনে সিলেট ছাত্রদলের উদ্যোগে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে ছাত্রদল কর্মীরা ৭/৮ টি গাড়ী ভাংচুর করে এবং ৫ ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় বলে তারা প্রেস বিজ্ঞপ্তি উল্লেখ করে সংবাদটি মিডিয়াতে প্রেরণ করেন এবং ঘটনার সত্যতা তারা স্বীকার ও করেছেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সোমবার বিকেল ৫টায় সিলেট সদর উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রউফ ও মদন মহন কলেজ ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শিহাব খানের নেতৃত্বে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে ছাত্রদল কর্মিরা ৭/৮ টি গাড়ী ভাংচুর করে এবং ৫ ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা উসমান গণি, মিটু কপালী, সাদিকুর রহমান নয়ন, শাহিন আহমদ, মুক্তার আহমদ মুক্তার, আব্দুল আজিজ, সাইদুর রহমান, সুমন আহমদ, মাহবুবুল আলম সৌরভ, কাওসার আহমদ, আতিকুর রহমান, মাহমুদুল সানোয়ার নয়ন, অপু, বাপ্পি, প্রমূখ।
কিন্তু মহানগর বিএনপির প্রচারপত্রে উল্লেখ করা হয়, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষা আন্দোলন সংগ্রামের অংশ হিসাবে ২০ দলের ডাকে শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ ও হরতাল চলছে। আওয়ামীলীগ সরকার তাদের এজেন্ট বাহিনী ধারা নাশকতার অংশ হিসাবে মার্কেটে ও পরিবহন গুলিতে অগ্নি সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে যাতে দেশবাসী ও আর্ন্তজাতিক মহলের কাছে বিএনপিকে জঙ্গী দল হিসাবে আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিঃশেষের অপচেষ্ঠা লিপ্ত রয়েছে।