বিএনপি-ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, মিজান চৌধুরী আহত
বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া আহত ১০
মিজানুর রহমান ফজলু, ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকের গোবিন্দগঞ্জে বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পথচারী মহিলাসহ উভয়পক্ষের ১০ ব্যক্তি আহত হয়েছে। সংঘর্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।আহতদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ২ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে এবং ঘটনাস্থলে অতিরিক্তি পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টায় গোবিন্দগঞ্জ রেলগেইট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অবশেষে ছাত্রলীগের ধাওয়া খেয়ে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান’র নেতৃত্বাধীন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল পালিয়ে যায়। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের পিংকু, আব্দুল গণি, মুজাহিদুর রহমান হিরা, নুরুল আমিন, আহমেদ ফয়েজ, রাজু ও উপজেলা ছাত্রলীগের শিপলু, গোবিন্দগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের দ্বীনুল ইসলাম শ্যামল আহত হয়েছে। এসময় স্থানীয় ধান সীড়ি রেষ্টোরেন্ট এলাকার সামনে একজন পথচারী মহিলা (৩০) ছুড়া ডিলে আহত হয়। তাকে স্থানীয় সেবা ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে অল্পের জন্য তার কোলের শিশুটি প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিএনপি চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজানের নেতৃত্বাধীন বিএনপি যুবদল ও ছাত্রদল অঙ্গ সংগঠন নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জ নতুন বাজার এলাকার মিয়াজান মার্কেট থেকে হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি ট্রাফিক পয়েন্ট অতিক্রম করে ছাতক সড়কে যায়। সেখান থেকে আবার ট্রাফিক পয়েন্টে এসে সুনামগঞ্জ সড়কের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে উপস্থিত ট্রাফিক পয়েন্টে নিয়োজিত পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। এসময় কলেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে সুনামগঞ্জ জেলা, ছাতক উপজেলা ও গোবিন্দগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হরতাল-অবরোধ বিরোধী একটি মিছিল বের করে বিএনপি’র মিছিলে মুখোমুখি হয়। এসময় ছাত্রলীগের মিছিল থেকে বিএনপির মিছিল লক্ষ করে একটি ঢিল ছুড়লে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ২ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করায় বিএনপি নেতা মিজানসহ তার নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। পালিয়ে তারা স্থানীয় একটি বাসায় নিরাপদে আশ্রয় নেয়। মূহুর্তের মধ্যে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীরা দিক-বিদিক ছুটাছুটি করে নিরাপদে চলে যায়। উভয় পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় সুনামগঞ্জের প্রবেশদ্বার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ২ রাউন্ড টিয়ার গ্যাস ও ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী দাবি করেন, এ ঘটনায় বিএনপির ৬ জন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা হলেন, আবু তালেব, ফয়েজ আহমদ, মিসবাহ উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, পিংকু দত্ত, ফজলুর রহমান খাঁন এবং নুরুল আমিন। তাদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ জালাল মুন্সি জানান, ঘটনাস্থলে অতিরিক্তি পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলাকায় পুলিশি টহল জোরধার করা হয়েছে। এদিকে ছাত্রলীগ কর্তৃক মিজান গ্রুপকে ধাওয়া দিয়ে পলায়নের শেষে কয়েক দফা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাওছার আল-মামুন, শাহ মওদুদ আহমদ, মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এমএ গফ্ফার, সিনিয়র সদস্য আবদুল ওদুদ ছামিসহ উপজেলা ও গোবিন্দগঞ্জ কলেজ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন।