ছাতকে বহুল আলোচিত নুরুল আমীন খুনের ঘটনায় ২৪জনকে অভিযুক্ত করে মামলা

খুনের আগেই আসামিরা ঘরের মালামাল সরিয়ে নেয়

murderমিজানুর রহমান ফজলু, ছাতক প্রতিনিধিঃ ছাতকের জাউয়া বাজার ইউনিয়নের কাইতকোনা গ্রামের বহুল আলোচিত নূরুল আমীন খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২১জানুয়ারী নিহতের ছোট ভাই আলম মিয়া বাদী হয়ে ছাতক থানায় হত্যা মামলা নং (১৪) দায়ের করেন। মামলায় একই গ্রামের মৃত ইনছান উল্লাহর পুত্র কমর উদ্দিনকে প্রধান, গিয়াস উদ্দিনের পুত্র বুরহান উদ্দিন, মৃত আয়ফর আলীর পুত্র কামরুল ইসলাম, মৃত ছমক আলীর পুত্র নুর আলম, মৃত ইউনুস আলীর পুত্র আ: নুর, কামরুল ইসলামের পুত্র রকিবুল, মৃত গগন পালের পুত্র সুবল পাল, মৃত ছবর উল্লাহর পুত্র আবদুর রশিদ, ছেলে শামীম আহমদ, আবদুল মান্নানের পুত্র খলিলুর রহমান, মৃত ইনছান উল্লাহর পুত্র আলা উদ্দিন, মৃত রিয়ান উদ্দিনের পুত্র আঙ্গুর মিয়া, আলা উদ্দিনের শ্যালক জসিম উদ্দিন, মৃত আলা বকস’র পুত্র আফাজ উদ্দিন, মৃত আশকর আলীর পুত্র সফিকুল ইসলাম, কানু পালের পুত্র বিপুল পাল ও বিজয় পাল, মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র সাজিদুর রহমান, একই ইউনিয়নের দেওকাপন গ্রামের মৃত হাতিম উল্লার পুত্র আবদুস ছত্তার, মৃত রমেশ রঞ্জন চৌধুরীর পুত্র নারায়ন চৌধুরী, হরিপুর গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের পুত্র ছালিক মিয়া, আবদুস ছালাম, ১নং আসামি কমর উদ্দিনের পালক পুত্র গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বুড়াইরগাঁও গ্রামের জয়নালসহ ২৪জনকে আসামি করে হত্যা মামলা রুজু করা হয়। এদিকে ঘটনার পর থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক জড়িত সন্দেহে ৪জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মামলার প্রধান আসামি কমর উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিনের পুত্র বুরহান উদ্দিন, মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র সাজিদুর রহমার সজিদ, দিরাই উপজেলার উমেদ নগর গ্রামের মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে আইন উদ্দিন। প্রসঙ্গত, ১৯জানুয়ারী সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাইতকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে খুন হন গ্রামের মৃত রিয়াছত আলীর পুত্র নুরুল আমীন। গুরুতর আহত হয় সানজব আলীর পুত্র আবদুল বাছিত। বর্তমানে বাছিত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

খুনের ঘটনার আগে আসামিরা ঘরের মালামাল অন্যত্রে সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য সাংবাদিকদের দিয়েছেন কাইতকোনা গ্রামের হারুন মিয়া। পেশায় তিনি একজন বাস চালক। ছাতকের জাউয়া বাজার ইউনিয়নের কাইতকোনা গ্রামের নুরুল আমীন হত্যার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হয়েছে। ঘটনার পর পর পুলিশ ৪জনকে গ্রেফতার করলেও অন্যান্য আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। ফলে মামলার আসামি পক্ষের বাড়ি ঘর পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে। সোমবার বিকেলে কাইতকোনা গ্রামে সরজমিন ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। সংবাদ সংগ্রহের জন্য ছাতক ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদ কর্মীরা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে যান। এর মধ্যে নিহত ৪সন্তানের জনক নুরুল আমীনের বাড়িতে গেলে কান্নার আওয়াজ শুনা যায়। সন্তানদের শান্তনা দেয়ার ভাষা কারোর নেই। মা ছেলের জন্য পাগল পারা। অন্ত:স্বত্তা স্ত্রী স্বামী হারিয়ে ৪ সন্তানদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তারা সকলেই খুনির ফাঁসি চান। এক পর্যায়ে মামলার আসামি সুবল পালের বাড়িতে যাওয়া হয়। তার বাড়িতে কেউ নেই। টিন সেটের ঘরটি ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। জানতে চাইলে এক যুবক আসেন। সে সুবল পালের ভাতিজা পরিচয় দেয়। এসময় সে সাংবাদিকদের জানায়, ঘটনার পর মামলার বাদী পক্ষের লোকেরা হামলা করে ঘরটি ভাঙচুর করেছে। এসময় পাশের ঘরের আঙ্গিনায় দাড়িয়ে আছেন একজন লোক। কাছে গিয়ে নাম ও বাড়ি জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বাড়িটা তার এবং নাম হারুন মিয়া পরিচয় দিলেন। ঘটনার বিবরন জানতে চাইলে তিনি ও তার পরিবারের মহিলাদের বরাত দিয়ে বলেন, ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত। সুবল পাল ঘটনার আগে ঘরের বিভিন্ন মালামাল অন্যত্রে সরিয়ে নিয়েছেন। এমনকি তার গৃহপালিত পশু গরু ঘটনার আগের দিন সরিয়ে নিয়েছেন। লন্ডন প্রবাসী জনৈক আঙ্গুর মিয়াসহ ৪/৫জন লোকের কারণে আদর্শ গ্রাম কাইতকোনা আজ কলঙ্কিত। উল্লেখ্য, ১৯জানুয়ারী সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাইতকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তায় প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে খুন হন গ্রামের মৃত রিয়াছত আলীর পুত্র নুরুল আমীন। গুরুতর আহত হয় সানজব আলীর পুত্র আবদুল বাছিত। বর্তমানে আবদুল বাছিত সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।