শোক আর শ্রদ্ধায় জুম্মন লুসাইকে শেষ বিদায়

jumman lushaiসুরমা টাইমস ডেস্কঃ কিংবদন্তি হকি তারকা জুম্মন লুসাইকে ফুলেল শ্রদ্ধায় শেষ বিদায় জানিয়েছে সিলেটবাসী। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি শেষে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে। এসময় ক্রীড়াঙ্গন ও রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সিলেটের সর্বস্তরের মানুষ তাকে শ্রদ্ধা জানান।
জুম্মন লুসাইর মরদেহ নিয়ে আসার পর স্টেডিয়াম এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন শুরু হয়। এসময় সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এজেড এম নুরুল হক, সিলেট জেলা ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি মাহিউদ্দিন আহমদ সেলিম, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আজিজুল মালীক চৌধুরী, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক ফেরদৌস চৌধুরী রুহেল, কোষাধ্যক্ষ মিরাজ জাকির, ক্রীড়া সংগঠক শামসুল বাসিত শেরোসহ ক্রীড়াঙ্গনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে সকাল আটটার দিকে তার মরদেহ সিলেট ওসমানী হাসাপাতালের হিমাগার থেকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। শ্রদ্ধানিবেদন শেষে জুম্মন লুসাইকে তার গ্রামের বাড়ি শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
‘একটু আক্ষেপ’ নিয়ে গত রোববার (১৮ জানুয়ারি) না ফেরার দেশে চলে যান দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলো ছড়ানো সাবেক এই ডিফেন্ডার।
১৯৫৫ সালের ১২ অগাস্ট সিলেটে জন্ম জুম্মনের। ৫৯ বছর বয়সে তার না ফেরার দেশে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না জুম্মনের সতীর্থ আর উত্তরসূরিরা।
১৯৮২ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের রক্ষণভাগের হয়ে মাঠে আলো ছড়ান জুম্মন। আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করার কীর্তিও তার গড়া। ১৯৮৫ সালে এশিয়া কাপে ইরানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন সিলেটের এই ডিফেন্ডার। ১৯৮২ ও ১৯৮৬ সালের এশিয়ান গেমস, ১৯৮৫ ও ১৯৮৯ সালের এশিয়া কাপে খেলেন তিনি।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন শোকের চাদরে ঢাকা পড়লেও জুম্মনের না বলা ‘একটু আক্ষেপ’ চাপা পড়ছে না। ২০১১ সালে জাতীয় পুরস্কার পান তিনি। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে জুম্মনের হাতে সেই স্বীকৃতির স্মারক তুলে দেয়ার আর কোনো পথই খোলা থাকল না।
গত শুক্রবার হঠাৎ বমি করার পর জ্ঞান হারিয়ে পড়লে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয় জুম্মনকে। ক’দিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিলেন তিনি। রোববার দুপুরের দিকে না ফেরার দেশে চলে যান বাংলাদেশ হকির এই কিংবদন্তি।