নগরজুড়ে খোলা ড্রেইন, ম্যানহোল পায়ে পায়ে বিপদ
ইয়াহইয়া মারুফঃ সিলেট নগরীর বিভিন্নস্থানে খোলা রয়েছে ড্রেইন ও ম্যানহোল। যা প্রতিদিনই কারো না কারোর বিপদ হয়ে দাড়ায়। দীর্ঘদিন ধরে এসব ড্রেইন ও ম্যানহোলের সংস্কারে সংশিষ্টদের কোন নজর নেই বলে জানাগেছে। যার ফলে এসব খোলা ড্রেইনের আশেপাশে থাকা বাসা বাড়ির মানুষের ভূগান্তির শেষ নেই। দূর্গন্ধ যেন প্রতিটি মূহুর্তের সঙ্গী হয়ে দাড়িয়ে তাদের। আর গাড়ী বা রিক্সায় করে নগরীতে চলাফেরাকারীদের দূর্ভোগ যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। এজন্য চরম র্দূভোগ পুহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। নগরীতে প্রতিদিনই যার যার প্রয়োজনে হাঁটছে মানুষ, চলছে রিক্সা ও গাড়ি আর অজান্তে ম্যানহোলে পরছে গাড়ীর চাকা বা মানুষের পাঁ। সচেতন মহরে ধারনা যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা। সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজারে ঢাকনাভাঙ্গা ম্যানহোলে প্রতিদিনই ঘটছে এমন ঘটনা।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর প্রানকেন্দ্র বন্দরবাজারের রংমহল টাওয়ার সংলগ্ন জেল সীমানাস্থ ড্রেইনের প্রায় অংশই র্দীঘদিন যাবৎ খোলা ও নগরীর ব্যস্ততম স্থান জিন্দাবাজার পয়েন্টে রাস্তার ঠিক মাঝখানে হাঁ করে আছে তিনটি ম্যানহোল। সংস্কারের অভাবে ম্যানহোল গুলোর ঢাকনার পাশে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার মাঝখানে হওয়ায় গাড়ির চাকা, বিশেষ করে দরিদ্র রিক্সা চালকদের রিক্সার চাকা গর্তে পড়ে আটকে থাকে অনেক সময় ভেঙ্গে ও যায়। এর ফলে প্রায় এই ব্যস্ততমস্থানে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ম্যানহোলের পাশ কাটিয়ে যানবাহন চলার ফলে ও বড় ধরনের যানজট তৈরি হচ্ছে। গত রোববার সকালে একজন দরিদ্র সবজি ব্যবসায়ী নগরীর প্রধান সবজি আরৎ থেকে ফেরার পথে জিন্দাবাজার পয়েন্ট পার হওয়ার সময় সবজি বহনকারী ভ্যানের চাকা গর্তে পরে সব মালামাল রাস্তায় পরে অধিকাংশই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে কাঁন্নায় ভেঙ্গে মাঠিতে লুঠিয়ে পরেন এই দরিদ্র সবজি ব্যবসায়ী। বলতে থাকেন আজ ছেলে-মেয়েদের কি খাওয়াব এই সবজি ছিল তাদের আহার জোগারের একমাত্র মাধ্যম।
চাকা ম্যানহোল এর গর্তে পড়ে গাড়ির বডি রাস্তার সঙ্গে ধাক্কা লাগার ফলে বডির ক্ষতি হয় বলে ও কয়েকজন চালক অভিযোগ করেন। এমতাবস্থায় যান চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টির পাশাপাশি নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। রাস্তা পারাপারে পথচারীদের ও সর্তক হয়ে গর্তটি পার হতে দেখা গেছে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এদিকে কর্তৃপক্ষের দ্রুত দৃষ্টি চান নগরবাসি।
অপরদিকে যতরপুর,শিবগঞ্জ,উপশহর,আম্বরখানা ঘুরে দেখা যায় এবং শাহী ঈদগাহ‘র দক্ষিন ও উত্তর দিকে দুটি বড় ম্যানহোল খোলা রয়েছে। এ সব স্থানে প্রায় অঘটন ঘটছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে। শাহী ঈদগাহ‘র বাসিন্দা গাড়ীচালক আনোয়ার হোসেন জানান, এই ম্যানহোলে প্রায়ই আমাদের গাড়ীর চাকা আটকা পরে।
অনেক সময় গাড়ী বা রিক্সার চাকা পানচার , বডি নস্ট হয়। এ জন্য মালিকের কাছ থেকে আমাদের বকা শুনতে হয়। অনেক দিন ছেলে-মেয়ের জন্য খাবার না নিয়ে গাড়ি মেরামত করে দিতে হয়। আমাদের এই দুর্র্দশা দিকে কর্তৃপক্ষের যেন দৃষ্টি হয়।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জিন্দাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, একটি রিক্সার চাকা ম্যানহোলের গর্তে আটকে আছে। এসময় দু’পাশের যানবাহন চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হয়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।
এসময় পার্শ্ববর্তী এক ব্যবসায়ী জানান, গর্তটি প্রায় ৮/৯ মাস ধরে এভাবে রয়েছে। এ পর্যন্ত অনেকগুলো দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং প্রায়ই যানবাহন গর্তটিতে পড়ে। এতে বিশাল যানজটের সৃষ্টিসহ ঘটে অনেক র্দূঘটনা। এ পর্যন্ত সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কোনো দেখা মেলেনি।
অন্যদিকে যতরপুর বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, আমার বাসার একদম পাশে র্দীঘদিন যাবৎ ড্রেইন খোলা কর্তৃপক্ষের সাথে অনেক বার যোগাযোগ করে ও কোন ফল মিলেনি।
এ সময় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন এসব ম্যানহোলে ২০-২৫ টি গাড়ির চাকা আটকা পড়ে। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় যানজট নিরসনে হিমশিম খেতে হয় আমাদের।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনে চীফ ইঞ্জিনিয়ার নুর আজিজ নগরীর বিভিন্নস্থানে ড্রেইন ও ম্যানহোল খোলা থাকার সত্যতা স্বীকার করে জানান, খুব শিগরই লোক পাঠিয়ে এই সব জনসমস্যা সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস্ত করেন।