কাউন্সিলর ফরহাদের বিরুদ্ধে মহিলাকে হুমকি-ধমকির অভিযোগ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম এবং তার স্ত্রী নাদিরা ফরহাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভ‚মি দখলের চেষ্টা ও খুন করে পুঁতে ফেলার হুমকির অভিযোগ করেছেন নগরীর চৌকিদেখীর মৃত রহমত উল্লাহর স্ত্রী রাবিয়া বেগম। বুধবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে রাবিয়া বেগম বলেন, ‘সিলেট সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে সম্পাদিত দলিলে খরিদ ও পরবর্তীতে মৌরসী সূত্রে স্বত্ববান দখলকার হয়ে আমি ও আমার পরিবার আম্বরখানা মৌজার সাবেক ১০৪৯ ও বর্তমান ৫৩৫ নং দাগের ভুমিতে বাসা নির্মাণ করে ভোগদখল ও ব্যববহার করে আসছি। ইতোপূর্বে কেউ উক্ত স্বত্বের উপর কোনো ধরনের দাবিধাওয়া করেনি। পাকিস্তান সেটেলমেন্ট ও বর্তমান বাংলাদেশ জরিপেও ওই ভিটা ও বাড়ির ভূমি আমাদের পরিবারের লোকজনের নামে নামজারী রেকর্ড ও মাঠ পর্চা রয়েছে। সেটেলমেন্টের উভয় রেকের্ডের বিরুদ্ধও কেউ কোন আপত্তি করেনি। কিন্তু গত বছরের জুন মাসে বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণকালে হঠাৎ করেই কাউন্সিলর শামীম ও তার স্ত্রী এসে কাজে বাধা দেন। আমরা বাধা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো ধরণের সদুত্তর না দিয়ে উল্টো আমাদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন।’
তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম তার স্ত্রী নাদিরাকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি বিবিধ মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। পুলিশ সরেজমিন তদন্ত করে কাউন্সিলরের অভিযোগ সত্য নয় মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। ফলে আদালত গত বছরের ৩১আগস্ট ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার পরিবারের মামলা খারিজ করে আমাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।’
রাবিয়া বেগম আরো বলেন, আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর আমরা পুনরায় বাসার সীমানা প্রাচীর নির্মানের কাজ শুরু করলে ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার পরিবার আবারো বাঁধা হয়ে দাড়ান। ফরহাদ চৌধুরী ও তার পরিবার আইন-আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে গত ৮ জানুয়ারী সশস্ত্র ক্যাডারদের নিয়ে অনধিকার প্রবেশ করে নির্মান কর্মীদের কাজে বাধা দেন। শোরগোল শুনে আমরা বাসা থেকে বের হলে ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার স্ত্রী নাদিরা আমাদের নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। আমাদের স্বত্ব-দখলীয় বসতভিটা সম্পূর্ন ছেড়ে না দিলে তারা আমাদের হত্যা করে মাটিতে পুঁতে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেন। কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধরী শামীম ও তার সশস্ত্র ক্যাডারদের হুমকি ধমকিতে আমরা সম্পূর্ণ ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছি। তারা যে কোন সময় আমাদের স্বত্বদখলীয় ওই বাসা জোরপূর্বক দখল ও আমাদের প্রাণে মেরে লাশ গুম করে ফেলতে পারে।
রাবিয়া বেগম অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘গত ১৩ জানুয়ারি সকালে আম্বরখানা ফাড়ি পুলিশের এএসআই তরিকুল ইসলাম কাউন্সিলর শামীমের ক্যাডার তিমির নাগ ও আনসার আলীকে নিয়ে আমার কাজের লোকজনকে মারপিট করে এবং এএসআই তরিকুল কাজের লোকদের হাতিয়ার শামীমের বাসায় পৌছে দেন।’
রাবিয়া বেগম বলেন, ‘ফরহাদ চৌধুরী শামীমের উপর ফৌজদারী মামলা, টমটম চালক হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আমি আমার পরিবারসহ সহায় সম্পত্তির সার্বিক নিরাপত্তা বিধানে গত ১০ জানুয়ারি সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেছি।’
রাবিয়া বেগম কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।