সিলেটে ভুমির দখল নিয়ে নানা-নাতীদের মধ্যে চলছে চরম দ্বন্দ্ব। নানা চাইছেন প্রবাসী নাতীদের ভুমি জবরদখল করে নিতে। আর প্রবাসী নাতীরা করছে এর তীব্র প্রতিবাদ। নাতীরা চাইছেন সরকার ও প্রশাসনের দ্রুততর হস্তক্ষেপ। গতকাল শনিবার (৯এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রেসকাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী চার নাতীর পক্ষে এ অভিযোগ তুলে ধরেন নগরীর তাঁতীপাড়ার বর্তমান বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম। প্রবাসীদের পক্ষে আম-মোক্তার হয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে দেয়া বক্তব্যে ফখরুল ইসলাম জানান, সিলেট সিটির ২৭নং ওয়ার্ড এলাকাধীন আলমপুরস্থ টাটা ইন্ডাস্ট্রির কাছে সাড়ে ৭শতক ভুমির উপর পাকা দেয়াল করা ঘর ও খালি ৭ টি দোকান কোটার মালিক দখলকার হচ্ছেন যুক্করাজ্য প্রবাসী চার সহোদর ইয়াসিন রিয়াজ উদ্দিন,তাহসিন রুহিত উদ্দিন,মহসিন শিমুল উদ্দিন ও মুবিন শাকিল উদ্দিন। এই সাড়ে ৭শতক ভুমি তাদের পিতা একলিম সালেহ আহমেদ উদ্দিন ১৯৯৮ সালে রাহেলা খানমের নামে রেজিষ্ট্রি কবালা করে দেন । পরবর্তীতে মা রাহেলা খানম ওই ভুমি তাদেও নামে দেয়ার জন্য তাদেও পিতাকে আম-মোক্তার নিযুক্ত করেন। সেই আম-মোক্তার বলে তাদেও পিতা একলিম সালেহ আহমেদ উদ্দিন ২০১২ সালের ৬ নভে¤রর সিলেট সদর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের ১৭৭৫১/১২নং দলিল মূলে ওই ভুমি তাদেও নামে দানপত্র করে দেন। এর পর থেকে তারা ওই ভুমি বোগদকর ও ভোগ শাসন করতে থাকাবস্থায় সেখানে পাকা দেয়া বিশষ্ট একটি গৃহ ও ৭টি দোকানকোটা নির্মান করেন।
পরবর্তীতে বেঁধে যায় গোল। প্রবাসী ওই চার ছেলের মা রাহেলা খানম ২০১৪সালে পরপুরুষের হাত ধরে পালিয়ে যান এবং তাদের পিতা একলিম সালেহ আহমেদ উদ্দিনকে তালাক প্রদান করে। কিন্তু প্রবাসী ওই চার ছেলে থেকে যায় তাদের পিতার সংসারে। ভিন পুরুষের সাথে পালিয়ে যাওয়ার পর রাহেলার পিতা মুহিবুর রহমান তার নাতীদের নামে দেয়া ওই ভুমি ও দোকান ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা শুরু করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে তাদেও পিতার নামে মায়ের দেয়া আম-মোক্তার নামা বাতিলের জন্য মাকে দিয়ে মামলা করেন। কিন্তু আদালত তাদের এ মামলা খারিজ কওে দেন। এ অবস্থায় প্রবাসী ওই চার নাতীর ভুমি-দোকান সন্ত্রাসী কায়দায় দখলে নেয়ার পায়তারা শুরু করেন নানা মুহিবুর রহমান। মুহিবুর রহমান সিলেটের গোলাপগঞ্জের রানাপিং এলাকাধীন ছত্রিশ গ্রামের বাসিন্দা। তার মেয়ে রাহেলা অন্যের কাছে পালিয়ে যাওয়ায় তিনি প্রবাসী নাতীদের ভুমি ও দোকান কব্জায় নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। নানার এহেন সন্ত্রাসী ও জবরদখল তৎপরতা রোধে গত ৬ এপ্রিল সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি বিবিধ মোকদ্দমা (নং-০৯/২০১৬) দায়ের করা হয়। মামলায় আদালত ওই ভুমি ও স্থাপনার উপর ১৪৫ধারা জারি করেন। কিন্তু মুহিবুর রহমান আদালতের ১৪৫ধারা লংঘন করে ভুমি-স্থাপনা জবরদখলের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে অভিযোগে প্রকাশ।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ওই চার নাতীর ভুমি রক্ষাসহ তাদের নানা মুহিবের দৌরাত্ম রোধে বর্তমান সরকার ও প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ ও আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেরনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি মো. গনি মিয়া, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ও মাওলানা আব্দুল আওয়াল প্রমূখ।