মৌলভীবাজারে ২ বছরের ছেলের হাতে ৩৬ দিনের বোনের মৃত্যু।। পিতার নামে হত্যা মামলা দায়ের
আব্দুল হাকিম রাজ,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারে রাজনগর উপজেলার কাছারী গ্রামে তামিয়া আক্তার নামে ৩৬ দিনের এক কন্যা শিশুকে হত্যার অভিযোগে শিশুটির পিতার নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হলেও সরেজমিন অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে ভিন্ন তথ্য। সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে আলাপকালে এমন তথ্য জানান মৃত শিশুটির দুই বোন সেলিনা বেগম (১৬) ও মিনা বেগম (১৫)।জানা যায়, উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের কাছারী গ্রামের আরশাদ আলীর স্ত্রী পিয়ারুন বেগম (৩৫)
গত ডিসেম্বরে এক কন্যা শিশুর জন্ম দেন। গত ৩ জানুয়ারী সকাল ৯টায় শিশুকে নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় শিশুটির মা পিয়ারুন বেগম রোদ পোহানোর সময় তাঁর ২ বছরের শিশু সায়মন আহমদ মিহাদ খেলার ছলে একটি লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে শিশুটি গুরুতর আহত হয়ে চেহারা নীল বর্ণ ধারন করলে তাঁর মা পিয়ারুন বেগম কান্নাকাটি শুরু করেন। পিয়ারুন বেগমের কান্না শুনে তাঁর স্বামী আরশাদ মিয়া (৪০) ঘুম থেকে উঠে ছোট্ট শিশুটি অবস্থা দেখে হতবাক হয়ে যান। এসময় বাচ্চাকে কেন দেখেশুনে রাখলেন না স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করেন ও শিশুর ছটপটানি দেখে রাগের মাথায় স্ত্রীকে পাশে
থাকা একটি লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর পিয়ারুন বেগম হাসপাতালে ভর্তি হন। এঘটনায় গত ৫ তারিখে পিয়ারুন বেগম বাদী হয়ে কন্যা শিশু হওয়ায় স্বামী আরশাদ আলী অখুশি হয়ে শিশুটিকে হত্যার অভিযোগে রাজনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ৬)। এরপর কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমকে স্ত্রী পিয়ারুন বেগম জানান,তাঁর স্বামী সিজার করার সময় খোঁজ খবর নেন নি এবং টাকা পয়সা দেন নি। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, স্ত্রীর সিজার ও হাসপাতালের টাকা পরিশোধের কাগজপত্রে তাঁর স্বামী আরশাদ আলীর স্বাক্ষর পাওয়া যায়।আরশাদ আলী জানান, স্ত্রীর সিজার করানোর জন্য প্রতিবেশী আবুল কালামের স্ত্রীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা, দেনু মিয়ার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ করেন। তিনি ৩০ হাজার টাকার গাছও বিক্রি করেন বলে দাবী করেন।পিয়ারুন বেগমের বড় মেয়ে সেলিনা বেগম বলেন, আমার বাবাকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। আমার ছোট ভাই মিহাদ খেলার সময় হঠাৎ ছোট বোনকে আঘাত করে। কিন্তু বাবার নামে মামলা করেছেন আমার মা।আরেক মেয়ে মিনা বেগম জানান, ছোট বোনের অবস্থা দেখে বাবা রাগ করে মাকে
মারেন।পিয়ারুন বেগমের ভাই মামলার স্বাক্ষী দানিছ মিয়া জানান, ঘটনাটি ৩ তারিখ সকাল ১০টায় ঘটেছে।কিন্তু মামলার এজহারে বিকাল ৩টায় ঘটনা ঘটেছে বলে উল্ল্যেখ করা হয়েছে।এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান তরফদার জানান, মামলাটি তদন্তনাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।