বিশ্বনাথে মৎস্য আড়ৎতে অগ্নিকান্ড : লুঠপাট, কোটি টাকা ক্ষতি দুই মামলা : গ্রেফতার ৩ : পুলিশ মোতায়েন

photoবিশ্বনাথ প্রতিনিধিঃ বিশ্বনাথে সোমবার দিবাগত রাতে দূর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে মাহতাবপুর (মান্নান-শামছুল গ্রুপের অংশ) মৎস্য আড়ৎ। এসময় আড়ৎ এর ৩৬টি দোকানে থাকা নগদ টাকা ও মাছ লুটপাঠ করা হয়। ফায়ার ব্রিগেডের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছার পূর্বে ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকার দাদন (অগ্রিম) ও বাকীর হিসাবের খাতা, আসবাবপত্রসহ সবকটি দোকান-কোঠা পুড়ে যায়। এঘটনায় মৎস্য আড়ৎত পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামছুল হক মোল্লা বাদি হয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুটি মামলা করেছেন। একটি দ্যূত বিচার আইনে ও অপরটি অগ্নিসংযোগ ও লুঠপাটের ঘটনায়। মামলা নং ৫ ও ৬। মামলায় হেলাল আহমদ ও আবুল খয়েল লালা মিয়া কে প্রধান আসামী করে ৩২ জনের নাম উল্লেখ ও ৩০-৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার ৩ আসামী কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন উপজেলার মির্জারগাঁও গ্রামের মৃত সমসের আলীর পুত্র : নুর আহমদ মংলা (৪২), একই গ্রামের মিজাজুর রহমানের পুত্র রাজন মিয়া (২০) ও গাজীপুর উপজেলার কালিগঞ্জ উপজেলার বেরুয়া গ্রামের রুশমত আলীর পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের গোলচন্দবাজারে পাশাপাশি থাকা দুটি মাছের আড়ৎ এর আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে মান্নান-শামছুল গ্রুপ ও লালা মিয়া গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। দুটি গ্রুপের লোকজনের মধ্যে একাধিকবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মামলা-মোকদ্দমা চলে আসছে।
সোমবার অগ্নিকান্ডের ঘটনার জন্য দুটি গ্রুপের লোকজন একে অপরকে দায়ী করছেন। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে অগ্নিকান্ডের পর থেকে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আবুল খয়ের লালা মিয়ার নেতৃত্বে রাতের আধাঁরে মৎস্য আড়ৎ পুড়ানো ও লুটপাঠ হয়েছে দাবি করে মান্নান-শামছুল গ্রুপের নেতৃতাধীন মৎস্য আড়ৎ এর ব্যবসায়ী নূর আহমদ বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে ও প্রায় আড়াই লাখ টাকার রুই মাছ লুট হয়েছে। একই আড়ত এর ব্যবসায়ী আতিক মিয়া বলেন, অগ্নিকান্ডের ফলে তাঁর ৬০ লাখ টাকার দাদন (অগ্রিম) খাতা, ৪৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র পুড়ে গেছে ও নগদ ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা লুট হয়েছে। জমির আহমদ বলেন, অগ্নিকান্ডের ফলে তাঁর ১৯ টাকার দাদন (অগ্রিম) ও ৩০ হাজার টাকার বাকীর খাতা, ৪৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র পুড়ে গেছে ও নগদ ১১ হাজার টাকা লুট হয়েছে।
এ ব্যাপারে আবুল খয়ের লালা মিয়া বলেন, আমাদের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে তার (মান্নান-শামছুল গ্রুপ) ব্যবসায় পরিচালনা করছে। আমি তো পাগল হয়নি যে আমি আমার সম্পদ পুড়াব। তাঁরা নিজেরাই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটিয়ে আমার উপর এর সব দায় চাপাতে চাচ্ছে। তাঁরা আমাকে ফাঁসাতে এমন ঘটনা ঘঠাতে পারে আভাস পেয়ে আমি বিশ্বনাথ থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরীও দায়ের করেছি। আগামী ১০ জানুয়ারী লামাকাজী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমি যাতে সভাপতি না হতে পারি সেজন্য অগ্নিকান্ডে ঘটনাটি ঘঠানো হয়েছে।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. রফিকুল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি দ্যূত বিচার আইনে ও অপরটি অগ্নিসংযোগ ও লুঠপাটের মামলা। মামলার পর ৩ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামী গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।