মিছিল-সমাবেশে সিলেটে অবরোধ ॥ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি-টিয়ারসেল

file (1)সুরমা টাইমস ডেস্কঃ উত্তপ্ত রাজনীতি। জনমনে আতঙ্ক। গোপনে ২০ দলের মিছিল-সমাবেশ আর বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধের প্রথম দিন সিলেটে অতিবাহিত হয়েছে। মিছিল-সমাবেশ করেছে বিএনপি, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবকদল ও জামায়াত-শিবির। তবে তা দীর্ঘ সময় ছিলনা। অনেকটাই গোপনে। পুলিশ যেখানে মিছিল-সমাবেশ খবর পেয়েছে, সেখানেই অবস্থান নিয়েছে। অবরোধ চলাকালে সিলেট থেকে দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যায়নি। দু’একটি লোকাল বাস নগরীর কদমতলী থেকে ছাড়তে দেখা গেছে। আর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে অন্যদিনের তুলনায় কদমতলী ও রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের উপস্থিতি ছিল নগন্য।
সকালে অবরোধ চলাকালে নগরীর সোবহানীঘাট এলাকায় মিছিল করেছে মহানগর বিএনপি। এছাড়া দক্ষিণ সুরমায় উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে একটি মিছিল বের হয়। সকাল ৮টার দিকে। সকাল সোয়া ৮টার দিকে দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্ট থেকে মিছিল বের করেন স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। মিছিলটি কিনব্রিজ হয়ে রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে আবারও বাবনা পয়েন্টে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় পুলিশ এগিয়ে আসলে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান।
১০টার দিকে তেতলীতে বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও ছাত্রদল মিছিল করার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অবরোধকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ২৪ রাউন্ড গুলি এবং ৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পরে বিএনপি-ছাত্রদল ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়।
নগরীর লামাবাজারে ছাত্রদল-শিবিরের মিছিলে ধাওয়া দেয় ছাত্রলীগ। ১টা ৪০ মিনিটের দিকে অবরোধের সমর্থনে যৌথভাবে ঝটিকা মিছিল বের করে ছাত্রদল ও শিবির। এসময় মদন মোহন কলেজে অবস্থান করা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া দেন। ধাওয়া খেয়ে ছাত্রদল-শিবির নেতাকর্মীদের মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে লামাবাজার ফাঁড়ি পুলিশ। তবে তারা এসে ছাত্রদল-শিবির নেতাকর্মীদের না পাওয়ায় কাউকে আটক করতে পারেনি।
এছাড়া, অবরোধে সব ধরনের নাশকতা এড়াতে নগরীতে আইনশৃঙ্খলাবানিহীর সতর্ক অবস্থান রয়েছে। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। বিভিন্ন পয়েন্টে সিএনজি অটোরিকশা ও মোটর সাইকেল আরোহীদের থামিয়ে পুলিশ তল্লাশীও করতে দেখা গেছে।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল বলেন, চন্ডিপুলে বিএনপি জামায়াত-শিবির মিছিল নিয়ে বেরুলেও পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় অবরোধ কারীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের চেষ্টা করে। পরে ২৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৫ রাউন্ড রিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। এ ঘটনায় কোনো আটক নেই জানিয়ে তিনি বলেন মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। রাতেই মামলা হওয়ার কথা রয়েছে। মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রহমত উল্লাহ সবুজ সিলেটকে জানান, পুলিশ নাশকতা এড়াতে সতর্কাবস্তায় রয়েছে। নগরীতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যেই নাশকতায় জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যাবে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।