সরকারি যন্ত্র ব্যর্থ, জিহাদকে উদ্ধার করল গাড়ি মেকানিক
বন্ধ করে দেয়া হলো সেই মৃত্যুকূপটি
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান শেষ। শিশু জিহাদকে পাওয়া যা্য়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আলী আহমেদ খান সংবাদ সম্মেলন এমন ঘোষণা দিলেন। এরই মধ্যে খবর এলো শিশু জিহাদকে উদ্ধার করা হল।
শনিবার স্থানীয় ফারুকসহ কয়েকজন গাড়ি মেকানিক তাদের তৈরিকৃত একটি ‘ক্যাচার’ দিয়ে জিহাদকে টেনে তোলেন। তবে জিহাদ ততোক্ষণে বেঁচে নেই। উদ্ধার হওয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
শনিবার পৌনে তিনটার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে এর আগে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। গাড়ি মেকানিক ফারুক হোসেনের সঙ্গে ওই এলাকার আরো কয়েকজন মেকানিক একত্রিত হয়ে এই ক্যাচারটি তৈরি করেন। জিহাদকে প্রায় ৬০০ ফুট নিচ থেকে ওই যন্ত্রটি দিয়ে টেনে তোলা হয়েছে।
এই অভিযানে আরো অংশ নিয়েছেন, গাড়ির মেকানিক মুরাদ এবং আনোয়ার। ক্যাচারটি লোহার রড এবং জাল দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।
অবশ্য অবশেষে বন্ধ করে দেয়া হইয়েছে রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেল কলোনির পরিত্যক্ত সেই গভীর নলকূপটি যার পাইপের ভিতরে পড়ে মারা যায় শিশু জিহাদ। শনিবার বেলা ৩টার দিকে জিহাদকে কয়েকশ ফুট দীর্ঘ ওই পাইপের ভেতর থেকে তুলে আনার পর ঝালাই করে এর ১৪ ইঞ্চি ব্যাসের মুখ স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রেলওয়ে এই পাম্পটি বসালেও পানি না ওঠায় পাশেই আরেকটি গভীর নলকূপ বসানোর কাজ চালানো হয়। কিন্তু আগের মুখটি খোলা ছিল, যেখানে শুক্রবার বিকালে পড়ে যায় চার বছরের শিশু জিহাদ। রেলওয়ের মহাপরিচালক তফাজ্জল হোসেন বলেছিলেন, সেখানে একটি নতুন ডিপ টিউবওয়েল করা হচ্ছিল। কিন্তু পুরনো ডিপ টিউবওয়েলের মুখ বন্ধ না করেই তারা কাজ করছিল। অথচ এ ধরনের কাজ করার সময় পরিত্যক্ত নলকূপের মুখ ঝালাই করে বন্ধ করার নিয়ম রয়েছে।
গভীর নলকূপ থেকে জিহাদকে উদ্ধারের পর ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা ওই এলাকায় রেলের জমিতে স্থাপিত বিভিন্ন দোকানপাট এবং ওয়াসার অস্থায়ী স্থাপনা ভাংচুর করে। পরিত্যক্ত ওই গভীর নলকূপের পাইপে জিহাদের পড়ে যাওয়ার ঘটনায় রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমকে শুক্রবারই বরখাস্ত করা হয়।তিনি ওই প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। এছাড়া কালো তালিকাভুক্ত করা হয় নতুন গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস আর হাউসকে।
জিহাদ ওই কূপ দিয়ে পড়ে যাওয়ার ২৩ ঘণ্টা পরেও তার অবস্থান নিশ্চিত হতে না পেরে শনিবার দুপুরে আড়াইটার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে ফায়ার সার্ভিস। তার কয়েক মিনিটের মধ্যে স্থানীয়দের চেষ্টায় পাইপের ভেতর থেকে তুলে আনা হয় জিহাদকে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।