স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পরও জয়ীকে উদ্ধার করতে না পারা রহস্যজনক
শিশু জয়ীকে উদ্ধারের দাবিতে কোর্ট পয়েন্টে মানববন্ধনে বক্তারা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পরও নিখোঁজের ১৭ মাস অতিবাহিত হলেও ৪ বছরের শিশু স্নিগ্ধা দেব জয়ীকে উদ্ধার করতে না পারা রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের সচেতন সমাজ। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সিলেট নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যেগে ও মানবাধিকার তথ্য পর্যবেক্ষণ সোসাইটির সহযোগিতায় আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, শিশু জয়ী অপহরণের ১৭ মাস অতিবাহিত হল। কিন্তু তাকে আজও উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। আসামিরা পুলিশ ও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তারপরও কেন জয়ীকে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছেনা। বক্তারা বলেন, একজন বাবা একজন মা ছাড়া কেউ বুঝতে পারবেনা সন্তান হরানোর যন্ত্রনা কি?। একটি সন্তান মায়ের নারী ছেড়া ধন। প্রত্যেকটি শিশু অবুঝ, প্রত্যেকটি শিশু আদরের, আর সেই শিশু যদি মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকে, কোন মা তা সহ্য করতে পারবেন?।
বক্তারা বলেন, সরকার কোথায় জঙ্গি আছে, কোথায় সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে সব খবর রাখে। কিন্তু একটি শিশু ১৭ মাস আগে অপহরণ হল তাকে কেন উদ্ধার করা সম্ভব হয়না। তারা জয়ীকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীসহ সিলেটের সকল এমপিদের সহযোগিতা কামনা করেন।
মানবন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যবসায়ী নেতা ও বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চেয়ারম্যান শেখ মো. মখন মিয়া বলেন, মায়ের বুক ফাটা অর্তনাদে আজ কোর্ট পয়েন্টের বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। জানান দিচ্ছে সন্তানের জন্য মায়ের কি মমতা। তিনি বলেন, সিলেটের সকল ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি একটাই, অপহরণ হওয়া শিশু জয়ীকে উদ্ধার করতে হবে। অন্যতায় আগামী ৬ জানুয়ারি সিলেটের সকল পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের নিয়ে জরুরী সভা করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে মানববন্ধনে সিলেট নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, অপহরণ হওয়া জয়ীকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে উদ্ধার করা না হলে ১৬ জানুয়ারি থেকে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের জন্য গণ অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে।
মানবাধিকার তথ্য পর্যবেক্ষণ সোসাইটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সিলেট বিভাগীয় সভাপতি হাবিবুর রহমান তাফাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সিলেট জেলা প্রেসকাবের সাধারণ সম্পাদক সংগ্রাম সিংহ, দৈনিক সিলেট সুরমার নির্বাহী সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী দিপু, মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আহমদ দৌলত, কাউন্সিলর দিবা রাণী দে বাবলী, সিলেট সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নজরুল ইসলাম শিপার, শিক্ষক বিধু ভূষণ সেন, নিখোঁজ শিশু জয়ীর বাবা সন্তুষ কুমার দেব, মা সর্বানী দেব তুলি, মানবাধিকার তথ্য পর্য়বেক্ষণ সোসাইটির সিলেট বিভাগীয় সহ-সভাপতি ডা. বাপ্পি চৌধুরী।
সিলেট নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক মো. ইসলাম আলীর পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, হিউম্যান রাইটস্ কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটি (এইচ আর সি বি এম) জেনারেল সেক্রেটারী রাকেশ রায়, মাইনটি ওয়াচ সিলেটের আহবায়ক মনিন্দ্র রঞ্জন দে, খ্রিষ্টান এসোসিয়েশন সিলেটের সাধারন সম্পাদক পাষ্টার হান্নান তালুকদার, সাংবাদিক রঞ্জিত কুমার সিংহ, হাবিবুর রহমান হৃদয়, ফখরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ আলী, জাতীয় সমাজ তান্ত্রীকদলের সিলেট জেলার সভানেত্রী সপ্না আক্তার, সিলেট নাগরীক অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শাহজাহান চৌধুরী, সদস্য সচিব ফারুক আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা মো. পারভেজ খান, নূরনী সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভনেত্রী ফাতেমা জান্নাত, সোনার বাংলা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভানেত্রী রাহেলা আক্তার রাণী জালালাবাদ নারী কল্যাণ সংস্থার সভানেত্রী স্বপ্না আক্তার, বাংলাদেশ হিউমেন সোসাইটির সভানেত্রী রোকশানা বেগম, এন ডি এফ সংস্থার নভানেত্রী শেফালী বেগম, ভূমিকা বিউটি পার্লারের পরিচালক ভূমিকা আক্তার, নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য মুক্তিযুদ্ধা আমির আলী, শ্রমীক লীগ নেতা জালাল মিয়া, শামিম আহমদ কবির প্রমুখ।