যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাংবাদিক সম্মেলন : রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের প্রত্যাহার দাবি
নিউইয়র্ক থেকে এনাঃ আমেরিকার তৃতীয় বৃহত্তম শহর শিকাগোর রজার্স পার্ক এলাকার নর্থ কার্ক স্ট্রিটের উপর শিকাগো সিটি কাউন্সিলের অনুমোদন ক্রমে গত সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের প্রতি সম্মান দেখিয়ে রাস্তার নামকরণ করা হয়। সিটি কাউন্সিলের ৫০ জন সদস্যের মধ্যে ৪৮ জন সদস্যই জিয়াউর রহমান ওয়ের পক্ষে ভোট প্রদান করেন। অন্য দুইজন সদস্য ঐ দিন অনুপস্থিত ছিলেন। সিটি কাউন্সিলে বিল পাস হবার পর গত সেপ্টেম্বর মাসে জিয়াউর রহমান ওয়ের নামফলক স্থাপন করা হয় অনুষ্ঠানিকভাবে। জিয়াউর রহমান ওয়ের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও শিকাগো আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ সমাবেশ করে। তারা শুধু প্রতিবাদ সমাবেশ করেই ক্ষান্ত হয়নি স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার মাধ্যমে শিকাগো সিটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। শিকাগোর আদালত শুনানী শেষে গত ১৭ ডিসেম্বর মামলাটি খারিজ করে দেয় এবং জিয়াউর রহমান ওয়ের পক্ষে রায় প্রদান করে।
এই রায় প্রদানের পর গত ২০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির একটি অংশ ( স¤্রাট- গিয়াস) বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট রেস্টুরেন্টে এক সাংবাদিক সম্মেলন এবং বিজয় উৎসবের আয়োজন করে। সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, যুব দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিন, ছাত্র দলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সহ সভাপতি হযরত আলী, বিএনপি নেতা ফারুক হোসেন মজুমদার, জাকির হাওলাদার, আবুল বাসার, সিরাজুল ইসলাম খান, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কামাল উদ্দিন, মোহাম্মদ জামাল প্রমুখ।
সাংবাদিক সম্মেলনে গিয়াস আহমেদ বলেন, শিকাগোর আদালত প্রমাণ করেছে জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক এবং একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক ও বিশ্ব মানের নেতা। তিনি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেছিলেন, বাংলাদেশে কোর্টের মাধ্যমে যেভাবে ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে, এখানেও তা সম্ভব হবে কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। তারা ভুলে গিয়েছিলো এখানে আওয়ামী লীগ নিয়োগকৃত দলীয় বিচারক নেই।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, জিয়া উদ্দিন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নয়, তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় রাষ্ট্রদূত। তিনি যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হতেন তাহলে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করতেন না। তিনি শুধু দলীয় নেতার ভূমিকা পালন করছেন। রাষ্ট্রদূতের কূটনৈতিক শিষ্টাচার ও নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছেন। তিনি শিকাগো সিটি কাউন্সিলের কাউন্সিম্যান জো মোরের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন এবং জো মোরকে জিয়াউর রহমান ওয়ে বন্ধ করতে বলেছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি জিয়াউর রহমানকে শেখ মুজিবের খুনি এবং গণতন্ত্র হত্যাকারী হিসাবে অভিহিত করে চিঠি লিখেছেন। আমরা তার এই ন্যাক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানাই এবং আমেরিকা থেকে তার প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জিয়াউদ্দিন কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন করেছে এবং রাষ্ট্রদূত নয় দলীয় নেতার প্রমাণ দিয়েছেন। আমরা তার দলীয় কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টকে চিঠি দেবো এবং দাবি জানাই তাকে যেন ওয়াশিংটন থেকে প্রত্যাহার করা হয়। কারণ রাষ্ট্রদূত হিসাবে দায়িত্ব পালন করার সমস্ত অধিকার তিনি হারিয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলন শেষে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতৃবৃন্দ বিজয়ের উল্লাসে মিষ্টি বিতরণ করে।