এই কলেজের সাথে আমার সম্পর্ক পারিবারিক
সিলেট মহিলা কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবে অর্থমন্ত্রী
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, আজ আমি নিজেকে ঠিক অর্থমন্ত্রী মনে করছিনা। আজ আমি এই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী হিসেবে উপস্থিত হইনি। আমি আজ এসেছি একটি প্রতিষ্ঠানে। যার সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। এই প্রতিষ্ঠানে আমার আব্বা-আম্মা গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন এবং আমার দুই বোন ওই কলেজের ছাত্রী ছিলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার প্রগতিশীল সরকার। নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করছেন। প্রতিবছর মহিলাদের উন্নয়নের জন্য বাজেটে ১শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত একবারও তা পুরোপুরি ব্যবহার হয়নি। এ বছরে সবচেয়ে বেশি ৬৫ কোটি টাকা ব্যবহার হয়েছে। তা পুরোপুরি হবে কি না আমি এখনো নিশ্চিত নই। তাই নারীদের কোন ধরণের দ্বিধাবোধ ছাড়া সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
সরকার এতে সহযোগিতা করবে। কারণ, সরকার নারী পুরুষের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে সবসময় প্রস্তুত। তিনি বলেন, মাত্র ৩০ বছরে ৭ শতাংশ থেকে দেশে নারী কর্মজীবি মানুষের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশে। এটি নারীর ক্ষমতায়। অর্থমন্ত্রী গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট সরকারী মহিলা কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আজকের উপস্থিতি প্রমান করছে বাংলাদেশের নারীরা আজ কোথায় অবস্থান করছে। যেটা বলা হয়েছে তৃর্ণমূল থেকে হিমালয়ের শিখরে, নারীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত আছে। নারীর অগ্রযাত্রায় সরকার যা করছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। তিনি বলেন, আমরা সারাক্ষণ মন খারাপ করি ঝড়-বন্যা, খুন-খারাপি নিয়ে। কখনও কি মনে করি ১৯৩৯ সালে সিলেটের বুকে এরকম একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কেন গরব করে বলতে পারিনা, বর্তমান বাংলাদেশ যে ভূখন্ডে দাড়িয়ে আছে, সেই ভূখন্ডের প্রথম মহিলা কলেজ সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলেজের প্রক্তন ছাত্রী বাংলাদেশ গার্ল গাইডস এসোসিয়েশনের প্রাক্তন জাতীয় কমিশনার জেবা রশীদ চৌধুরী বলেন, হট্টগুলের মধ্যদিয়ে অস্থিরতার, মধ্যদিয়ে যে সব কিছু করতে হয় তা নয়, আজকের প্রজন্ম যারা তারা একটু লক্ষ্য করুন, কলেজটা ওঠে গেল, নিশ্চই তার পিছনে কারণ ছিল। তাহলো স্থানীয়দের সহযোগিতা। কারণ পড়ালেখা করতে হলে আগে ঢাকায় যেতে হত, করাচিতে যেতে হত। তাতো ছেলেদের পক্ষেই সম্ভব ছিলনা, আর মেয়েদের পক্ষেত সম্পূর্ণ অসম্ভব ছিল। এই যে চিন্তা ভাবনা থেকে ওই কলেজের জন্য যারা নিরবে একটা সংগ্রাম করলেন, তাদের আহবানে সবাই সহযোগিতা করলেন। কলেজটা দাড়িয়ে গেল। যাদের কারণে সফলতা আসলো। আমি তাদের শ্রদ্ধ্যাবরে স্মরন করছি। তিনি বলেন, আমি যখন বড় হয়েছি, মুহিত সাহেব যখন বড় হয়েছেন, তখন মুহিত সাবদের সব পথ খোলা ছিল, আর আমাদের সব পথ বন্ধ ছিল। আমাদের সব কিছুতে বারন ছিল। আজ নতুন প্রজন্মের জন্যতো আকাশ উমোক্ত। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাও। আমরা যখন শুরু করেছি তখন ৮ জন ছিলাম। এখনতো মহিলা কলেজে ৮০০০ শিক্ষার্থী পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে। এটি অনেক বড় কথা।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. নজরুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, প্রাইভেটাইজেশন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ইনাম আহমদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, কেয়া চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুল মতিন, ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী অধ্যাপক শামীমা চৌধুরী, সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান প্রমুখ।