স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল পদ মর্যাদাসহ বেতন স্কেল প্রদানের দাবিতে অর্থমন্ত্রীকে স্মারকলিপি
স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদাসহ বেতন স্কেল প্রদানের দাবিতে অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগ।
গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীকে সিলেটস্থ নিজস্ব বাসভবনে এই স্মারকলিপি দেয়া হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ৪ দশকের অধিক সময় ধরে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। স্বাস্থ্য সহকারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ আজ পোলিওমুক্ত। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ১২ টি দেশের মধ্যে প্রথম। বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে ২ শতাংশ মানুষ ইপিআইর আওতাধীন ছিল। আজ এটি ৮২ শতাংশে পৌঁছেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশে হাম-রুবেলা কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এসব অবদান স্বাস্থ্য সহকারীদের।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, স্বাস্থ্য সহকারীরা স্বাধীনতার চার দশকের অধিক সময় ধরে তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের সাফল্য গাণিতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ আয়ুষ্কাল বাংলাদেশের। সর্বনি¤œ প্রজনন হার ও শিশু মৃত্যুর হার বাংলাদেশের। দেশে পাঁচ বছর বয়সের শিশু ও নবজাতকের মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। বাংলাদেশে শিশু স্বাস্থ্যের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় পর্যায়ে যতগুলো পুরস্কার এসেছে সবগুলোই ইপিআই কর্মসূচিতে অবদানের জন্য। কমিউনিটি ক্লিনিক চালুর ব্যাপারে সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় জনগণকে বিনামূল্যে জমি দানে উদ্বুদ্ধকরণসহ অব্যাহতভাবে সেবাদান করে কমিউনিটি ক্লিনিককে গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় সহজলভ্য সেবার একটি জনপ্রিয় মডেল কর্মসূচীতে পরিণত করেছেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, সীমিত জনবল ও নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে তারা মরণব্যাধি গুটিবসন্ত, ম্যালেরিয়ার মহামারি ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে, পয়োঃনিষ্কাশন, দেশের গ্রামীণ আপামর জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় সচেতনতা সৃষ্টিসহ বিশেষজ্ঞ টিকাদান, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে সাফল্যের দাবিদার স্বাস্থ্য সহকারীরা। প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা গণমুখি করার লক্ষ্যে তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল মর্যাদা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন দাবিটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্বাস্থ্য সহকারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। তাই অবিলম্বে বেতন স্কেলসহ টেকনিক্যাল মর্যাদা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। অর্থমন্ত্রী স্মারকলিপি গ্রহণ করে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবেন বলে জানান।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের সিলেট বিভাগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আনসারী, সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দেব ভৌমিক, যুগ্ম সম্পাদক আমীরুল ইসলাম দিলসাদ, মহিলা সম্পাদক হেলেন রায়, মিডিয়া ও যোগাযোগ শরফ উদ্দিন, সিলেট জেলা শাখার সহ সভাপতি মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক নিতাই চন্দ্র পাল, যুগ্ম সম্পাদক নিউটন ধর, আব্দুল মুমিত, সমাজসেবা সম্পাদক জসীম উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজলো শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম, আফাজুর রহমান, দক্ষিণ সুরমা নেতা সৈয়দ মুশাহিদুর রহমান, সদর উপজেলা নেতা বাসন্তী ধর প্রমুখ। -বিজ্ঞপ্তি