রাজনগরে যাত্রা প্যান্ডেল জ্বালানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
হামলা-মামলা হলে ৭২ ঘন্টা হরতালের হুসিয়ারি
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় একটি যাত্রা গানের আসর জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাত্রা ও জুয়ার আসর বন্ধের দাবীতে উপজেলার হাজার-হাজার ধর্ম্প্রান মানুসের সরলতার সুযোগে এ নিয়ে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করে মুলত বিগত ইউনিয়ন নির্বাচনে পরাজিত একজন প্রার্থী তার রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান। এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে গত ১৪ নভেম্বর থেকে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া যাত্রার নামে নগ্ন নৃত্য ও রমরমা জুয়ার আসর বসায়। এ নিয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন এলাকার মুসল্লিরা। তারা বিভিন্ন সময় এসব বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার,উপজেলা নির্বাহী অফিসার,সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বরাবরে স্বারকলিপি প্রদান করে। সর্বশেষ রাজনগর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আহমদের নেতৃত্বে সিলেট রেঞ্জের ডি,আই,জি বরাবরে ও এসব বন্ধের দাবীতে স্বারকলিপি প্রদান করা হয়। কিন্তু কিছুতেই তা বন্ধ হয়নি। ফতেপুর ইউপি অফিস প্রাঙ্ঘন সহ আব্দুল্লাপুর বাজারে এসবের প্রতিবাদে পরপর দুদিন প্রতিবাদ সমাবেশ করে আয়োজক কমিঠিকে এসব বন্ধের আল্টিমেটাম দেয়া হয়।তাতে ও কাজ হয়নি। পরে শনিবার সকাল ১০ টায় মাইকিং করে ২৫ গ্রামের হাজার-হাজার মানুস যাত্রা প্যান্ডেল অভিমুখে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে যাত্রা শুরু করে। আয়োজক কমিঠি খবর পেয়ে প্যান্ডেল থেকে নৃত্য শিল্পি সহ তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়া শুরু করে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। বিক্ষুব্দ জনতা প্যান্ডেলে গিয়ে সমস্ত মালামাল পুঁড়িয়ে দেয়। প্যান্ডেল পুঁড়িয়ে ফেরার পথে যাত্রা কমিঠির সভাপতি সুফিয়ান মিয়ার বাড়িতে একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেয় বিক্ষুব্দ জনতা। খবর পেয়ে রাজনগর পুলিশ একজন নির্বাহি ম্যাজিষ্টেটের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এদিকে যাত্রা প্যান্ডেলে যাওয়া-আসার পথে আব্দুল্লাপুর গ্রামে ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান লয়লুছের বাড়ির সামনে প্রতিরোধ কমিঠির মাইক থেকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অশ্লীল শ্লোগান দেয়া হয় বলে এলাকাবাসী জানায়। যাত্রা প্রতিরোধ কমিঠির অন্যতম নেতা আশরাফুজ্জামান নোমান, তাজুল ইসলাম, মাওঃ আব্দুর রব সহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান, চেয়ারম্যান মতিউর রহমান লয়লুছের নির্দেশে ইসলামপুরে যাত্রা ও জুয়ার আসর চলে আসছিল।তাই ধর্মপ্রান মুসল্লিরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, রবিবার মৌলভীবাজার সদরে যাত্রা প্রতিরোধ কমিঠির একজন সদস্যকে আয়োজক কমিঠির সদস্যরা আটকে রেখে গাড়ী পুঁড়ানোর ক্ষতিপোরণ দাবী করেছে। খবর পেয়ে তারা সন্ধ্যা ৭ টায় মোকামবাজারে মিছিল করে ইউপি অফিস প্রাঙ্ঘনে এক প্রতিবাদ সভা করে, এরপর যাত্রা প্রতিরোধ কমিঠির কোন সদস্যর উপর হামলা অথবা মামলা হলে ৭২ ঘন্টার লাগাতার হরতাল পালনের ঘোষনা দেয়া হয়। রাত ১০ টায় এ প্রতিবেদক ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান লয়লুছের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি যাত্রা গানের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই অবস্থান নিয়েছি। এসব বন্ধের জন্য বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছি।কিন্তু বিগত ইউপি নির্বাচনে তার সাথে ভোট যুদ্ধে পরাজিত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী আগামী নির্বাচনে তার নির্বাচনী ফায়দা হাসিলের উদ্দ্যেশ্যে সাধারণ মানুসের কাছে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কুৎসা রটনা করে সাধারন মানুসজনকে তার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।