সিলেট মহানগর বিএনপি’র কমিটি : ফিরছেন বঞ্চিতরা
রাজনৈতিক প্রতিবেদকঃ প্রায় ৪ বছর আগের গঠিত সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটি থেকে বঞ্চিত নেতারা শিগগিরি মহানগর বিএনপির নতুন কমিটিতে ফিরছেন । সংগঠন সুত্রে জানা যায়, প্রায় ৪ বছর আগের গঠন করা ২২ সদস্যের মহানগর কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সাংগঠনিক ব্যার্থতার কারণে সাবেক এই কমিটির ২২ জনের মধ্যে থেকে ১৫ জনকে বাদ দিয়ে এই নতুন কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার টেবিলে ডা.শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে আহবায়ক করে সিলেট মহানগর বিএনিপর একটি কমিটির তালিকা চূড়ান্ত করে রাখা হয়েছে । দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সম্ভাব্য কমিটির বিষয়টি অবগত রয়েছেন। আপাতত ১১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির কথা ভাবা হচ্ছে। পরে সময় সুযোগ বুঝে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হবে। আগামী শুক্রবারে এই নতুন কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে একটি সুত্রে জানা গেছে।
১১ সদস্যের এই নতুন কমিটিতে সিলেট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত বিএনপি নেতা কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী অনুসারী ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরীকে আহ্বায়ক করা হচ্ছে । কমিটিতে তার আসার সম্ভবনা প্রায় সুনিচ্ছিত। তবে তার আসার সম্ভবনা শুনে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গা ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। নেতা কর্মীরা মনে করছেন ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী দিয়ে কমিটি গঠন করা হলে সিলেট মহানগর বিএনপি তার হারানো প্রাণ ফিরে পাবে। তাছাড়া মহানগর বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দস চৌধুরী হামজা বলেন, আমরা শুনতেছে ডা.শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী দিয়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি আসছে। আর তা যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে তৃনমুল বিএনপির আশা আঙখঙ্কার প্রতিফলন ঘটবে।
এদিকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও সাবেক এমপি খন্দকার আব্দুল মালেকের পুত্র বিএনপি নেতা শিল্পপতি খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির এই নতুন কমিটিতে আহবায়ক হয়ে আসার একটি গুঞ্জন থাকলেও কিন্তু তা আসার সম্ভবনা আর নেই বলে একটি সুত্রে জানা যায়। কেননা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রে। তিনি বিগত ৫ ই জানুয়ারী সারা দেশের বিএনপি পন্থী মেয়র রাজপথে নেমে আসলে তিনি আসেননি। উল্টো তিনি আওয়ামীলীগের মন্ত্রীর গাড়ি চড়ে নগরীতে বেরিয়েছেন। আর তার এসব কর্মকান্ড নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও সিলেট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত বিএনপি নেতা কেন্দ্রীয় ভাইচ চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ভালো চোখে দেখেননি। এমনকি এই বিষয় নিয়ে স্বয়ং বিএনপির সিনিয়র ভাইচ চেয়ারম্যান তারেক রহমান ক্ষোব্দ। এদিকে শিল্পপতি খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকায় দলের এই ক্লান্তীকালে তিনি আহবায়ক পদে থাকছেন।
তাছাড়া মহানগর বিএনপির ১১ সদস্যর এই কমিটির সদস্য সচিব পদ নিয়ে চলছে জোর লবিং। তবে এই লবিংয়ে বতর্মান মহানগর বিএনপি কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি বদরুজ্জামান সেলিম ও মহানগর বিএনপির রাজনীতিতে আগ্রহী বতর্মান জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এড.শামসুজ্জামান জামান এগিয়ে রয়েছেন। তবে লন্ডন ও দেশে তদবীর চালিয়ে বর্তমানে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বদরুজ্জামান সেলিম। এদিকে জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক পদে থাকায় এড.শামসুজ্জামান জামান এই পদ থেকে বাদ পড়তে পারেন। কিন্তু সরর্শেষে এই কমিটিতে সদস্য সচিব পদ থাকছে কি না তা জানা যায়নি। তবে সিলেট জেলা বিএনপির আদলে এই কমিটি হতে পারে বলে একটি সুত্রে জানা যায়। নতুন এই কমিটিতে আহবায়ক ডা.শাহরিয়ার হোসেন ছাড়া যারা থাকছেন তারা হলেন নাসিম হোসেইন, অধ্যাপক মকসুদ আলী, বদরুজ্জামান সেলিম, তারেক আহমদ চৌধুরী, আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকি, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব, কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, হুমায়ুন কবির শাহিন, এমদাদ হোসেন ও সালেহ আহমদ খসরু। কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সদ্য বিদায়ী সভাপতি এমএ হক ও খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরকে। এছাড়া কমিটিতে বিদ্রোহী হওয়ার আশংকা শেষ মুহূর্তে এ কমিটি অদল-বদল হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
নতুন এই কমিটির ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক এর কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে মহানগর বিএনপির সভাপতি পদের দায়িত্ব পালন করেছি। তাই মহানগর বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টির লক্ষ্যে আমাকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের জন্য দলের মহাসচিবের কাছে প্রস্তাব করেছি।