দাফনের সময় জেগে উঠলেন, অবশেষে মৃত্যু!
কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতাঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার শুকিয়া গ্রামে অবিশ্বাস্য একটি ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন এক ব্যক্তিকে। কান্নাকাটি আর আহাজারির মধ্য দিয়ে গোসল, কাফন ও জানাজা শেষে চলে দাফনের প্রস্তুতি। ঠিক এমন সময় হঠাৎ নড়ে উঠলেন মাসুম মিয়া (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ অক্টোবর মাসুম মোটরসাইকেলে করে পাকুন্দিয়া থেকে কিশোরগঞ্জে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি গাছে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন তিনি। প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে তাৎক্ষণিক ঢাকায় রেফার্ড করেন। মাসুমকে ঢাকা মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ১৪ দিন রাখার পর অবস্থার অবনতি দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে রিলিজ করে দেয়। পরিবারের লোকজন তাকে বাঁচানোর কোনো আশা নেই জেনে রবিবার বিকেলে নিজ বাড়ি পাকুন্দিয়ায় ফিরিয়ে আনে।
এ সময় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় আবার পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শহীদুল ইসলাম রোগীকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর সংবাদে স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। পরে বাড়িতে নিয়ে লাশের গোসল, কাফন ও জানাজা শেষে দাফনের জন্য কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। দাফন করানোর সময় হঠাৎ লাশ নড়ে ওঠে। এসময় লাশকে নড়তে দেখে ভয়ে চিৎকার দিয়ে ওঠেন অনেকে। এ সময় নাসিম মিয়া নামে এক ব্যক্তি লাশের মুখ খুলে দেখেন সত্যিই মাসুম জীবিত। এমনকি তিনি পানির জন্য হাহাকার করছেন। লোকজন তাড়াতাড়ি করে তাকে পানি পান করতে দেয়।
এরপর বাড়িতে নিয়ে গেলে আশপাশের কয়েক ইউনিয়নের হাজারও মানুষ তাকে দেখতে রবিবার মধ্যরাত ও সোমবার বিকেল পর্যন্ত ভিড় জমায়। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভাল থাকার পর হঠাৎ সন্ধ্যায় মাসুমের অবস্থার অবনতি হয়। এরপর নিজ বাড়িতেই মারা যান তিনি।
মাসুমের বাবা আমীর হোসেন জানান, রবিবার রাত ও সোমবার সারাদিন মাসুম খাওয়া-দাওয়া করে। সবার সঙ্গে কম-বেশি কথাও বলেছে। কিন্তু সন্ধ্যায় বুকে ব্যথা বলে চিৎকারের কিছুক্ষণ পর সে মারা যায়।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শহীদুল ইসলামের সাথে যেগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও, তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।