তাহিরপুর সীমান্তে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী এক চাঁদাবাজ আটক
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় বর্ডারগার্ড (বিজিবি)’র সোর্স পরিচয়ধারী এক চাঁদাবাজকে বিজিবি আটকের পর থানা পুলিশে সোপর্দ করেছে। আটককৃত’র নাম, আবুল কালাম (৪২)। সে উপজেলার উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লালঘাট গ্রামের মৃত ভানু মিয়ার পুত্র। কালাম নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংচাতি ইউনিয়েনের পাঁচগাঁও গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা হলেও বিয়ের সুবাধে গত ৬ বছর ধরে তাহিরপুরের লালঘাট গ্রামে থেকে প্রথমে কাঠ চোরাচালানের ব্যবসা শুরু করে। পরে চোরাচালান ব্যবসার পাশাপাশী র্দ্বীঘ দিন ধরেই স্থানীয় বিজিবির সোর্স পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলো। কালামের এসব অপকর্মের পেছনে ও সীমান্তে বিজিবির টহল দলের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে চোরাচালানীদের মুঠোফোনে তথ্য দিয়ে নির্ব্রিগ্নে চোরাচালান এবং চাঁদাবাজির মত অপকর্ম চালিয়ে যেতে সীমান্তের আরো বেশ ক’জনের বিরুদ্ধে তাকে সহায়তা করার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় বিজিবি ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ৮-বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের বালিয়াঘাট বিওপির বিজিবির সোর্স (লাইনম্যান) পরিচয়ধারী বৃহস্পতিবার রাতে ধৃত আবুল কালাম সীমান্তবর্তী লালঘাট ও লাকমা এলাকায় দ্বীর্ঘ দিন ধরেই সীমান্তের ওপার থেকে নিয়ে আসা মদ,গাঁজা, লাকড়ি, গাছের ছাল,কয়লা থেকে চোরাচালনীদের সঙ্গে গোপন আতাত করে চাঁদা আদায় করে আসছিলো। ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের বিভিন্ন কয়লা কোয়ারীতে অবৈধভাবে এপার ওপার যাতায়াতকারী শ্রমিকদের সহায়তা করে তাদের নিকট থেকে মাথাপিছু চাঁদা আদায় করত। পাশাপাশী লালঘাট ও লাকমা এলাকায় পাহাড়ি ছড়া দিয়ে ভেসে আসা বাংলা কয়লা কুড়িয়ে জীবিকা নির্বাহে কাজে জড়িত নিরীহ লোকজনের নিকট থেকেও বিজিবির সোর্স পরিচয়ে ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করত। এসব বিষয়ে গ্রামের কেউ প্রতিবাদ করলেই বিজিবির ভয় দেখিয়ে মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিত। লালঘাট গ্রামের বেশ কিছু লোক গত কয়েকদিন পুর্বে এসব বিষয় সুনামগঞ্জ ৮-বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়ন বিজিবির টেকেরঘাট কম্পানী কমান্ডার সুবেদার জামিল রওশনের মাধ্যমে ব্যাটালিয়ন অধিনায়ককে অবহিত করেন। এরপরই ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক এসব বিষয় জানতে পেরে এর সত্যতা নিশ্চিত হয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় বিজিবিকে নির্দেশ প্রদান করেন। এসব ঘটনা জানাজানি হলে কালাম কিছু দিন আত্বগোপন করে থাকে। পরে লালঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাবার পথে বিজিবির টহল দল তাকে বৃহস্পতিবার রাতে আটক টেকেরঘাট বিওপিতে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতেই থানায় সোপর্দ করে।
ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে.কর্ণেল গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার থানায় কালামের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা দায়েরের বিষয়টি শুক্রবার নিশ্চিত করে বললেন, সুনামগঞ্জ সীমান্তের যে কোন এলাকায় যদি কেউ এ ধরণের চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকে কিংবা বিজিবির সোর্স পরিচয়ে চাঁদাবাজি করে তাদের বিষয়ে ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে বিজিবির দায়িত্বশীল পর্যায়ে অবহিত করা হলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।