তাহিরপুরে প্রাথমিক শিার হযবরল অবস্থা, পালাক্রমে চলছে পাঠদান
কামাল হোসেন,তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ)
তাহিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশা,পালাক্রমে চলছে পাঠদান কার্যক্রম, অধিকাংশ বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যায় বিরতির সময়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাওর বেষ্টিত উপজেলা তাহিরপুরে ৭ টি ইউনিয়নে ২৪৯ টি গ্রামের মধ্যে ১৩১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। আর এতে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০ হাজার শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষায় পাঠদান নিচ্ছে। ১৩১ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে হাওরাঞ্চলে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সু কৌশলে পালাক্রমে চালিয়ে নিচ্ছেন বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম। কামারকান্দি, গাজীপুর, আনন্দ নগর,সাহেবনগর, পৈন্ডুপ, শরীফপুর ,মন্দিয়াতা,পাতারগাঁও ,সোনাপুর কামনা পাড়া, ইন্দ্রপুর, জয়পুর, মনভুজ, সুলেমানপুর, রাচিনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অর্ধশতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে পালাক্রমে পাঠদান চলে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে। অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ছাত্র অভিভাবকের। এর মধ্যে শরীফপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দিলশাদ মিয়া বছরের পর বছর বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন বলেও জানা যায়। তাছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয় গুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থার অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিতিতিতে যেমন দেরী করছেন তেমনি বিরতির সময় পরিবহনের (নৌ চলাচল)অজুহাত দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে চলে যান। সে সময় স্থানীয় শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে বাকি সময়টুকু শিক্ষার্থীদের হৈ-হোল্লর থামিয়ে সময় কাটান। অপরদিকে কিছু শিক্ষক অফিসে কাজের দোহাই দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের হন এবং শিক্ষা অফিসে হাজিরা দিয়ে বাকি সময়টুকু আর বিদ্যালয় মূখী হন না।
সাহেব নগর গ্রামের ছাত্র অভিভাবক ও বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল ইসলাম সহ গ্রামের একাধিক ছাত্র অভিভাবক বলেন,শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়ে আমরা কিছুদিন পূর্বে তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সহকারী শিক্ষক জানান,আমরা বিদ্যালয় ছুটি দেই ৪ টা ১৫ মিনিটে কিন্তু ১০ টার পূর্বে কোন শিক্ষকই বিদ্যালয়ে পৌঁছতে পারি না। মন্দিয়াতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাঞ্জু মিয়া বলেন, গ্রামের শিক্ষক হওয়ায় নিয়মিত পাঠদান আমাকেই করতে হয়, অন্যরা নিয়মিত উপস্থিত হতে পারেন না।
দক্ষিন শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্বজিত সরকার বলেন, এক সময় পালাক্রমে বিদ্যালয় চালানোর প্রচলন ছিল এখন একটু কমেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত হওয়ার কারণে নিদৃষ্ট সময়ের পূর্বে কিছু বিদ্যালয় ছুটি হয়ে যায়।
তাহিরপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বী বলেন, শিক্ষক অনুপস্থিতির হার অতীতের চাইতে এখন অনেকটা কমেছে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক খান বলেন, পলাক্রমে বিদ্যালয় চালানোর বিষয়টি আমার জানা নাই,তবে বিদ্যালয় গুলো ৪ টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত চালু থাকার কথা। কোন শিক্ষক চলে এসছে এরকম অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।