শাহী ঈদগাহে লাখো মানুষের ঈদ জামায়াত
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সাম্য এবং ভ্রাতৃত্বের জয়গান গেয়ে সিলেটের বৃহত্তম ঈদগাহ ময়দান শাহী ঈদগাহে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করলেন লক্ষাধিক মুসল্লী। সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হওয়া এই ঈদ জা’মাতে ঈদগাহ ময়দানে ছিল না তিল ধারণের ঠাঁই।
প্রায় সাড়ে ৫শ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে সকাল থেকেই আসতে শুরু করেন মুসল্লীরা। নামাজের পূর্বে ওয়াজ পেশ করেন বন্দর বাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোশতাক আহমদ খান। তিনি তার বক্তব্যে কোরবানির তাৎপর্য ও শিক্ষা উপস্থিত মুসল্লীদের কাছে তোলে ধরেন। পরে নামাজের ইমামতি করেন একই মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল করিম বিন মোশাহিদ। খুতবা শেষে মাওলানা মোশাহিদ দেশের উন্নতি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি কামনা ও ইহুদী এবং নাস্তিকদের হাত মুসলামনাদেরকে রক্ষা করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। তাছাড়া ক্ষনে ক্ষনে আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে মূখরিত হয়ে উঠে শাহী ঈদগাহসহ আশপাশ এলাকা।
তবে এবারের ঈদের জামাতে সিলেট শাহী ঈদগাহে অনুপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। দেশের বাইরে থাকায় তিনি অন্যান্যবারের মতো এবার সিলেট শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়তে পারেননি। তবে তার একটি শুভেচ্ছা বক্তব্য ঈদের নামাজের আগে পড়ে শোনানো হয়। এছাড়াও নামাজের আগে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এছাড়া সিলেট শাহী ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়কারীদের মধ্যে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবীন চৌধুরী, আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।
সোমবার ঈদ জা’মাতের নির্ধারিত সময় সাড়ে ৮টায় থাকলেও, তার আগেই সাতসকাল থেকেই মুসল্লীদের ঢল নামে শাহী ঈদগাহ মাঠে। সকাল সাড়ে ৮টা হওয়ার অনেক আগেই তাই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে যায় ঈদগাহ ময়দান। একপর্যায়ে মূল ঈদগাহ মাঠের বাইরেও অসংখ্য মুসল্লী ঈদ জা’মাত আদায় করেন।এদিকে সকাল থেকেই শাহী ঈদগাহ মাঠে ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে চলে বয়ান।
ঈদের জা’মাত শেষে আত্মসমর্পণের কন্ঠে, বিন¤্রচিত্তে গুণাহ মাফের জন্য এবং কোরবানি কবুলের জন্য আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা হয়। একইসাথে বাংলাদেশের উন্নতি, অগ্রগতি, সমৃদ্ধি কামনা, বিশ্বের মুসলমানদের জন্য সাহায্য কামনা কওে প্রার্থনা করা হয়। প্রার্থনার সময় পুরো ঈদগাহ ময়দানে কান্নার রোল ওঠে। প্রার্থনা শেষে ঈদগাহে কোলাকুলি করার ধুম পড়ে।
এদিকে ঈদের জা’মাতকে কেন্দ্র করে শাহী ঈদগাহ জুড়ে ছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ সদস্যদের সাথে সাথে গোয়েন্দারাও তৎপর ছিলেন ঈদগাহকে কেন্দ্র করে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়- নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাধারণ মুসল্লীদের সাথে মিশে গিয়ে কাজ করেছেন গোয়েন্দারা।

