বাংলাদেশ, ধর্মানুভুতি এবং একজন লতিফ সিদ্দিকী

মীর আব্দুল আলীম: বলতে গিয়ে একটু বেশিই বলে ফেলি আমরা। আ-কথন, কু-কথন, বাঁশ-কথন আর পাপ-কথন কোনটাই বাদ দিই না। আমজনতা ওসব নোংরা কথা বলে বলুক তাতে এসে যায় না, কিন্তু দেশের মন্ত্রী বাহাদুরেরা যখন ওসব বলেন তখন আর অবশিষ্ট কি থাকে? ইদানিং মন্ত্রীদের এ জাতিয় কথনের মাত্রা ছাড়িয়েছে। ক’দিন আগে সমাজ কল্যান মন্ত্রী মহসীন আলীর সাংবাদিকদের দেয়া বাঁশ-কথনের কথা ভুলে যায়নি দেশেবাসী। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী সিলেটে প্রকাশ্য মনেঞ্চ সাংবাদিকদের আক্রমণ করে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করেন এবং গাল দেন। তিনি বলেন- ‘সাংবাদিকরা টাকা খেয়ে আমার পা..(অকথ্য শব্দ) দিয়ে বাঁশ ঢুকাতে চায়। সাংবাদিকরা আমার বা..(অকথ্য শব্দ) ছিঁড়তে পারবে না।’ দু’দিন ধরে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর পাঁপ-কথন নিয়ে দেশে হৈ চৈই চলছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ(স.) এবং হজ্ব নিয়ে রিতিমত কটাক্ষ করেছেন মন্ত্রী। মন্ত্রীর কথায় ধর্মনুভুতিতে আঘাত করায় দেশে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের বন্দরে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কথাটা এতো তেঁতো, এতো ধাড়ালো যে কোন মুসলমান তা মেনে নিতে পারছে না। কীযে বিষণœ লাগছে তারাই জানে। মুসলমানদের সমস্ত চরাচরে যেন ঢেকে আছে বিষাদে। তিনি শুধু আমাদের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করেননি; বিদেশে আমাদের মাটি ও পতাকার ভাবমূর্তিই ভূলুণ্ঠিত করেছেন, পৃথিবীর ১৬০ কোটি মুসলমানের বিশ্বাসে আঘাত হেনেছেন। এই মন্ত্রী সারা পৃথিবীর সামনে মুসলিম বাংলাদেশের গৌরবের অতীতকে কলঙ্কিত করেছেন। হজের মৌসুমে হজ সম্পর্কে তার ঔদ্ধত্য, হজরত নবী করিম (সা.) সম্পর্কে তার ইতর অভিব্যক্তি এ দেশের ১৬ কোটি মানুষ কি মেনে নেবে?
অসভ্য জাতি স্বাধীনতার আলোয় সভ্য হয় কিন্তু চার দশকে আমরা কোথায় এসে পৌঁছলাম? কোথায় চলেছি আমরা? আলো থেকে অন্ধকারে! আজ কেন দেশের নীতিনির্ধারক মন্ত্রী এমপিরাও অশালীন, অভদ্র আচরণ, কু-বক্তব্য, মাস্তানী আর খিস্তি খিউড়ের উর্ধ্বে থাকতে পারছেন না? প্রকাশ্য মঞ্চে, জাতীয় সংসদ অভ্যন্তরে অশ্রাব্য ভাষার প্রয়াগ,গালাগালি, মারমুখী আচরণ আজ আমাদের দেখতে ও শুনতে হচ্ছে। বলছেন আবার ভুল বুঝে অনুতপ্তও হচ্ছেন না। লতিফ সিদ্দিকিও তাই করছেন। ‘আপনি আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করছেন না বা সেখান থেকে সরে আসছেন না’ বিবিসির এমন প্রশ্নে লতিফ সিদ্দিকী উল্টো দৃঢ়ভাবে বলেন- ‘প্রশ্নই ওঠে না। একমাত্র…এখানে একটা কথা আছে, আমার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমার নেতা যদি আমাকে আদেশ করেন যে-আপনি এটা প্রত্যাহার করেন। তাঁর সম্মানে আমি এটা প্রত্যাহার করতে পারি। তা ছাড়া কোনো কিছুতেই আমি প্রত্যাহার করব না। যেহেতুক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ফেলেছেন সেহেতু আমরা মনে করি প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে তাঁকে বিতর্কিত এ বক্তব্য প্রত্যাহারে নির্দেশ দিবেন।
সেদিন কি বিলেছিলেন লতিফ সিদ্দিকি? ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্কস্থ টাঙ্গাইলবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে লতিফ সিদ্দিকী পবিত্র হজ্ব, মহানবী হযরত মুহাম্মদ(স.) প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ও পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় প্রসঙ্গে আপত্তিকর বক্তব্য দেন। আর তাতেই সারা দেশে হৈ জৈ শুরু হয়ে যায়। মুসলিম উম্মাহর এই শ্রেষ্ঠ ও আবেগঘন ইবাদত সম্পর্কে কি বলেছেন অভাগা মন্ত্রী? মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী নাকি বলেছেন, ‘আমি জামায়াতে ইসলামীর বিরোধী। তবে এর চেয়েও বেশি বিরোধী হজ ও তবলিগ জামাতের। হজে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়! এবারও হজের জন্য ২০ লাখ মানুষ সৌদি আরব গেছে। তাদের কোনো কাজ নেই, কোনো প্রডাকশন নেই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা দিয়ে আসছে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আবদুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ চিন্তা করল, জাজিরাতুল আরবের লোকরা কীভাবে চলবে। তারা তো ছিল ডাকাত। তখন একটা ব্যবস্থা করল যে, আমার অনুসারীরা প্রতি বছর একবার একসঙ্গে মিলিত হবে। এর মধ্য দিয়ে একটা আয়-ইনকামের ব্যবস্থা হবে’। মন্ত্রী কি এমন কথা বলতে পারেন। কথাটা সংবিধান সম্মতও নয়।
মন্ত্রীত্বের দায়িত্বশীল জায়গায় বসে তিনি এমন উক্তি করতে পারেন না। তাঁর এমন উক্তি মানুষের ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যায়, ধর্মনুভুতিতে চরম আঘাত হানে। জনসমুক্ষে বসে এসব বলার কোনোই নৈতিক অধিকার মন্ত্রীর নেই। মন্ত্রী মহোদয় তাঁর বিশ্বাস নিজের ভেতরে পোষন করতে পারেন কিন্তু সেটি পাবলিক অফিসে বসে পারেন না। তাঁর অমুলক এমন বিশ্বাস প্রচারের ম্যান্ডেট মন্ত্রীকে দেশবাসী দেয়নি। মন্ত্রী দায়িত্বশীল চেয়ারে বসে তিনি দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির হয় এমন কথা বলার কোনই অধিকার নেই। সুযোগ করে দিতে পারেন না। মুষলমানদেও অতিপ্রিয় মহানবী হযরত মুহাম্মদ(স.)কে নিয়ে এসব উক্তি করে তিনি দেশে অস্থিতিশীলতার জন্ম দেয়ার দায়ে পড়েন। তার উক্তির রেশ ধরে জামায়াত-হেফাজত নিজেদের মতো করে তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে এই উক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশে আবারও একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার সুযোগ খুঁজবে।
লতিফ সিদ্দিকীর কথা একবারেই স্পস্ট। ১ আগষ্টের পত্রিকায় মন্ত্রী বলেছেন ‘ আমি অনুতপ্ত নই : লতিফ’। নিজের দেয়া বক্তব্য নিয়ে অনুতপ্ত নন এ মন্ত্রী। ৩০ সেপ্টেম্বও রাতে মেক্সিকো থেকে বিবিসি রেডিওকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর আগের অবস্থানে আছেন বলে সাফ জানিয়ে দেন। তিনি বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর চেয়েও তিনি বেশি বিরোধী হজের। বিরোধী শব্দের অর্থ- বিরোধিতা করে এমন; শত্রু, বিপ! তাহলে মন্ত্রীর কথার অর্থ কি দাঁড়ায়? মন্ত্রীর আল্লাহর নির্দেশিত হজের বিরোধি এবং তার শত্রু ও বিপ। তিনি আবদুল্লাহর পুত্র বলে বাংলাদেশী তথা মুসলিম উম্মাহর আত্মার স্পন্দনে আঘাত করেছেন। এতে সন্দেহের অবকাশ নেই যে, তিনি হজরত মুহম্মদ (সা.) সম্পর্কে উপহাস ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ব্যক্ত করেছেন। তাঁর বক্তব্য মতে তিনি আমাদের নবীজিরও শত্রু ও প্রতিপ! এুসলমানরা বিশ্বাস কওে, নবীজির প্রতি অবিশ্বাস প্রকাশ পায়- এমন সবই কুফরি। লতিফ সিদ্দিকী দৃষ্টত কুফরি করেছেন। মুসলমান অধুসিত এ দেশে কোন মুসলিম মন্ত্রী কুফরি করে মন্ত্রী থাকার অধিকার রাখেন না। ইসলামের অন্যতম মৌলিক চারটি কেন্দ্রীয় ফরজ বিধানের একটি হজ। ইসলামের মূল ভিত্তি পাঁচটি- ইমান, নামাজ, জাকাত, হজ ও রমজানের রোজা। মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার অবশ্য কর্তব্য (আলে ইমরান : ৯৭)। হজ ইসলামের একটি অকাট্য বিধান। আল্লাহতাআলা তাঁর মহান গ্রন্থে বলেছেন, মানুষের মধ্যে যার বাইতুল্লাহে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশে ওই ঘরের হজ করা তার অবশ্য কর্তব্য (তিরমিজি : ৮১২)। অতএব হজ মুসল মানদেও বিশেষ অনুভুতির জায়গা। এ জায়গায় কটাক্ষ করে মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকি মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত এনেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর হজ ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:কে অবমাননা করে দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সারা দেশ। গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশের পর নিন্দার ঝড় উঠেছে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সর্বত্র। মন্ত্রীর এ বক্তব্যের সাথে সাথে প্রবাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এরপর সংবাদটি দ্র”ত ছড়িয়ে পড়ে। অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশন ও পত্রিকায় এ সংবাদ প্রচার হলে সারা দেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। রাজধানীসহ দেশে বিভিন্ন স্থনে বিােভ করেন ধর্মভীরু মানুষেরা। মন্ত্রীকে বহিষ্কার এবং তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মপ্রাণ মানুষ বিােভে ফেটে পড়েন। ৩ অক্টোবর শুক্রবার রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ইসলামি সংগঠন বিােভের ডাক দিয়েছে। দলমত-নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ মন্ত্রীর এ বক্তব্যকে অগ্রহণযোগ্য, অবমাননাকর ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন। আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যে সরকারের ভেতরেও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। অনেকে মন্ত্রীর এ বক্তব্যকে বেসামাল ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাজেদা চৌধুরী তাকে মুখপোড়া বলে আখ্যায়িত করেছেন। সরকারের অংশীদার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। বিএনপির প থেকেও তার বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও তাকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে। ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের নেতারা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে ২ অক্টোবর দুপুরের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার ও গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়েছে। বিভিন্ন সংগঠনের প থেকে মন্ত্রীকে শুধু বরখাস্তই নয়, তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে অন্যথায় উদ্ভূত পরণতির দায় সরকারকেই গ্রহণ করতে হবে। বিতর্কিত এই মন্ত্রীকে দেশ ত্যাগে বাধ্য করতেও দাবি জানানো হয়েছে। অনেকেই বলেছেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের চেয়েও লতিফ সিদ্ধিকি বেশি অপরাধ করেছেন। তসলিমা নাসরিনকে দেশান্তরি করা হলে লতিফ সিদ্দিকিকেও তাই করতে হবে বলে দাবি তোলা হচ্ছে।
১ অক্টোবরের প্রথম আলোতে ছাপা সাক্ষাৎকারে লতিফ সিদ্দিকী বলেন- ‘তারা হাজার হাজার কোটি কোটি মানুষ মেরে ফেলতেছে, ওটা করতেছে সেটা করতেছে। তাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে না। আমি একটা…এই হজ তো মোহাম্মদের (হযরত মোহাম্মদ স.) জন্মের আগেও প্রচলিত ছিল। এটা কী মোহাম্মদ প্রচলন করেছে? আর তাবলিগের তো কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাবলিগের মাধ্যমে আমি মনে করি, ভারতবর্ষে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টির করার জন্য একেবারে….ওদিকে হলো সংঘ পরিবার এদিকে তাবলিগ পরিবার। এ নিয়ে এতো কথার দরকারটা কী আছে?’ তিনি আরও বলেন ‘আমি ইসলাম ধর্মের কোনো স্তম্ভকে আঘাত করি নাই। আমি আমার মতামত প্রকাশ করেছি। আমি ব্যক্তি স্বাধীন হিসেবে, আমি একজন আধুনিক মানুষ হিসাবে, আমার মতামত আমি প্রকাশ করতে পারি। ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য এতো বড় বড় কথা বলা হয়। তাহলে আমার ব্যক্তি স্বাধীনতায় কেনো হস্তপে করা হবে?’ মন্ত্রী এখনও তাঁর কথায় অটুট আছেন। মোটেও অনুতপ্ত নন এমনকি তিনি যা বলেছেন তা সঠিক বলেছেন ভাবটা এমনই। আমরা মনে করি
সরকারের মন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য বলার েেত্র তাঁর কিছু বিধি-নিষেধের মেনে চলার কথা। কিন্তু তা তিনি করেননি। বিধি-নিষেধ সম্পর্কে মন্ত্রীর বক্তব্য এমন- ‘সেটাতো আমি আমার দেশে করি নাই। আমি ভাবছিলাম মুক্ত পৃথিবীতে আসছি, যেখানেই সবাই মুক্ত বিহঙ্গ, এখানে কোনো কিছুতেই বাধা নাই। এখানে যে কালো বিড়াল এতো রয়ে গেছে, তাতো আমি জানি না।’ তাঁর এমন ভাবলেসহীন বক্তব্য মোসলমানদের বড় কষ্ট দিচ্ছে। অচিরেই মন্ত্রীর এ বক্তব্য পরিহার করা দরকার। সরকারের উচিত বিতর্কিত মর্ন্ত্রীকে কোন প্রকার সহায়তা না করে, যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে মন্ত্রীর পদ থেকে, দলের পদ থেকে বহিস্কার করা। কেবল বহিস্কার আর পদত্যাগ করলেই হবে না তাঁকে আইনের আওতায় এনে বিচারও করতে হবে। তা না হলে কেবল দেশ অশান্ত হবে না, সারা বিশ্বে আমাদেও ভাবমূর্তি ধুঁলায় ভুলন্ঠিত হবে। আর তা আমাদের কাররই কাম্য নয়।
দেশের যারা নিতিনির্ধারক সংসদ সদস্য, সরকারের মন্ত্রী তাঁরা আজ নানা কারনে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন। একজন মন্ত্রীর মুখে যা শোভা পায় না; মানায় না তাই তাঁরা একের পর এক নির্বিকার চিত্তে বলে এবং করে যাচ্ছেন। জানিনা কোন গন্তব্যে চলেছি আমরা। কবে আমরা সভ্য হবো, কবে দেশটাকে মানুষের বাসযোগ্য করতে পারবো। মাননীয় মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যগণ গালাগালি, খিস্তি খিউড়, অসভ্য আচরন, পাপ কথন বাদ দিয়ে জনগণের সমস্যাগুলো সমাধানের পথ খুঁজুক; জনগনের বন্ধু হউক এটাই দেশের সকল নাগরিকদের প্রত্যাশা। আমরা আমাদের সম্মানীত মন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যদের শুভবুদ্ধি উদয় হউক সেই দিনের প্রত্যাশায় রইলাম।
(লেখক- মীর আব্দুল আলীম, সাংবাদিক, কলামিষ্ট ও সম্পাদক- নিউজ-বাংলাদেশ ডটকম। [email protected])