বালাগঞ্জের সাদিপুর ইউনিয়ন ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ

e sebaশাহ মো. হেলাল, বালাগঞ্জ: বালাগঞ্জ উপজেলার ২নং সাদিপুর ইউনিয়নের ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নষ্ট রয়েছে যন্ত্রপাতি। ব্যাহত হচ্ছে ই-তথ্য সেবা। ই-তথ্য সেবা কেন্দ্র এ ইউনিয়নের সচিবের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এর আগে তিনি এক দূর্নীতির অভিযোগে জেল হাজত বাস করেন।
বৃহস্পতিবার খছরুপুর গ্রামের সীমা বেগম এসেছেন তার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন বাংলা ও ইংরেজি করে নিতে। সচিব নেই। এক মেয়ে এসব কাজ করছেন। জরুরী ভিত্তিতে এখন প্রয়োজন বলা হলেও তখন তাকে বলা হচ্ছে ৩দিন পর নিতে এবং ৮শ টাকা দেয়ার জন্য। এভাবে প্রতিদিন বলা হয়ে থাকে এই ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে আসা লোকজনদের। ফলে মানুষ তার তাৎক্ষণিক সেবা পাচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে ইউপি সচিব ই-তথ্য সেবার কাজ নিজে দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। সেখানে কোন লোক নিয়োগ না দিতে তার হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে। এখানে যোগ্য লোক না থাকায় এ ইউনিয়নের ই-তথ্য মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌছছেনা।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে সাদিপুর ইউনিয়নের ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে যোগ্য লোকের অভাবে মানুষ তাৎক্ষনিক ডিজিটাল সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেন্দ্রে রয়েছে, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফটোকপি মেশিন, স্কেনার, ক্যামেরা, প্রিন্টার, লেমিনেটিং এবং মডেম। এগুলো ইউনিয়ন অফিসে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। এর মধ্যে ফটোকপি মেশিন ও ডেক্সটপ কম্পিউটার নষ্ট। ল্যাপটপ উদ্যোক্তা বাবলির বাড়িতে। যদিও অভিযোগ রয়েছে ল্যাপটপ সচিবের বাড়িতে রয়েছে। বাবলি ও সচিব জানান আবুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আবুল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে তাদের কাছে মোবাইল নাম্বার চাইলে বলেন বাবলি বলেন তার কাছে নেই। অনেক খোজাখুজির পর আবুলের নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করলে আবুল বলেন আমাকে কোন অস্থায়ী বা স্থায়ী নিয়োগ দেয়া হয় নাই। কয়কদিন আসা-যাওয়া করলে সেক্রেটারী বলেন কী বোর্ড ও মাউস নিয়ে যেতে। আবুল এগুলো নিয়ে গেলে দেখেন সব যন্ত্রপাতি নষ্ট। ইউ/পি সচিব বলেন এগুলো তার টাকা দিয়ে মেরামত করতে। আবুলকে স্থায়ী বা অস্থায়ী নিয়োগ না দেয়ায় আবুল মিয়া ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে আর যাননি। অতচ উদ্যোক্তা বাবলি বলেন আবুল কম্পিটার ঠিক করতে ইঞ্জিনিয়ার আনতে গেছেন। অতচ ইউপির চেয়ারম্যান বলেন আমরা লোক নিয়োগ দিতে শনিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ই-তথ্য সেবার দায়িত্ব নিয়ে তাদের কথাবার্তায় অনেক গড়মিল পাওয়া যায়। সেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে উদ্যোক্তা হিসেবে যে মেয়ে রয়েছেন তিনি কম্পিউটার বিষয়ে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ। তিনি মূলতঃ ইউনিয়নের সচিবের সহযোগিতা করতেন। আর্থিক সুবিধা লাভের আশায় পুরুষ লোক নিয়োগ দিতে বাধা হয়ে দাড়িয়েছেন সচিব।
সেখানে দক্ষ লোক নিয়োগ না দেয়ায় ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে থেকে এ ইউনিয়নের লোকজন অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কাজ নিয়ে গেলে অন্যত্র থেকে কাজ করে দেন। তাও আবার কয়েক দিন পর এসে নিতে হয়। যোগ্য লোক না থাকার কারণে ইউনিয়নের জন্ম নিবন্ধন পুরাতন ভলিউম থেকে জন্ম নিবন্ধন ওয়েব সাইটে তোলা হয়নি। যার কারণে ইউনিয়নের নাগরিকদের ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কপি পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। যার ফলে বিদেশগামী নাগরিকরা নানা সমস্যার সম্মূখিন হচ্ছেন। ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রের সকল যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় বাবলি রাণী ধর ইউপি সচিবের কাজ নিয়ে ব্যস্ত দেখা যায়। ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রে সচিবের কোন দায়িত্ব না থাকলেও তিনি নিজে তা পালন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ইউপি সচিব সাইফুদ্দৌলাহ মান্না বলেন, আমি ই-তথ্য সেবা কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করবো কেন? এসব অভিযোগ সত্য নয়।
ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব বলেন, আমরা এ বিষয়ে শনিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি লোক নিয়োগ দেয়ার।
বালাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুর রহমান বলেন, যন্ত্রপাতি নষ্টের খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে খোজ নিয়ে বিহীত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।