সেই ইস্পাহানীসহ তিনজন বাদ : উদ্ধার হয়নি ৯১ লাখ টাকা
নুরুল হক শিপুঃ ব্র্র্যাক ব্যাংক বিশ্বনাথ শাখার কোটি টাকা ছিনতাই ঘটনায় আদালতে দাখিল করা অভিযোগপত্রে সুনামগঞ্জের আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা হাসানুজ্জামান ইস্পাহানীসহ ৩ জনকে অব্যাহতি চাওয়া হয়েছ। যে ইস্পাহানীকে নিয়ে নাটক করেছিলেন তৎক্ষালীন দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি। আলোচিত টাকা ছিনতাই মামলায় আলোচিত ইস্পাহানীকে বাদ দিয়ে সম্প্রতি আদালতে চার্জশিট দেওয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে ঘটনার পর ছিনতাইয়ে জড়িতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮ লাখ ৮০ টাকা আদাতের মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফেরত পেয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ওই টাকা হস্তান্তর করা হয়। তবে ব্যাংকের খোয়া যাওয়া বাকী ৯১ লাখ ২০ হাজার টাকা এখনোও উদ্ধার হয়নি। আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ জুলাই সিআইডি সিলেট জোনের পুলিশ পরিদর্শক মুহিদুর রহমান খান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সন্দেহে গ্রেফতারকৃত সুনামগঞ্জের আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা হাসানুজ্জামান ইস্পাহানী, এনাম আহমদ ও কদ্দুছ আলীর বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ স্বাক্ষি প্রমান না পাওয়ায় তাদেরকে অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়। অভিযোগপত্রে সুজন মিয়া, ব্যাকের গাড়ি চালক সোহেল, আজিজুল হক আরজু, আমির হোসেন হাজারী, আবুল হোসেন, আজাদুর রহমান, মানিক ওরফে কট্টা মানিক, পলাতক আসামী নাবিল ওরফে নাবিল রহমান খাঁন, শুভ ওরফে সাদিক আহমদ, জিলানী, মুহিত ওরফে মুহিব, তোফায়েল ওরফে তোফায়েল আহমদ ওরফে রুহেলকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া মেজবাহ ও গিয়াস নামের দুজনের নাম-ঠিকানা জানতে না পারায় ভবিষ্যতে তাদের পূর্ণ নাম-ঠিকানা পাওয়াগেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন।
জানা গেছে, গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর নগরীর বন্দরবাজার ও দক্ষিণ সুরমায় দুটি শাখা থেকে এক কোটি টাকা বিশ্বনাথ শাখায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ব্যাংকের বিশ্বনাথ শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক গওহর আলতাব চৌধুরী ব্যাংকের গাড়িযোগে (ঢাকা মেট্রো গ-২৩-৬২২) টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িচালক সোহেল আহমদকে ছোরা দেখিয়ে ছিনতাইকারীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে পালায়। পুলিশ ওই দিন রাতেই সুনামগঞ্জ শহরের আরপিননগরে অভিযান চালিয়ে গুলি ছুড়ে ‘ছাত্রলীগের ক্যাডার’ হাসানুজ্জামান ইস্পাহানিকে আটক করে। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এরপর গাড়িচালক সোহেল, তাঁর ভাই কুদ্দুছ মিয়া, সুজন মিয়া, আজিজুল হক ওরফে আরজু, এনাম আহমদ, আজাদ রহমান ও মো. আমির হোসেন হাজারি নামের ছয়জনকে আটক করা হয়। এদেরকে নিয়ে র্যাব-৯-এর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। পরে ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে গাড়িচালক সোহেল আহমদ ও মো. সুজন সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম এ বি এম জহিরুল গণি চৌধুরী দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে সুজন মিয়া ঘটনায় নিজে জড়িত ছিল বলে আদালতে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ১৪ জন জড়িত বলে জানায়। তবে জবানবন্দিতে ইস্পাহানী ও এনামের নাম প্রকাশ করেনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক মুহিদুর রহমান খান সবুজ সিলেটকে জানান, ওই ঘটনার সাথে যাদের জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া গেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। যাদের সম্পৃক্ততা নেই তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
উদ্ধারকৃত ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা আদালতের মাধ্যমে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বুঝে পেয়েছেন বলে সবুজ সিলেটকে জানান ব্রাক ব্যাংকের বিশ্বনাথ শাখার ম্যানেজার ও মামলার বাদি আলী আহসান সিদ্দিকী। তিনি বলেন, মামলার অভিযোগপত্র ২ মাস আগে আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বিচার কাজ পর্যায়ক্রমে শুরু হবে।