বালাগঞ্জে স্বামীর ছুড়া এসিডে ঝলসে দেয়া শরীর নিয়ে আইনের দ্ধারে-দ্ধারে ঘুরছে অসহায় বিউটি
আব্দুল হাকিম রাজ,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারে মদ জুয়া আর যৌতুকের টাকা,র যোগান দিতে ক্লান্ত এক স্ত্রী সহায়-সম্বল হারিয়ে স্বামীর দেয়া এসিডে ঝলসে যাওয়া শরীর নিয়ে বিচারের আশায় আইনের দ্ধারে-দ্ধারে ঘুরছে। তিন বছরের কন্যা সন্তান সুলতানাকে নিয়ে বিভিন্ন বাসা-বাড়ীতে কাজ করে মামলার ব্যায়ভার চালিয়ে আসলেও সে জানেনা-আদৌ ন্যায় বিচার পাবে কিনা ।এদিকে মামলা-মোকদ্দমা তুলে নিতে স্বামীর অব্যাহত প্রাননাশের হুমকির মুখে অসহায় স্ত্রী কয়েকদিন পরপর বাসা বদলের ব্যয়ভার বহনে হিমশিম খাচ্ছে।বাসা নিয়ে যেখানে যায়,স্বামী সেখানে গিয়েই তাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। শুক্রবার বেলা ১১ ঘটিকায় মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মোকামবাজারে একজন সাংবাদিকের বাসায় এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এমনই মর্মান্তিক অভিযোগ দেন,বালাগঞ্জ উপজেলার করছারপার গ্রামের মৃত কনু মিয়ার কন্যা বিউটি আক্তার(২৫)। বিউটি এ প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে জানান,গত ৩ মার্চ ২০১০ ইংরেজী একই উপজেলার মৃত হাছন আলীর পুত্র আনোয়ার মিয়ার সাথে পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য করে কাবিননামার মাধ্যমে তার বিয়ে
স¤পন্ন হয়।বিয়ের পর স্বামী আনোয়ার মিয়া নেশা করে ঘরে ফিরে তাকে শারীরিক নির্যাতন করত।নিজের ভবিস্যত চিন্তা ও মা-বাবার অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে বিউটি অনেক নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর সংসার করতে থাকলে বছরখানেক পর সে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।কন্যা সন্তানের জন্মের পর স্বামীর নির্যাতন অমানবিকভাবে বেড়ে গেলে বাধ্য হয়ে গত ১০ অক্টোবর ২০১১ ইংরেজী তারিখে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালত-সিলেট এ যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।এরপর আপোষ-মিমাংসা করে তার উপর আর অমানুষিক নির্যাতন না করার শর্তে কোর্টে লিখিত দিয়ে বিউটিকে ঘরে তুলে নেয় স্বামী আনোয়ার। চালাক-চতুর আনোয়ার কয়েকদিন স্ত্রীর সাথে ভাল ব্যবহার করে স্ত্রীর মন জয় করতে সক্ষম হয়।বেকার স্বামীকে কাজে লাগাতে সহজ-সরল বিউটি তার হাতের চুড়ি এবং পিত্রালয়ের সামান্য ভুমি টুকু বিক্রি করে স্বামীর হাতে ২ লক্ষ টাকা তুলে দেয়। টাকা পেয়ে স্বামী আনোয়ার মিয়া ব্যবসার কথা বলে অন্যস্থানে চলে গিয়ে একটি মেয়ের সাথে পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে সমস্ত টাকা নষ্ট করে বাড়ীতে এসে পুনরায় টাকা
দিতে স্ত্রীর উপর শুরু করে অমানুষিক নির্যাতন। প্রান ভয়ে পিত্রালয়ে চলে গিয়ে বিউটি গত ২২ জুন ২০১২ ইংরেজী আরেকটি মামলা সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেটে আরেকটি মামলা করে। মামলা দায়েরের পর মামলা তুলে নিতে স্বামী আনোয়ার মিয়া তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে কাজ না হওয়ায় ২০ জুলাই রাতের অন্ধকারে স্ত্রীর বসতঘরের জানালা দিয়ে স্ত্রীর উপর এসিড নিক্ষেপ করে পাষন্ড স্বামী আনোয়ার। ভাগ্যক্রমে স্বামীর ছুড়ে দেওয়া এসিড সেদিন বিউটির শরীরে না পড়ে, পায়ে পড়লে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আলাপকালে বিউটি জানায়,মামলা-মোকদ্দমা তুলে নিতে স্বামী আনোয়ার মিয়া তাকে ও তার মেয়েকে প্রাননাশের হুমকির চেষ্টা অব্যাহত ভাবে করে আসছে।যেকোন সময় সে এবং তার মেয়েকে প্রানে হত্যা করবে বলে মোবাইলে হুমকি দিয়েছে স্বামী। ফলে ২/১ মাস পর-পর স্বামীর ভয়ে বাসা বদল করছেন তিনি।কান্না জড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বিউটি জানায়,আমাকে আমার স্বামী মেরে ফেলবে সাংবাদিক ভাই, আপনি পত্রিকায় লিখে একটু পুলিশকে সজাগ করেন,যাতে আমার মৃত্যু হলে পুলিশ বুঝতে পারে আমাকে কে মেরেছে?