উনার চরিত্র বড়ই বিচিত্র
স্টাফ রিপোর্টার: উনার চরিত্র বড়ই বিচিত্র। হলুদ সাংবাদিকতা তার অস্ত্র , মানুষের চরিত্র হনন তার নিত্য দিনের পেশা এমনটা মন্তব্য সিলেটের সুশিল সমাজের। কে এই গুণধর সাংবাদিক? তিনি আর কেউ নয় অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার চাদাঁবাজ শাহ্ দিদার আলম নবেল। এক সময়ে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো এই সাংবাদিকের। আজ নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে ফ্লাটবাড়ী নিয়ে আলীশান হালে জীবন যাপন করেন। যতোদূর জানাযায়, নবেল সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের পুত্র। একবারে দারিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারে নি। যার ফলে তার ভাগ্যে কোন সরকারি চাকরি পাওয়া সম্ভব হয়নি। দুই বছর পূর্বেও যার জীবন যাত্রা ছিল একেবারে সাদামাঠা আজ সে হঠাৎ করে আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদিপ না পেয়েই বিলাস বহুল জীবন ও বিশাল অর্থবৃত্তের অধিকারী। এ নিয়ে সিলেট জুড়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। জনশ্রুতি রয়েছে, এই গুণধর সাংবাদীক না কি দুধে ধোয়া তুলশি পাতা নয়। তিনি মানুষের দূর্বলতাকে পুজিঁ করে সংবাদ পরিবেশনের ভয় ভীতি প্রদর্শন করে ফায়দা হাসিলে ওস্তাদ। উনার চাহিদা মতো উৎকোচ না দিলে যে কারও চরিত্র নিয়ে কিংবা মান-সম্মানকে ধুলিসাত করতে উনার বিবেকে বাধে না। তাই উনি বিবেক প্রতিবন্দি বলেও কু-খ্যাতি রয়েছে। শহরতলীর মেজরটিলা এলাকার একভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নবেল ঠান্ডা মাথার চাদাঁ বাজ। তার অত্যাচার শুধু সিলেট নগর জুড়ে নয় , গুটা সিলেটে রয়েছে তার দৌরাত্ব। নগরী ছাড়াও সিলেটের প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে তার সহযোগী চাদাঁবাজরা। এদের মাধ্যমে সে ফায়দা হাসিল করে বলে জানা যায়। সিলেটের রাজনীতিবিধ থেকে শুরু করে মটরশ্রমিক নেতা সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ তার চাদাঁবাজীতে অতিষ্ট। একাধিক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন , সে একটি জাতীয় দৈনিকের সাইন বোর্ডে ও অনলাইন দৈনিক সিলেট ভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর আড়ালে এসব অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে। কাজিটুলা এলাকার একজন বীর মুক্তি যোদ্ধা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যে এক সময় তার স্ত্রী সংসার চালাতে পারতো না আজ সে কি করে অনলাইন দৈনিক সিলেট ভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকম এর সম্পাদক ও প্রকাশক। খোজ নিয়ে জানাযায়, অনলাইন দৈনিক সিলেট ভিউ টুয়েন্টিফোর ডটকমে ১২ জন অফিস স্টাফ রয়েছে। এদের বেতন ভাতা সহ এই বিশাল ব্যায়ভার বহনের আয়ের উৎস কোথায় তা খতিয়ে দেখার বিষয়। সিলেটের সৎ ও বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকগন যেখানে সাদামাটা জীবনযাপন করতে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানে এই গুনধর সাংবাদিক প্রতিমাসে সিলেট ভিউ ২৪ ডট কমের সকল স্টাফ ও প্রতিনিধি নিয়ে সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমন বিলাসে মত্ত থাকেন। এত অর্থবিত্ত ও প্রাচুর্যের মূল রহস্য কি তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন মনে করেন সচেতন মহল। এদিকে হাইকোর্টের জামিনে থাকা দৈনিক সবুজ সিলেট সম্পাদকের জামিন নামঞ্জুর হয় গত ০৪ আগষ্ট বিকেল ৪ ঘটিকায় সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্র্যট আদালতে। একইদিন বিকেল ৪ টা ১৫ মিনিটের সময় সিলেট ভিউ ২৪ নামক নিউজ পোর্টালে সবুজ সিলেট সম্পাদকের জামিন নামঞ্জুর করার বিস্তারিত সংবাদ প্রকাশ করা হয়। কোন পূর্ব সংশ্লিষ্টতা ছাড়া এত স্বল্প সময়ের মধ্যে কিভাবে সংবাদটি প্রকাশিত হল এ নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। জানা যায় সিলেটের চিহ্নিত ভূমি দস্যু ও দলিল জালিয়াত চক্রের মূল হোতা আনোয়ার খন্দকার ওরফে মামা খন্দকার চক্রের সাথে এই গুনধর সাংবাদিকের সম্পৃক্ততা রয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় দৈনিক সবুজ সিলেটের সম্পাদকের জামিন নামঞ্জুরের সংবাদ মামা খন্দকার ও জুবের চক্র আগে থেকেই জানত। তাই ঐ দিন আদালতে তারা কোন আইনজীবী দেয়নি। কাকতালীয়ভাবে ছিলেননা পিপিও। ম্যাজিস্ট্র্যেট মোঃ শাহেদুল আলম স্বপ্রনোদিত হয়েই হাইকোর্টের দেয় জামিন নামঞ্জুর করেন। এবং সাংবাদিক নবেল চক্র এক লক্ষ টাকার চুক্তিতে সিলেট ভিউ ২৪ সহ অন্যান্য সকল পত্রিকায় সংবাদটি সরবরাহের জন্য লিজ নেয়। শুধুকি তাই, অতীতেও তিনি বিভিন্ন সংগঠনের নামে ও সমাজের স্বনামধন্য ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে। যার জলন্ত প্রমান ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে বহুল প্রচারিত একটি জাতীয় দৈনিকের বিরুদ্ধে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে ভাড়াটিয়া লোক দিয়ে একটি মানববন্দন করেছিল। ঐ মানববন্ধনে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। ঐদিন উপস্থিত সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়েন এর মূল হোতা গুনধর সাংবাদিক নবেল। তার পরদিন জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো প্রত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পাঠকদের অনুরোধে সংবাদটি হুবহু তুলে ধরা হল।
মানববন্ধনের পেছনে কারা?
ভুঁইফোড় সংগঠন ‘জাতীয় সংবাদপত্র পাঠক ফোরাম’ সিলেটে মানববন্ধনে লোক সমাগম দেখাতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিল। মানববন্ধনের প্রচারক ছিলেন বসন্ধুরা গ্রুপের একটি দৈনিকের সিলেট প্রতিনিধি। তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির মাধ্যমে বিভিন্ন কৌশলে লোক জড়ো করেছিলেন। টাকা নিয়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনার সচিত্র সংবাদ গতকাল শনিবার প্রথম আলোসহ সিলেটের একাধিক দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হলে প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র থেকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দি হাঙ্গর প্রজেক্ট ও বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সদস্যদের সংগঠনের প্রতিনিধিত্বশীল সদস্যরা মানববন্ধনে ভুল বুঝে উপস্থিত হওয়ায় গতকাল হাঙ্গর প্রজেক্টের সিলেট কার্যালয়ে গিয়ে লিখিতভাবে তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে। লিখিতভাবে তাঁরা জানান, গত শুক্রবার সকালে তাঁরা ১০ থেকে ১৫জনের সদস্যরা একসঙ্গে মাসিক পরিকল্পনাসভায় যাওয়ার সময় তাঁদেরকে প্রথম আলোর কথা বলেই কিছুক্ষন মানববন্ধনে একাত্ম হওয়ার অনুরোধ করা হয়। মানববন্ধন শেষ হওয়ার আগেই তাঁরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পত্রপত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ পড়ে তাঁরা নিজ থেকে লিখিতভাবে সংগঠনকে অবহিত করেন। এ প্রসঙ্গে বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সিলেট অঞ্চলের প্রতিনিধি-সদস্য হেনা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি অনুতপ্ত হওয়ার সুরে বলেন, ‘আমরা তো সত্য বিষয়টি সংগঠনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। না বুঝে এমন হয়েছে।’
প্রথম আলোর কথা বলে ওই মানববন্ধনে একাত্ম হওয়ার জন্য কারা আহবান জানিয়েছিল এমন প্রশ্নে তিনি নিরাপত্তাহীনতার কথা বিবেচনা করে আর কিছু না বলতে অনুরোধ করেন। কার আহবানে মানববন্ধনে গেলেন এমন প্রশ্নে তিনি জাতীয় মহিলা পার্টির নেত্রী নাহিদা আক্তার চৌধুরীর কথা বলেন। সুনামগঞ্জের চরমহল্লা থেকে দি হাঙ্গর প্রজেক্টের উজ্জীবক সদস্য আবদুর রহমান এসেছিলেন তাঁর সাত সদস্যের একটি দল নিয়ে। তিনিও লিখিতভাবে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে মানববন্ধনে গিয়েছিলেন বলে জানান। মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে আবদুর রহমান বলেন, ‘আমি তো পত্রিকা পড়ে থ বনে গেলাম। এ জন্য নিজের মধ্যে খারাপ লাগছে।’ তিনি জানান, কালো পাঞ্জাবি পড়া একজন সাংবাদিক তাঁদেরকে নিয়ে যান। জাতীয় পার্টির মহিলা নেত্রীদেরও তিনি এনেছিলেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীদের এ তথ্য সূত্রে ছবিতেও দেখা গেছে গেছে, বসন্ধুরা গ্রুপের পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন এর সিলেট প্রতিনিধি শাহ দিদার আলম নবেল মানবন্ধনের আয়োজন শেষে ব্যানার গুছাতে। তবে এ ব্যাপারে তাঁর সংশ্লিষ্টতার কথা তিনি অস্বীকার করে প্রথম আলোকে জানান, তিনি সংবাদ সংগ্রহে ওই জায়গায় ছিলেন। আয়োজক ছিল কেবল জাতীয় সংবাদপত্র পাঠক ফোরাম। এদিকে দি হাঙ্গর প্রজেক্ট ও বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সিলেট অঞ্চলের কর্মসূচি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সংগঠনের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানববন্ধনের প্রচারনার সময় সাংবাদিক থাকায় ঘটনাটি বোঝার মধ্যে ভুল হয়ে গেছে। যাঁরা অংশ নিয়েছিল তাঁরাসহ আমি নিজেও অনুতপ্ত।’ তিনিও তাঁর সংগঠনের মাধ্যমে একটি পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধিসহ আরেকজন ফটোসাংবাদিকের কথা আয়োজক হিসেবে শুনেছেন। তবে নাম প্রকাশে রাজি নন ওই কর্মকর্তা। এদিকে মানববন্ধনে হাতাহাতি ও মারধরে আহত জাতীয় মহিলা পার্টির সিলেট মহানগর শাখার সভানেত্রী শিউলি আক্তার সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে রাত ১০টায় সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকার একটি ক্লিনিকে ভর্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই দিন আহত অবস্থায় তিনি প্রথম আলোকে বলেছিলেন ‘বিস্তারিত পরে বলব’। গতকাল বিকেলে ফের তাঁর মুখোমুখি হলে তিনি আবারও বলেন যে, ‘সুস্থ্য হয়ে আপনাদের অফিসে গিয়ে বিস্তারিত বলব…।’
মানববন্ধনে কী হয়েছিল সংক্ষেপে বলার অনুরোধ করলে শিউলির শয্যা পাশে একজন যুবক টেপ রেকর্ডার বন্ধ করলে পুরো বর্ণনা করা হবে বলে জানান। এ সময় কোনো রেকর্ডার নেই বলে নিশ্চিত করলে তিনি সংক্ষেপে কিছু কথা বলেন।
শিউলি আক্তার দাবি করেন, তিনি মানববন্ধনে যোগ দিতে যাননি। দলীয় কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় তাঁকে বক্তৃতা দেওয়র কথা মাইকে ঘোষণা করলে তিনি প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হচ্ছে জেনে বক্তৃতা দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। মানববন্ধন থেকে বের হওয়ার পথেই তাঁর ওপর হামলা করে দলীয় প্রতিপক্ষরা।
শিউলি বলেন, ‘নাহিদা আপা (‘জাতীয় মহিলা পার্টির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক) আমার সমর্থিত কর্মীদের ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে নিয়ে যান। তিনি কার অনুরোধে কর্মীদের নিয়ে গিয়েছিলেন আমি জানি না। যেহেতু পার্টির প্রতিপক্ষরা সেখানে ছিল, তাই হট্টগোল এড়াতে শেষ দিকে আমি সেখানে যাইা আমার কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য। তখন আয়োজকদের পক্ষ থেকে আমাকে বক্তৃতা দেওয়ার কথা বলা হয়। প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে মানববন্ধন হচ্ছে জেনে আমি বক্তৃতা দেইনি।’
মানববন্ধন শেষে আয়োজকদের পক্ষ থেকে টাকা ও খাবার বিতরণ প্রসঙ্গে শিউলি বলেন, ‘আমি চলে আসতে চাইলে খাবারের প্যাকেট নিয়ে যেতে বলা হয়। টাকা বিতরণে আমার কোনো কর্মী জড়িত না। তাই টাকা বিতরণের বিষয়টি আমার জানা নেই।’ জাতীয় মহিলা পার্টির নেত্রী নাহিদা আক্তার চৌধুরীকে গতকাল মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন বলে জানান। পরে তাঁকে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি। তবে নাহিদা গত শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিনি না জেনে গিয়েছিলেন। একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, প্রথম আলো থেকে বহিস্কৃত একজন ফটোসাংবাদিক ও বাংলাদেশ প্রতিদিন এর স্থানীয় প্রতিনিধি শাহ দিদার আলম নবেলের সঙ্গে জাতীয় মহিলা পার্টির নেত্রীদের সখ্যতা রয়েছে।
এসব বিষয়ে শাহ দিদার আলম নবেলের সাথে মুটোফনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সুরমা টাইমসকে বলেন, আমি তোমার সম্পাদকের সাথে কথা বলব। আর তোমার কিছু জানতে হলে আগামিকাল যে কোন সময়ে আমার অফিসে এসে জানতে হবে।