রাজনগরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তুলকালাম : কতৃপক্ষের তদন্তের আশ্বাস

2আব্দুল হাকিম রাজ,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার বেতাহুঞ্জা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আন্তসাতের অভিযোগে ছাত্র অভিভাবক মহল স্কুলের শিক্ষক/শিক্ষিকাদের দু-দিনে ৬ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে।প্রথমদিন সোববার বেলা আড়াই টায় শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটলে উপবৃত্তির পুরো টাকা দেওয়া হবে বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের আশ্বাসে অভিবাভকরা বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের তালা খুলে দিলেও পরদিন মঙ্গলবার টাকা না পেয়ে এলাকার শত-শত অভবাভক সহ ছাত্র/ছাত্রীরা শিক্ষকদের চোর-চোর বলে শ্লোগান দিয়ে শিক্ষকদের অফিসরুম ঘেরাও করে তালাবদ্ধ করে।পরে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের বক্তব্য নেয়ার কথা বলে অফিস রুমের তালা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করলে প্রধান শিক্ষক প্রথমে ক্যামরার সামনে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।পরে এলাকাবাসীর ক্ষোভের মুখে প্রধান শিক্ষক বলেন,তারা ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা কিছুটা দিয়েছেন এবং বাকি টাকা কোচিং ক্লাসের ফি বাবত রাখা হয়েছে।সরেজমিন পরিদর্শন কালে এলাকার শত-শত অভিবাভক ক্যামরার সামনে অভযোগ করে বলেন,শিক্ষকরা প্রতিদিন ক্লাসে আসেন ১১/১২ টায়।স্কুল খোলা না পেয়ে অনেক ছাত্র/ছাত্রী ফেরত যায়।এদিকে উপবৃত্তির টাকা ৬ শ টাকা প্রাপ্তি স্বীকার করে অভিবাভকদের কাছ থেকে কার্ডে স্বাক্ষর নিলেও ১শ/২শ টাকা তুলে দিয়ে তাদেরকে বিদায় করে দেয়া হয়। সোমবার অভিবাভকরা এর প্রতিবাদ জানালে তোপের মুখে প্রধান শিক্ষক শংকর চন্দ্র দাশ ছাত্র/ছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আগামীকাল দেয়ার আশ্বাস দিলে আজ মঙ্গলবার অভবাভকরা বিদ্যালয়ে আসলে শিক্ষকরা বলেন,সরকার যা দিয়েছে ছাত্র/ছাত্রীদের তা দেয়া হয়েছে।আর কোন টাকা দেওয়া যাবেনা।স্কুলের ৩য় শ্রেনীর ছাত্রী ফলি বেগমের পিতা তৌরিশ মিয়া জানান,তার হাতে ১শ টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে ৩ টি স্বাক্ষর নেন।আব্দুস সালামের পিতা আখদ্দছ আলী জানান,তার কাছ থেকে ও একইভাবে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।এভাবে বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক ছাত্রের অভিবাভক বিজয় টিভির ক্যামরার সামনে অভিযোগ করে বলেন,স্কুলের সভাপতি সোহেল মিয়া,প্রধান শিক্ষক শংকর ও রাজনগর সোনালী ব্যাংকের একাউন্টেন্টের যোগসাজশে অভবাভকদের কাছ থেকে ৩টি স্বাক্ষর নিয়ে টাকা দেন ১শ/২শ করে।তারা যখন টাকা আন্তসাতের বিষয়টি টের পান তখন সকল অভিবাভক মিলে এর প্রতিবাদ করেন।সাংবাদিকদের কাছে উপস্থিত অভিবাভকরা অভিযোগ করে বলেন,মাসের পর মাস শিক্ষকরা সময়মত বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকার কারনে বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটলেও কতৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননা।এ রিপোর্ট লেখার সময় বেলা ১২ টায় রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুজিবুর রহমানকে প্রতিবেদক ফোন দিয়ে বিষয়টি অবগত করলে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফসারের সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।বেলা ২ টায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সরেজমিন বেতাহুঞ্জা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসলে সাংবাদিকদের সামনে শিক্ষা অফিসারের কাছে কয়েকজন অভবাভক ৩ শ টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন,তাদের কাছ থেকে কার্ডে ৬ শ টাকার স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে।পরে তিনি বিষয়টি অন্য একদিন সকল অভিবাভককে সামনে রেখে তদন্ত করার আশ্বাস দেন।এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাংবাদিকদের বলেন,আপনারা স্কুলের সভাপতিকে নিয়ে অভিযোগকারী সকলকে অন্য একদিন স্কুলে উপস্থিত রাখেন,আমি সেদিন সকলের কথা শুনে আইনগত ব্যবস্থা নেব।