লাথি মেরে শ্রমিক সর্দারের খাবার ফেলে দেয়ার জেরে চা বাগানে ব্যবস্থাপক ৪ ঘন্টা অবরুদ্ধ

Komolgonj Tea gardenসুরমা টাইমস ডেস্কঃ কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখলা চা বাগানে তুচ্ছ ঘটনার দায়ে লাথি মেরে চা বাগান শ্রমিক সর্দারের খাবার ফেলে দিয়ে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে দায়ী সহকারী ব্যবস্থাপককে অপসারণের দাবীতে চা শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে। চা শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে পাত্রখলা চা বাগানের কারখানা ও অফিসের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে চা বাগান ব্যবস্থাপকদের ও অফিস কর্মচারীদের ৪ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। শুক্রবার পাত্রখলা চা বাগানে এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার সকাল ৮টায় পাত্রখলা চা বাগানে নারী পুরুষ মিলে সহ¯্রাধিক চা শ্রমকি চা বাগান অফিস ও কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে। চা শ্রমিকরা জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১৩ আগষ্ট পাত্রখলা চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক(কারখানা) মাহবুবুর রহমান কারখানা শ্রমিক সর্দার বনমালী বীন(৫৫)-এর সাথে রাখা খাবার লাথি দিয়ে ফেলে দিয়ে তাকে(শ্রমিক সর্দারকে) লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরে পাত্রখলা চা বাগানে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। পাত্রখোলা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শিপন চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, শ্রমিক নেত্রী পারুল কোড়াইয়া, গুলসান বেগম, বাবুল কুর্মী জানান, ১৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় বাগান কর্তৃপক্ষ পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এই ঘটনার সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক স্বাক্ষ্য প্রমাণে দোষী সাব্যস্থ হন। চা শ্রমিকরা প্রধান ব্যবস্থাপকের কাছে লিখিত আবেদন করে দায়ী সহকারী ব্যবস্থাপকের অপসারণ দাবী করে। লিখিত আবেদনের অনুলিপি ন্যাশনাল টি কোম্পানী(এনটিসি)-র উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গলস্থ উপ-পরিচারক(শ্রম),কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রদান করা হয়। লিখিত আবেদনের ৭২ ঘন্টার মধ্যে দায়ী সহকারী ব্যবস্থাপককে অপসারণ করা দাবী জানান। নির্যাতিত চা শ্রমিক বনমালী বীন এ প্রতিনিধিকে বলেন, সহকারী ব্যবস্থাপক(কারখানা) মাহবুবুর রহমান কয়েক দিন পূর্বে একটি কাজের জন্য তাকে ডেকেছিলেন।
এ সময় তার(শ্রমিকের)বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান থাকায় সে আসতে পারেনি। ১৩ আগষ্ট বুধবার তিনি( বনমালী বীন) কারখানার কাজে যোগ দিয়ে কাজের এক ফাঁকে সাথে নিয়ে আসা খাবার খেতে বসলে কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক লাথি মেরে এ খাবার ফেলে দিয়ে তাকে(বনমালীকে) লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনায় চা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোদ্ধ প্রতিক্রিয়া দেয়। এ
দিকে ঘোষিত সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাগান কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে আন্দোলন শুরুর ঘ্ষোণা দেয়। কর্মসুচীর শুরুতে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে কর্ম বিরতি পালন করে। সাথে সাথে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত পাত্রখলা চা বাগানের প্রধান ব্যবস্থাপক শামছুল ইসলাম ও কর্মচারীদের ভিতরে ৪ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, এনটিসির ডিজিএম মোঃ শাহাজাহান সরেজমিন এসে আন্দোলনরত চা শ্রমকিদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে রোববার ২৪ আগষ্ট কমলগঞ্জস্থ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার অনুষ্ঠিত হবে বলে আশ্বাস প্রদান করলে বেলা ১২টায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।
এনটিসির ডিজিএম মোহম্মাদ শাহাজাহান শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা স্বীকার করে বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে শ্রমিকরা দুপুরে কাজে যোগ দিয়েছে। রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান হবে।