সিটি মেয়র আরিফের সাথে দূরত্ব বাড়ছে আ’লীগের
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সরকারি দলের নেতাদের সাথে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর দূরত্ব বাড়ছে। ঘনিষ্টদের সাথেও সম্পর্ক তেমন ভাল যাচ্ছেনা। সরকারি অনুষ্ঠানসমূহে বার বার উপেক্ষিত বার বার উপেক্ষিত হওয়ার অভিযোগ করছেন মেয়র নিজেই। সম্পর্কের এ টান পোড়েনে নগর উন্নয়নে অনেকটাই ব্যাঘাত গঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল। তবে বিষয়টির সাথে ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন।
তিনি জানান, তার জানামতে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যত অনুষ্টান হয় প্রত্যেকটিতে মেয়রকে আমন্ত্রন জানানো হয়। এছাড়া আমাদের সাথে মেয়রের কোন দূরত্ব নেই। বরং মেয়র নগরীর উন্নয়নে যখনই অর্থমন্ত্রীর সহযোগিতা চান তাকে তিনি সহযোগিতা করেন। অন্যান্য জেলার মেয়রের চেয়ে সিলেটের মেয়রের মাধ্যমে এ সরকারের আমলে বেশি উন্নয়ন হচ্ছে বলে তিনি মনে করছেন।
জানাগেছে, সরকার গঠনের পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেন মেয়র। চলমান রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে অর্থমন্ত্রীও মেয়রকে সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন। বিভিন্ন অনুষ্টানেও অংশ নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী ও মেয়র। বিষয়টিকে সহজভাবে নেননি আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতারা। সিলেট সিটি করর্পোরেশনের উদ্যোগে অন্যান্য বছরের মতো এবারও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে ।
গতকাল শুক্রবার দিবসটি উপলে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যেগে শিশুদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শোক দিবসের আলোচনা সভায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক কাউন্সিলরদের কেউই অংশ নেননি। এনিয়ে উপস্থিত কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে দেখা দিযেছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
সিটি করর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীবের সভাপতিত্বে ও চন্দন দাশের পরিচালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, তৌফিক বক্স লিপন, ইলিয়াছুর রহমান ইলিয়াছ, রেবেকা বেগম, জাহানারা খানম মিলন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট শরীফুজ্জামান, ডা, সুধাময় মজুমদার, সিটি কর্মচারী সংসদের সেক্রেটারি আখতার সিদ্দিকী বাবলু প্রমুখ। পরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৯তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলে বাদ আছর হযরত শাহজালাল (র.) দরগাহ জামে মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতেও অনুপস্থিত ছিলেন মেয়র আরিফুল হক। অবশ্য শোক দিবসের আলোচনা সভার আগে সিটি করর্পোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন মেয়র ।
এর আগের দিন বৃহস্পতিবার সিলেট বিভাগীয় বৃমেলায়ও মেয়রকে যথাযথভাবে আমন্ত্রণ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ‘মেয়রকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ঠিকই, তবে ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসাবে অর্থমন্ত্রীর নাম ছিল। ব্যানারে অতিথি হিসাবে অন্য কারো নাম ছিল না।’ বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর কীনব্রীজ এলাকায় শুরু হয়েছে বৃরোপন অভিযান ও বিভাগীয় বৃ মেলা। এ মেলা চলবে ২০ দিন। এ উপলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন-জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে মঞ্চে ছিলেন -সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন ভূঁইয়া, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দেলওয়ার হোসেন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খায়রুল বাশার। অনুষ্ঠানের আমন্ত্রনপত্রে আয়োজক হিসেবে সিলেট জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, বন বিভাগ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নামও উল্লেখ ছিল। কিন্তু, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ করা হয়নি। তাকে দায়সারা আমন্ত্রণপত্র দেয়া হয়েছে বলে মেয়রের ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। এর আগেও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও জেলা পুলিশের অনুষ্ঠানেও মেয়রকে যথাযথ মূল্যায়ণ না করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, আগামী ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠেয় সপ্তম বিভাগীয় বাংলা লিংক নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায়ও মেয়রকে দায়সারা আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে মেয়র আরিফুল হককে একাধিকবার তাঁর মোবাইল ফোনেকল দিলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।