করিম হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল জকিগঞ্জ, ‘প্রতিবাদী মঞ্চের’ মাসব্যাপী কর্মসূচী

Karim_-zakigonj-07.08.14জকিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ জকিগঞ্জের বহুল আলোচিত ঘটনা শিক্ষক আব্দুল করিম হত্যাকান্ডে জড়িত হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে ক্রমেই উত্তাল হয়ে উঠছে জকিগঞ্জ। নিজ ভাইদের হাতে নিহত শিক্ষক আব্দুল করিম হত্যার পরপরই ফুসে উঠে স্থানীয় জনতা।
একপর্যায়ে উপজেলা সকল স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘শিক্ষক করিম হত্যার প্রতিবাদী মঞ্চ’।
এই মঞ্চের ডাকে বৃহস্পতিবার জকিগঞ্জ পৌর শহরের এমএ হক চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ। দুপুরের পর থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেয়। ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে জকিগঞ্জ পৌর শহর।
বিকাল ৩টায় শিক্ষক করিম হত্যার প্রতিবাদী মঞ্চের সভাপতি প্রধান শিক্ষক কুতুব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুশ শহীদ তাপাদারের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশ শুরু হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ.সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ইকবাল আহমদ, এডভোকেট মোশতাক আহমদ, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাকিম আলী হায়দর, ইউপি চেয়ারম্যান কবির আহমদ, এমএ রশীদ বাহাদুর, ইকবাল আহমদ একল, আবু জাফর মো. রায়হান, অধ্যক্ষ মাওলানা নূরুল ইসলাম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খলিল উদ্দিন, উপজেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক এমএজি বাবর, রফিকুল ইসলাম, মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মাওলানা মখলিছুর রহমান, মাওলানা বিলাল আহমদ ইমরান, সাপ্তাহিক জকিগঞ্জ সংবাদের প্রধান সম্পাদক রহমত আলী হেলালী, সমাজসেবী নোমানুর রশীদ, শিক্ষক রওশন আরা বেগম, আব্দুল খালিক, এইচ এম কামরুজ্জামান, মোঃ ইউনুছ আলী, প্রভাষক মাওলানা ইমাদ উদ্দিন, মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা জামিল আহমদ, শিক্ষক মনওয়ার হোসেন প্রমুখ।
বিশাল প্রতিবাদ সভা থেকে শিক্ষক করিম হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদী মঞ্চের নেতারা মাসব্যাপি কর্মসূচি ঘোষনা করেছেন।
উল্লেখ্য শিক্ষক আব্দুল করিম জকিগঞ্জ সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক, মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর সরুপচন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন।
৮ জুলাই রাতে আপন সহোদর সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার এসআই আব্দুশ শাকুর, আব্দুর রহিম ও তার স্ত্রী, শ্যালকের হাতে র্নিমমভাবে হত্যার শিকার হন।
হত্যাকান্ডের পরপরই ধামাচাপা দেয়ার উদ্যেশে ষ্টোক করে মৃত্যু হয়েছে প্রচার করে তড়িঘড়ি করে দাফন সম্পন্ন করে খুনিরা। স্থানীয়দের মনে মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়।
বিভিন্ন পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। উদ্ধার করা হয় রক্তমাখা জামা । ওইদিন রোজিনা বেগম বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন।
আদালতের নির্দেশে র্নিবাহী ম্যজিষ্ট্রিটের উপস্থিতিতে লাশ উত্তোলন করে মর্গে প্রেরন করা হয়।
ব্যক্তি জীবনে আব্দুল করিমের স্ত্রী, সন্তান কেউ ছিলনা। নিজের জীবনের সব কিছু ঘাতক ভাইদের পিছনে ব্যয় করলেও খুনি ভাইয়েরা তাকে বাচঁতে দেয়নি।