যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে চান বালাগঞ্জের হাবিব
এসএম হেলাল, বালাগঞ্জ: সমাজসেবার মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হতে চান নিউক্যাসল সিটি কাউন্সিলের এল্সউইক ওয়ার্ড থেকে পরপর দু’বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর বালাগঞ্জের কৃতি সন্তান হাবিব রহমান ওরফে লেচু মিয়া। এই লক্ষ্যে তিনি মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশের টানে স্বজনদের সাথে দেখা করতে এক সংক্ষিপ্ত সফরে আসা এই কাউন্সিলর সাংবাদিকদের সাথে একান্ত আলাপকালে এমন অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। এজন্য তিনি দেশবাসীর দোয়া কামনা করেছেন।
বালাগঞ্জ উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর (বাদেখুঁজগীপুর) মুন্সি বাড়ির আজিজুর রহমান ওরফে মনু মিয়া দর্জির ছেলে হাবিব রহমান। ১৯৭৩ সালে জন্ম তার। পিতার যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের সুবাধে ১৯৮৫ সালে মা আশরাফিয়া খানমসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। ৫ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। যুক্তরাজ্যে গিয়ে এ লেভেল পর্যন্ত লেখাপড়া করে সামাজিক কর্মকান্ডের ওপর একটি ডিপে¬ামা কোর্স সম্পন্ন করে ১১ থেকে ২৫ বছর বয়েসের উশৃখল ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কাজ করতে শুরু করেন । ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত এই কাজের মাধ্যমেই তিনি এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেন। একপর্যায়ে তিনি লেবার পার্টির রাজনীতির খাতায় নাম লেখান। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা থাকায় কাউন্সিল নির্বাচনে নিউক্যাসল সিটি কাউন্সিলের এল্সউইক ওয়ার্ড থেকে লেবার পার্টির হয়ে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার জন্য কয়েক দফা অফার পেয়েও তা প্রত্যাখান করেন। শেষপর্যন্ত ২০১০ সালে পার্টির অফারটি গ্রহণ করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৬জনের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করে কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে একই ওয়ার্ড থেকে পুনঃরায় কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হয়েছেন। প্রবাস জীবনে খ্যাতি ও সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হলেও তা মাতৃভূমির ভালবাসার ওপর একটুও ভাগ বসাতে পারেনি। যার কারণে প্রবাসের ব্যস্থ জীবনেও সুযোগ তৈরী করে নারীর টানে ছুটে আসেন দেশে। বর্তমানে এক সংক্ষিপ্ত সফরে এসে দেশে অবস্থান করছেন। অবস্থান কালে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবচৃন্দ এবং এলাকাবাসীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হচ্ছেন। তার বড় ভাই মুজিবুর রহমান মধুও সেদেশের বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। তিনি জন্মভূমির উন্নয়নের স্বার্থে বাঙালীদের নিয়ে গঠন করেছেন একাধিক সংগঠন।
সাংবাদিকদের সাথে জীবনের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে কাউন্সিলর হাবিব রহমান বলেন, মাত্র ১২ বছর বয়েসে যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পরই সেদেশের বর্ণবাদিদের তিরস্কার ও অত্যাচারের শিকার হতে থাকি। এমন কি বিদ্যালয়ে গিয়েও একই অবস্থার সম্মুখিন হই। খুব পীড়া দায়ক এ বিষয়টা আমাকে ভাবিয়ে তুলে। তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে নিজের কৌশল এবং সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে এই পরিবেশকে বদলাতে সক্ষম হই। এক সময় যে বর্ণবাদিরা বাঙালীদের কালো হিসেবে তিরস্কার করতো এখন তারাই আমার ভোটার। আমার এলাকায় বাঙালী পরিবারের সংখ্যা কম। প্রায় ৮হাজার ভোটারের মধ্যে সাড়ে ৬ হাজার ইংলিশ ভোটার। আমার মা এবং বড় ভাই মুজিবুর রহমান মধুর সহযোগীতা ও অনুপ্রেরণায় আমি আজ এই অবস্থানে আসতে সক্ষম হয়েছি।