অবশেষে কুরমা সীমান্তে ২৫ বিঘা জমি পেল বাংলাদেশ
মধু চৌবে, শ্রীমঙ্গল: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার কুরমা সীমান্ত থেকে বিজিবির বিশেষ তৎপরতায় উদ্বার হয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে ভারতীয়দের দখলে থাকা ২৫ বিঘা জমি। আর উদ্বারের পর পরই ঐ জমিতে ভারতীয় নাগরিকের পরিবর্তে এখন বাংলাদেশী কৃষকেরা চাষ করছেন ফসল।
শ্রীমঙ্গলস্থ ১৪ বিজিবির সদরদপ্তর থেকে জানাযায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলাম পুর ইউনিয়নের কুরমা সীমান্তের ছেচার কোনা এলাকায় ২৫ বিঘা জমি ভারতীয় দাবী করে বি এস এফ এর সহায়তায় দীর্ঘ দিন ধরে ভারতীয় নাগরিকরা চাষাবাদ করে আসছিল। কিন্তু বর্তমান ১৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল চৌধুরী সাইফ উদ্দিন কাউসার তার অফিসিয়াল পর্যবেক্ষনে দেখতে পান ১৯০৬ এর সাব ফিলার ১৪ থেকে ১৯০৭ এর সাব ফিলাল ১১ পর্যন্ত কোন ফিলারই নেই এবং এই জমিটুকু ভারতীয় নাগরিকরা ভোগ দখল করছে। বিষয়টি তিনি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করেন এবং সরজমিনে এলাকা পরিদর্শনও করেন। এসময় তার অনুমেয় হয় এখানে বাংলাদেশের জমি থাকার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এর পেক্ষিতে তিনি সীমান্তের ষ্ট্রীপ ম্যাপটি পংঙ্খানোপঙ্কু ভাবে পর্যালোচনা করেন এবং পর্যালোচনায় প্রতিয়মান হয় ভারতীয়দের দখলে থাকা এই অংশটুকু বাংলাদেশের ভিতরে। সাথে সাথে তিনি লিখিত ভাবে বিএসএফ এর ২৭ ব্যাটালিয়নের কাছে এ বিষয়ে পতাকা বৈঠকের অনুমতি চেয়ে চিঠি দেন। কিছু দিনের মধ্যেই পতাকা বৈঠকে তিনি বিএসএফ কমান্ডারকে জোরালো ভাবে জানান এবং প্রমান দেখান এটি বাংলাদেশের ভূখন্ড। বৈঠকে সিন্ধান্ত অনুযায়ী উভয়ে সরজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সিন্ধান্ত হয় প্রাথমিক ভাবে অস্থায়ী জরিপের। ঐ সিন্ধান্ত মোতাবেক উভয় দেশের কোম্পানী কমান্ডার , ব্যাটালিয়ন কমান্ডারদের উপস্থিতিতে তা জরিপ করলে ১৯০৬ এর সাব ফিলার ১৪ থেকে ১৯০৭ এর সাব ফিলাল ১১ এর মধ্যে ২৫বিঘা (৮ একর) জমি বাংলাদেশের বলে প্রতিয়মান হয়। সে সময় ভারতীয় কমান্ডার সঞ্জয় সিং ভারতীয় নাগরিকদের বুঝিয়ে এবং তার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বাংলাদেশের জমি ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রƒতি ব্যাক্ত করেন। পরবর্তীতে শ্রীমঙ্গল ১৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ন চৌধুরী সাইফ উদ্দিন কাউসার ও কুরমা বিওপির কমান্ডার হাবিবুর রহমানের বারংবার তৎপরতায় ভারতীয় নাগরিকদের বুঝিয়ে আরো একটি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তা বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। এ সময় সুন্দর ভাবে তা ফেরত দেয়ার জন্য বিএসএফকে ধন্যবাদ জানায় ১৪ বিজিবি। এদিকে জমি উদ্বারের সাথে সাথে বিজিবি নো-মেন্স ল্যান্ডের কিছু জায়গা খালি রেখে বাংলাদেশী কয়েকজন কৃষককে তা চাষাবাদের জন্য দ্বায়িত্ব দেয় এবং ইতিমধ্যে সেখানে ধান চাষ শুরুও করে দিয়েছেন কৃষকরা। উদ্বার ও দখলীয় সমস্ত কার্যক্রম সম্পাদন শেষে বিজিবি কুরর্মা সীমান্তে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকার্ত ও এলাকাবাসীকে নিয়ে এক মতবিনিময় সভা করে তার উদ্বার প্রকৃয়ার বর্ননা দেন এবং বাংলাদেশে যারা এ জমি ব্যবহার করেন তারা যেন সীমান্ত নিয়ম মেনে সেখানে কাজ করেন সে অনুরোধ রাখেন। একই সাথে সীমান্তে চোরাচালান রোধে এলাকাবাসী যেন বিজিবিকে সহায়তা করে এ আশাও ব্যক্ত করেন।