জকিগঞ্জের পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আর নেই : বিভিন্ন মহলের শোক
জকিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক, জকিগঞ্জ আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি, জকিগঞ্জ বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আনোয়ার হোসেন সোনাউল্লাহ (৭৫) আর নেই। দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে রবিবার আড়াইটায় পৌর শহরের পিরেরচক গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহি…..রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১০ ছেলে ও ৭ মেয়েসহ অসংখ্য আত্বীয় স্বজন রেখে যান।
তার মৃত্যুর খবরে জকিগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে আসে। মরহুমের সহকর্মী জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ সর্বস্থরের মানুষ তাকে শেষবারেরমত একনজর দেখার জন্য পীরেরচকের বাড়ীতে ভীড় জমান। অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আগামীকাল সোমবার দুপুর দুইটায় জকিগঞ্জ টাউন ঈদগাহে তার জানাজার নামায অনুষ্ঠিত হবে।
১৯৭৩ সালে প্রথম তিনি জকিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সাল থেকে টানা তিন দশকেরও বেশী সময় থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদসহ আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে একাধিক সাক্ষাত হয়। তার নেতৃত্বে জকিগঞ্জে আওয়ামীলীগ সংগঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তীতে গঠিত থানা আওয়ামীলীর কনিষ্ট সদস্য ছিলেন তিনি। জকিগঞ্জের গণদাবী পরিষদের মহকুমা আন্দোলন, পৌরসভা বাস্তবায়ন কমিটি, জকিগঞ্জ সরকারী কলেজ, জকিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুলসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বে সিলেট-৫ আসনে একাধিকবার আওয়ামীলীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদাদের বিজয় তরান্বিত হয়েছে। সর্বশেষ তিনি ২০১২ সালে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন। মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ সালে জকিগঞ্জে সর্ব প্রথম পাকবাহিনী তার পীরের চকের বাড়ী অগ্নিসংযোগ করে। বর্ষিয়ান আওয়ামীগ নেতা ও পৌর মেয়রের মৃত্যুতে জকিগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কাউন্সিলর মকদ্দছ আলীর সভাপতিত্বে জরুরি এক সভায় তিন দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কালো ব্যাজ ধারন, কালো পতাকা উত্তোলন, পৌরসভায় একদিনের সাধারন ছুটি ঘোষনা, ইফতার ও দোয়া মাহফিল।
সোনাউল্লাহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রূপালী ব্যাংক লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান, বেসরকারী সংস্থা সীমান্তিকের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবির।
এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, আনোয়ার হোসেন সোনাউল্লার মৃত্যুতে আমি শোকাহত। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তার হাত ধরে অসংখ্য গুণীজন তৈরী হয়েছেন। সোনাউল্লা যে অবদান রেখেছেন তার জন্য সকলেই তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে। তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবার, পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব সেলিম উদ্দিন গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।রবিবার এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, আনোয়ার হোসেন ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রসৈনিক। তার মৃত্যুতে শুধু জকিগঞ্জই নয়, দেশ একজন মহৎ ব্যক্তিকে হারিয়েছে। তার এই শূন্যতা পূরণ হবার নয়। শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এড. নিজাম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, এড. নাসির উদ্দিন খান, সাইফুল আলম রুহেল, ইশতিয়াক চৌধুরী, জগলু চৌধুরী, মস্তাক আহমদ পলাশ ও লোকমান চৌধুরী।
এক যৌথ শোক বার্তায় তারা বলেন- আনোয়ার হোসেন সোনাউল্যা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অকুতোভয় সৈনিক। সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই ব্যক্তির চলে যাওয়ায় যে শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা অপূরণীয় । তিনি সুনামের সাথে রাজনৈতিক, সাংগঠনিক ও মেয়রের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তিনি তাঁর কর্মের মাধ্যমে সকলের মাঝে বেঁচে থাকবেন। শোকবার্তায় তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এদিকে জকিগঞ্জ পৌর মেয়রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সংসদ সদস্য সেলিম উদ্দিন, সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার, রূপালি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির, আনজুমানে আল ইসলাহ সভাপতি মাওলানা হুসাম উদ্দিন চৌধুরী, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি আহবায়ক ইকবাল আহমদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আপ্তাব আহমদ চৌধুরী কয়েস, মাসুক উদ্দিন আহমদ, শাব্বির আহমদ, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোস্তাকিম হায়দর, সাজনা সুলতানা হক চৌধুরী, সুপ্রিম র্কোটের এডভোকেট মোস্তাক আহমদ, প্রবাসী নেতা মুমিন চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগ শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, চাকসুর সাবেক আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক বিএনপি নেতা মামুনুর রশীদ মামুন, জাপা নেতা মোস্তাক আহমদ লস্কর, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালিক, উপজেলা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফোরাম সভাপতি আব্দুর রশিদ বাহাদুর, সুলতানপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ চৌধুরী , টাউন ক্লাব সভাপতি ফারুক আহমদ, সাধারন সম্পাদক নজরুল ইসলাম, আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সাধারন সম্পাদক এমএ মালেক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খলিল উদ্দিন, প্রেস ক্লাব সভাপতি এমএ মালেক চৌধুরী, সাধারন সম্পাদক আবুল খায়ের চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ময়নুল হক, যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমদ, অ্যাডভোকেট কাওসার রশিদ বাহার, সাংবাদিক বদরুল হক খসরু, আল মামুন, শ্রীকান্ত পাল, এখলাছুর রহমান, আহমেদুল হক চৌধুরী বেলাল, রহমত আলী হেলালী, মোর্শেদ লস্কর, রিপন আহমদ, আল হাছিব তাপাদার, নাজিম উদ্দিন, সমাজসেবী সাইফুদ্দিন খালেদ, জকিগঞ্জ বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জব্বার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাহতাব আহমদ, সাধারণ সম্পাদক দিলাল আহমদ, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়, সাধারন সম্পাদক আব্দুশ শহীদ তাপাদার প্রমুখ। পৌর কাউন্সিলর, উপজেলা আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাপাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন।