ছাত্রলীগের হুমকিতে সিকৃবির দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চার সদস্যের পদত্যাগ
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাগিয়ে নিতে উঠেপড়ে লেগেছে ছাত্রলীগ। প্রায় ১২ কোটি টাকার কাজ নিজেদের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দখলে নিতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অব্যাহত চাপের মুখে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবসহ চারজন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রেজিস্টার বদরুল ইসলাম শোয়েব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়- সিকৃবির বিভিন্ন ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি দুইটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ১২ কোটি টাকা মূল্যের ওই দুইটি কাজ পান যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা। কিন্তু দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর থেকে কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাগজপত্র সঠিক নয় দাবি করে দরপত্র বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে ছাত্রলীগের অপর অংশ। দরপত্র বাতিল করে পুণরায় দরপত্র আহ্বানের দাবি জানিয়ে তারা মূল্যায়ন কমিটির কর্মকর্তাদের উপর চাপ সৃষ্টি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। পাশাপাশি কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকা যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতারাও দ্রুত কার্যাদেশ দেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের উপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়- ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রায় প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কাজ পাওয়া ঠিকাদারদের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দেখিয়ে আসছেন। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ অবস্থায় মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি ডা. রফিকুল ইসলাম, সদস্য সচিব ও নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল উদ্দিন, সদস্য অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, ডা. খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার শাহজাহান গত সোমবার রেজিস্টার বরাবর তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদত্যাগকারী এক কর্মকর্তা জানান- ছাত্রলীগের অব্যাহত হুমকির কারণে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও বহিরাগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দসই ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে কর্মকর্তাদের সাথে প্রতিদিনই অসদাচরণ করেন বলে অভিযোগ করেন ওই কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্য ডা. খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার পারভেজ শাহজাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন। তবে পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে মুখ খুলেননি।
দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি ডা. রফিকুল ইসলাম জানান- যতদিন কাজের পরিবেশ ছিল ততোদিন তিনি কাজ করেছেন। এখন আগের মতো কাজের পরিবেশ না থাকায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বদরুল ইসলাম শোয়েব দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যদের পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- এখনো পদত্যাগপত্র গৃহিত হয়নি।