এমসি কলেজের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তালিকা ছিঁড়ে ফেলল ছাত্রলীগ
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ এমসি কলেজ যেন ছাত্রলীগের মগের মুল্লুক। পছন্দের শিক্ষার্থীদের ভর্তি না করায় এবার সিলেট এমসি কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মেধা তালিকা ছিঁড়ে ফেলেছে ছাত্রলীগ । গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সৌরভ, উজ্জলের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি গ্রুপ বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে আসে। পরে তারা তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের তালিকানুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তির কথা বলে। ভর্তি কমিটির প্রধান ছ্য়ফুল ইসলাম জোয়ারদার তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়। তারা দেওয়ালে টানানো মেধা তালিকাটি ছিঁড়ে ফেলে।
এ সময় উপস্থিত অভিভাবকরা জানান, ছাত্রলীগ ক্যাডাররা বলতে থাকে- এটা কিসের তালিকা, আমাদের কাছে তালিকা আছে। এই তালিকায় ভর্তি করতে হবে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্ক গ্রস্ত হয়ে পড়েন এবং অনেকে ভয়ে ক্যাম্পাস থেকে চলে চান।
কলেজের তথ্য ও অনুসন্ধান কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, গুটিকয়েক শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য দাঁড়িয়ে আছে। ১জন শিক্ষিকা তাদের কাগজপত্র জমা নিচ্ছেন। তাদের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করেন।
কলেজ সুত্রে জানা যায়, প্রতিবছর ভর্তি কার্যক্রমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের তালিকা অনুযায়ী ভর্তি জন্য শিক্ষকদের চাপ দিতে থাকে। কিন্তু তাদেরকে সে সুযোগ না দেওয়া হলে তারা ক্যাম্পাসে এসে তালিকা ছিঁড়ে ফেলে এবং ভাংচুর করে থাকে।
এদিকে ভর্তি কার্যক্রমে খাত ভিক্তিক টাকার পরিমান উল্লেখ না দেখিয়ে মোট টাকার পরিমান উল্লেখ করে টাকা জমা নিচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মনে করছেন অনিয়ম হচ্ছে বলে খাত ভিক্তিক টাকা পরিমান উল্লেথ না দেখিয়ে টাকা আদায় করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ ব্যাপারে উর্ধ্ধতন কর্তৃক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন।
কলেজর একটি সুত্রে জানা যায় গত ১ লা এপ্রিল আইসিটি বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের ফরম পূরণ কার্যক্রম খাত ভিক্তিক টাকা দেখানোর ফলে শিক্ষার্থীরা অবৈধ বেতন, অনলাইন প্রসেসিং ফি এবং নিয়ম বহির্ভূত ফি বাবদ প্রায় ১৩ লক্ষ টাকার অনিয়ম শিক্ষার্থীদের চোখে ধরা পরে। তখন অনিয়মের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে মুখে তৎকালীন অধ্যক্ষ ধীরেশ চন্দ্র সরকার অবৈধ ফি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন। মেধা তালিকা ছিঁড়ার ব্যপারে ভর্তি কমিটির প্রধান সহযোগি অধ্যাপক ছ্ায়ফুল ইসলাম জোয়ারদার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ,বিষয়টি তিনি জানেন না । তবে যদি কেউ তালিকা ছিঁড়ে ফেলে তাহলে আবার নতুন করে টানিয়ে দিবেন। খাত ভিক্তিক টাকা পরিমান উল্লেখ না করে কেন? টাকা জমা নেওয়া হচ্ছে। সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ,আমরা এক পয়সা অনিয়ম করছি না এখানে। যদি কোন শিক্ষার্থী খাত ভিক্তিক টাকার তালিকা দেখতে চায় তাহলে আমরা দেখাব।