লন্ডনে বৈশাখী মেলায় ঢল নেমেছিলো নানা বয়সের নারী-পুরুষের
এহসানুল ইসলাম চৌধুরী শামীম, লন্ডন থেকে: ব্রিটেনে ছুটির দিন ছিল রোববার। রৌদ্রজ্জ্বল ভোর আর ক্রমশ উষ্ণতা বৃদ্ধির জানান দিয়ে দিনের সূচনায়ই মনে হয়েছিলো দিনটি উপভোগ্য হবে। হয়েছিলোও তাই। প্রত্যাশিত রোদ আর মনমাতানো হাওয়ায় দেহ জুড়ানোর পাশাপাশি বাঙালি সংস্কৃতির এক অনন্য আয়োজন বৈশাখী মেলায় ঢল নেমেছিলো নানা বয়সের নারী-পুরুষের। সকাল থেকেই পূর্ব লন্ডনের প্রায় সবগুলো রাস্তা প্রফুল্ল জনস্রোত এসে ধাবিত হচ্ছিলো মেলার কেন্দ্রস্থল ভিক্টোরিয়া পার্কে।
প্রায় লক্ষ মানুষের সমাগমের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার (২২জুন) পূর্ব লন্ডনের ভিক্টোরিয়া পার্কে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো বাঙালীদের প্রাণের উৎসব বৈশাখী মেলা।
বাংলা টাউন থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার পর দ্বিতীয় বারের মতো ভিক্টোরিয়া পার্কের সুবিশাল পরিসরে অনুষ্ঠিত হলো বৈশাখী মেলা। আগে প্রতি বছর মে মাসে বৈশাখী মেলা উদযাপিত হয়ে আসলেও এখন তা প্রতি বছর জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া এবার থেকে নতুন সংযোজন হয়েছে বৈশাখী এ্যাওয়ার্ড।
রৌদ্রজ্জ্বল দিনে আয়োজিত মেলার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে। রং-বেরং এর বাঙালি পোশাক পরিহিত শিশু-কিশোর ও নর-নারীরা র্যালিতে অংশ নেন। তাদের হাতে ঢোল, বাঁশি, হাত পাখা, কুলা, কলস ও বাংলাদেশের পতাকা ইত্যাদি শুভা পায়। অনেকে বিভিন্ন রংয়ের ব্যানার ও ফ্যাস্টুনও বহণ করেন। মেলা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে। এবারের মেলায় মূল আকর্ষন ছিল জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী বলিউড লিজেন্ড কুমার সানু।
কুমার সানু বেশ কয়েকটি গান গেয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে ডজন খানেক নামী-দামী শিল্পী মেলায় তাদের পারফমেন্স প্রদর্শন করেছেন।
মেলায় কুটির শিল্প, পোশাক, পিঠা-পুলি, বাংলাদেশী কুইজিনসহ বাঙালি সাংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী নানা পণ্য ও সেতার পসরা নিয়ে প্রায় ২ শতাধিক ষ্টল স্থান পেয়েছে। এছাড়া পারিবারিক পরিবেশে সময় কাটানো সহ, শিশুদের বিনোদনের জন্য বিশেষভাবে নির্মিত ‘কিডস জোন’ ছিল মেলায়।
এবারের বৈশাখী মেলার দিন প্রচন্ড গরম ছিল। তাই মেলা জুড়ে ছিলো বাংলাদেশের আমেজ। তরুণদের অনেকেই ফতোয়া আর পায়জামা পাঞ্জাবী পরে এসেছিলো। আর তরুণীরা এসেছিলো শাড়ী পরে। গাছের ছায়ায় বসে অনেকেই জমিয়ে তুলেন আড্ডা। পুরো মেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করেছে বাংলাটিভি।