এরশাদের নতুন প্রেমিকার সন্ধান !
সুরমা টাইমস রিপোর্টঃ রাজনৈতিক কারণে নয়, ব্যক্তিগত নতুন সম্পর্ক নিয়ে আবারও নতুন করে আলোচনায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ। তবে । দলের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই আকারে-ইঙ্গিতে বলছেন, নতুন করে প্রেমে পড়েছেন তাদের নেতা! এবারের প্রেমিকার বয়স ১৯ থেকে ২০-এর মধ্যে। নাম সাথী। ঘটনার শুরু জানুয়ারি থেকে। ওই সময় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি ছিলেন এরশাদ। হাসপাতালে থাকা অবস্থায়ই এমপি নির্বাচিত হন তিনি। এরপর শপথ নেন সংসদ সদস্য হিসেবে যোগ দেন মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে। দিনটি ছিল ১২ জানুয়ারি।
সেদিন তাকে মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত করা হয়। বিকালে বঙ্গভবনে অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পর সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বারিধারার নিজ বাসায় ফেরেন তিনি। এর পর থেকেই নেতাকর্মীদের চোখে পড়ে, এরশাদের বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে সময়ে-অসময়ে ঢুকছেন সিস্নম গড়নের এক অচেনা তরুণী। পরে জানা যায়, তরুণীটির নাম সাথী। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ছাড়া পাওয়ার মাঝের পুরো সময়ই সাথী এইচএম এরশাদের দেখাশোনা করেন।
এরশাদের ঘনিষ্ঠরা জানান, সাথী নামের ওই তরুণী তখন থেকেই প্রায় নিয়ম করে এরশাদের কাছে ছুটে আসেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও দেখা যায় তাকে। কয়েকটি অনুষ্ঠানে ছেলে এরিকের বান্ধবী বলে সাথীকে পরিচয়ও করিয়ে দেন এরশাদ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের একটি বুটিক শপ আছে। এ বুটিক শপের মডেল হয়েছেন সাথী। সত্যতা খুঁজতে বনানীর ওই বুটিক শপে গিয়ে দেখা যায়, দোকানের সামনে ও পাশে সাথীর বড় বড় দুটি ছবি রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, উত্তরার একটি মডেল এজেন্সির মডেল সাথী। বয়স উনিশ বা বিশ বছর। স্মার্ট ও সুন্দরী। পড়াশোনা করছেন বনানীর আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে। থাকেন গুলশানে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় এক বছর আগে গুলশানে এরিকের জন্মদিনের পার্টিতে এরশাদের সঙ্গে সাথীর পরিচয় হয়। পরিচয় করিয়ে দেন দলের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য। এরপর মাকে সঙ্গে নিয়ে এরশাদের বারিধারার বাসভবনে যাতায়াত শুরু করেন সাথী। এরপর প্রেসিডেন্ট পার্কে তার অবাধ যাতায়াত। ফেসবুকেও তার ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতার চোখে পড়ে। তাদের মধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়, পার্টি প্রেসিডেন্ট কি নতুন প্রণয়ে মজেছেন, নাকি অন্য কিছু!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এরশাদের ঘনিষ্ঠ একজন জানান, আসলে সাথী নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। তিনি জানান, এরশাদ সাহেবের যে বয়স, তাতে সাথীর সঙ্গে তার সম্পর্কটা খারাপ কিছু হওয়ার সুযোগ নেই। তারপরও নানা জন নানা কথা বলে। তিনি আরও জানান, আসলে সাথী সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছে। সব কানাঘুষা জেনেও সাথী পরিষ্কার করে কিছু বলছে না।
এরশাদের আরেক ঘনিষ্ঠজন বলেন, বনানীর বাংলাদেশ ইউএই শপিং কমপ্লেক্সে নিচতলায় এরশাদের মালিকানাধীন বুটিক শপের নামটি ক’দিন হলো পরিবর্তন করা হয়েছে।
সাথীর আবদারে বুটিক শপের নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘বুটিক লাইম লাইট’। এর আগে বুটিক শপটি এরশাদের সাবেক বান্ধবী বিদিশার নিয়ন্ত্রণে ছিল। বিদিশার সঙ্গে এরশাদের ডিভোর্স হওয়ার পর দোকানটি কিছুদিন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এইচএম গোলাম রেজার তত্ত্বাবধানে ছিল। গোলাম রেজা কাজী জাফরের অংশে চলে যাওয়ার পর থেকে বুটিক শপে শোভা পাচ্ছে মডেলিং স্টাইলে তোলা সাথীর বড় বড় দুটি ছবি।
এরশাদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জানতে শনিবার মোবাইলে ফোন করা হয় সাথীকে। সাথী বলেন, ‘এরশাদ সাহেব আমার আত্মীয়।’
কেমন আত্মীয়-প্রশ্নে সাথী কিছুটা হতচকিত হয়ে পড়েন। বলেন, ‘আপনারা কেন বার বার এরশাদ সাহেবের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে কথা বলছেন। এসবে মানুষ বিভ্রান্ত হয়। এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে কথা না বলে বরং তার সঙ্গেই কথা বলুন।’ এর পর ফোন করা হয় এইচএম এরশাদকে। সাথী বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন আমি গাড়িতে; রাস্তায়। বাইরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। এখন এসব বিষয় নিয়ে কিছু বলব না।’