তাহিরপুরে জামাত সিন্ডিকেটের গ্যাড়াকলে ৬৬২ পরিবার

বিদ্যুৎ সংযোগের নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা

Prepaid-meterহাবিবুর রহমান হৃদয়, সুনামগঞ্জ থেকে ফিরে: সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার কলাগাও গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে পল্লী বিদ্যুতের ছত্রছায়ায় থাকা প্রতারক ও দালাল চক্র। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ অবগত থাকলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় এলাকার সচেতন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। জানা যায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জিম হোসেন রতনের ঐক্যান্তিক প্রচেষ্টায় তার নির্বাচনী ইস্তেহার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর কলাগাও গ্রামে ৬৬২ পরিবারের জন্য সাড়ে ৬ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন সংযোগের উদ্যোগ নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছ থেকে এই কাজের দ্বায়িত্ব পায় জনৈক ঠিকাদার গোলাম নবীর মালিকানাধীন  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চঝউ। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চঝউ এর ছত্রছায়ায় জামাত বিএনপি সিন্ডিকেট গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার জামাতের রুকন সদস্য কলাগাঁও  গ্রামের হাজী মোঃ আবুল হোসেনের পুত্র মোঃ ফরিদ মিয়া জামায়াত ইসলামের বিশিষ্ট পৃষ্ট পোষক। তিনি কলাগাঁও বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ঘোষনার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির ২নং ওয়ার্ড  কমিটির কিছু লোক ও কলাগাঁও বাজার বনিক সমিতির কিছু লোক ও পল্লী বিদ্যুতের অফিসে কিছু অসাধূ ব্যাক্তির যোগসাজসে অপপ্রচার ও প্রতারনার মাধ্যমে মিটার,বোর্ড ও রড প্রতি গ্রাহকের সংযোগ বাবদ অগ্রীম একুশ শত টাকা করে প্রায় তের লক্ষ টাকা আদায় করেন । তথাপি গত ০৭.০৬.২০১৪ ইং তারিখে এই সিন্ডিকেট আবার ঘোষনা দেয় যে, বিদ্যুৎ মিটারের আর্থিং রড বাবৎ পুনরায় আরও পাঁচ শত টাকা প্রদান করতে হবে। এক প্রর্যায়ে মোঃ ফরিদ মিয়া এলাকার গন্যমান্যদের চাপের মুখে তাহার সিন্ডিকেট প্রায় নয় লক্ষ টাকা আদায়ের কথা শিকার করে এবং খরচ বাবদ পাঁচ লক্ষ টাকা ডিও লেটার এর জন্য প্রদান করা হয়েছে বলে জানায়। এলাকার জনগন যেখানে এই নয় লক্ষ টাকার হিসেবকেই অপপ্রচার বলে মনে করেন সেখানে পুনরায় মোঃ ফরিদ মিয়া গং আরো ঘোষনা করে যে, খাস ভূমিতে বসবাসরী গ্রাহকদের মিটার সংযোগ পাইতে হইলে মিটার প্রতি আরোও পনের শত টাকা ও রেকর্ড ভূমি মালিকদের এক হাজার করে উক্ত সিন্ডিকেট কে প্রদান করতে হবে। যাহাতে প্রায় সর্বমোট ত্রিশ লক্ষ টাকা আত্বসাৎ এর সম্বাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে  জানতে মোঃ ফরিদ মিয়া কোন বক্তব্য দিতে অপারগতা জানান। এক পর্যায়ে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ফোনে এ বিষয়ে আলোচনা না করে এলাকায় চলে আসেন। আপনাদের যাবতীয় খরচপাতি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা দেব। চঝউ এর স্বত্তাধিকারী গোলাম নবীর মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও তার ফো বন্ধ পাওয়া যায়। এব্যাপারে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের জিএম সোহেল পারভেজ সুরমা টাইমসকে জানান পল্লী বিদ্যুতের মিটার বাবৎ কোন টাকা জমা দিতে হয়না। এই টাকা সরকার থেকে বরাদ্ধ দেয়া হয়। কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রমান সাপেক্ষে এরকম অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। জানতে চাইলে সিলেট পল্লী বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলী জগলূল হায়দার বলেন, প্রথমত পল্লী বিদ্যুতের কোন মিটার বা লাইন বাবদ গ্রাহককে টাকা দেয়ার কোন বিধান নেই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যাবস্থার অপ্রতুলতার কারনে ঠিকাদাররা কাজ নিয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রেখে পরে স্থানীয় লোকদের দিয়ে কাজ সারায়। এক্ষেত্রে কিছু অনিয়ম দেখা দেয়। তবে বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সর্বশেষ ঠিকাদার ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের সাথে সভা করে বলেছেন, যোগাযোগ ব্যাবস্থার কারনে কোন সমস্যা হলে আমার নৌকা দিয়ে তোমাদের বিদ্যুৎ সরঞ্জাম বহন করবে, তবুও গ্রাহকদের কাছ থেকে কোন টাকা আদায় করবে না। জনপ্রতি একুশ শত টাকা আদায় প্রসংগে তিনি বলেন, ‘আপনি ভাল করে খোজ নিয়ে দেখুন, এখানে অবশ্যই আওয়ামীলীগের লোকজন জড়িত আছে। নতুবা এখানে জামাত, বিএনপি ঢোকে কি করে।’