তাহিরপুরে বিসিআইসির ভূমি থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ
কামাল হোসেন,তাহিরপুর(সুনামগঞ্জ)
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র বাষ্ট্রআয়ত্ত বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি)’র নিয়ন্ত্রিত ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের জায়গায় অবৈধ দখলদারদের গত ৩ দিনধরে অভিযান চালিয়ে প্রায় শতাধিক অবৈথ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রায় শত কোটি টাকার ভূসম্পত্তি উদ্ধার করেছে প্রশাসন। জানাযায়, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোলায়মান’এর নেতৃত্বে বিপুল সংক্ষক পুলিশের উপস্থিতিতে গতকাল সোমবার বিকাল থেকে বুধবার র্পযন্ত এ উচ্ছেদ অভিযান করেন। এসময় প্রকল্পের জায়গায় অবৈধভাবে দখলকরে তাহিরপুর কয়লা সমিতির সাবেক অর্থ সম্পাদক ও র্স্বণা এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল কুদ্দুছ ও এলাকার আরও প্রভাবশালীদের কতৃক ইট-পাথর দিয়ে স্থায়ীভাবে নির্মাণকৃত কয়লার ডিপুসহ বিভিন্ন স্থাপনার টিন গুলো খুলে নেয় এবং দেয়াল ভেঙ্গেদিয়ে উচ্ছেদ করে। উল্লেখ্য, বিগত একদশক আগে ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্প শুরু থেকে প্রায় ৪২ বছর পর লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে ২০০৭ সালের ২ অক্টোবর একযোগে প্রকল্পের ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাতকে বদলি করার মধ্যেদিয়ে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয় বাংলাদেশের একমাত্র বাষ্ট্রআয়ত্ত বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রিত ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প টি। পকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কিছু দিন যেতে না যেতেই এলাকার আ’লীগ ও বিএনপির কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অবৈধভাবে খনিজ প্রকল্পের জায়গা দখল করে টিলা কেটে ভারত থেকে আমদানীকৃত কয়লার ডিপু তৈরি করে ভেগদখল করে আসছিল।এত করে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে ছিল সরকার। চুনাপাথর খনিজ প্রকল্প সূত্রে জানাযায়, ১৯৮ নং বড়ছড়া মৌজার ৪৫২, ৪৫৩, ৪৫৪, ৪৫৫, ৪৫৬ ও ৩২০, ৩২২ সহ মোট ৭টি দাগের এবং ৫০ নং খতিয়ানে প্রায় ৩৩ একর জায়গার উপর প্রভাবশালীরা নামে বেনামে ঘরবাড়ী, দোকানপাট, মার্কেট ও কয়লার ডিপু তৈরি করে মাসে মাসে ভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপর দিকে মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সূত্রমতে আরও জানাযায়, ২০১০ সালে ১লা জুন থেকে ২০১৩ সালের ৩১ এপ্রিল পর্যন্ত ঐ ৭টি দাগের মোট ২০ একর জায়গা উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামের র্স্বণা এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুল কুদ্দুছের নিকট ৩ বছরের জন্য ইজারা দেন কতৃপক্ষ। কিন্তু সেই জায়গার ইজারাকৃত ৩ বছর পেরিয়ে গেলাও তিনি গত এক বছর যাবৎ ওই ভূমির বিপরিতে জাল দালিল করে অবৈধভাবে জোরর্পূবক ভোগ দখল করে আসছেন বলে অভিযোগ করেন বিসিআইসি কতৃপক্ষ। এবং ওই জায়গা থেকে আব্দূল কুদ্দুছকে উচ্ছেদ না করার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা জজ ২য় আদালতে একটি আবেদন করেন। পরে আদালত তার আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল শুনানী শেষে খারিজ করে দিলে এরই প্রেক্ষিতে বিসিআইসি কতৃপক্ষ ৩৩ একর ভূমির মধ্যে ২০ একর ভূমি ইজরিা দেয়ার দরপত্র আহবান করলে কয়লা আমদানীকারক গ্রুপ মের্সাস নাদিম এন্টারপ্রাইজ ৭৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকায় ২ বছরের জন্য ইজারা প্রাপ্ত হন। কিন্ত অবৈধ দখলদারদেও কারণে এখনো নাদিম এন্টারপ্রাই ওই জায়গা দখল নিতে না পারলে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ এ ভূমি উদ্ধারে গত বছরে ২২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদেনের প্রেক্ষিতে গত সোমবার বিকালে ওই ভূমি উদ্ধারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোলায়মানের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বজিৎ পাল, তাহিরপুর থানার ওসি আনিছুর রহমান খাঁন, ছাতক সিমেন্ট কোম্পানীর লি. এর জিএম(এম টি এস) মোঃ আনোয়ার হোসেন, হিসাব বিভাগীয় প্রধান অমল কান্তি পাল, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু জাহেদ পাল, সহকারী প্রকৌশলী ও ট্যাকেরঘাট চুনা-পাথর খনি প্রকল্পের (বর্তমানে বন্ধ) ইনর্চাজ আমিরুজ্জামন প্রমুখ। এ ব্যপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোলায়মান বলেন, বিসিআইসি’র নিয়ন্ত্রিত ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের জায়গায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদেও জন্য জেলা প্রশাসকের নিধেষ রয়েছে। তাই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে এই অভিযান।